স্বদেশ ডেস্ক:
ইসরাইল আগামীকাল শনিবার গাজায় স্থল হামলা শুরু করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে ইসরাইল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর গাজা থেকে ১১ লাখ লোককে সরে যেতে বলেছে। মনে করা হচ্ছে, গাজার উত্তর দিক থেকেই ইসরাইলি সেনাবাহিনী উপত্যকাটিতে প্রবেশ করবে। ইসরাইল ইতোমধ্যেই সীমান্তে তিন লাখের বেশি সৈন্য সমবেত করেছে। এছাড়া ট্যাংকসহ অন্যান্য সরঞ্জামও প্রস্তুত রেখেছে।
লেবাননে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়ার সাবেক রাষ্ট্রদূত ইয়ান পারমেটার আল জাজিরাকে বলেছেন, ইসরাইলি স্থল অভিযানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
বর্তমানে অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ইয়ান বলেন, ‘এটি পরিষ্কার যে ইসরাইল যদি গাজায় প্রবেশ করে, তবে তারা তাতে বিপুলসংখ্যক সামরিক সদস্য হারাবে। আমরা অনুমান করছি যে গাজায় অনেক বেসামরিক লোক হতাহত হবে।
তিনি বলেন, ‘ইসরাইল যে ১১ লাখ লোককে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সরে যেতে বলেছে, তা আসলে তারা যে ঢুকছে, তারই সতর্ক সঙ্কেত।’
এদিকে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, ইসরাইল যদি গাজায় হামলা অব্যাহত রাখে, তবে অন্য ফ্রন্টগুলোও খুলে যেতে পারে। হিজবুল্লাহ যদি পুরোপুরি সঙ্ঘাতে জড়িয়ে পড়ে, তবে যুদ্ধ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে। তাদের হাতে দেড় লাখ রকেট রয়েছে। তারা সেগুলো নিক্ষেপ করলে ইসরাইলের আয়রন ডোম প্রতিরক্ষাব্যবস্থা অচল হয়ে পড়বে।
তৃতীয় ফ্রন্টটি হতে পারে পশ্চিত তীরে। সেখানে যদি উত্তেজনা সৃষ্টি হয়, তবে তা ইসরাইলের জন্য দুঃস্বপ্ন সৃষ্টি হতে পারে। সেখানেও একটি সশস্ত্র গ্রুপ আছে।
ইয়ান বলেন, তিন ফ্রন্ট সামাল দিতে হলে ইসরাইলকে অনেক কিছু করতে হবে।
এদিকে ইসরাইল ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর গাজা থেকে লোকজনকে সরে যেতে বলায় সেখানে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
গাজার ২৩ লাখ লোক পাঁচটি প্রশাসনিক এলাকায় বাস করে। এগুলো হলো উত্তর গাজা, গাজা সিটি, দেইর আর-বালাহ, খান ইউনিস ও রাফাহ।
উপত্যকাটির সাথে ইসরাইল, মিসর ও ভূমধ্যসাগরীয় উপকূলের সীমানা রয়েছে। উপত্যকাটি ৩৬৫ বর্গ কিলোমিটার (১৪১ বর্গ মাইল) বিস্তৃত। এটি লম্বায় মাত্র ৪১ কিলোমিটার (২৫ মাইল)। গাড়িতে করে দক্ষিণের রাফা থেকে উত্তরের বেইত হানুনে যেতে লাগে এক ঘণ্টারও কম।
এদিকে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সামরিক শাখা কাসসম বিগ্রেড জানিয়েছে, তারা গাজায় ইসরাইলের স্থল হামলা মোকাবেলা করতে সক্ষম।
এক ভিডিও বার্তায় হামাসের মুখপাত্র আবু ওবায়দা বলেন, ‘আল্লাহর সাহায্যে আমরা আমাদের প্রস্তুতির বিষয়টি আবারো আশ্বস্ত করছি। আর স্থলভাগ দিয়ে শত্রুর আগ্রাসন বাড়ানোর বিষয়টির ফলে আমাদের নতুন বিকল্প গ্রহণের দিকে চালিত করেছে। আর তা শত্রুর ওপ ভয়াবহ ক্ষতির কারণ হবে।’
তিনি আরো বলেন, গাজা উপত্যকায় হামাসের সামরিক কাঠামোগত শক্তি একটি ‘কার্যকর প্রতিরক্ষাব্যবস্থা’, যা ইসরাইল আগে কখনো দেখেনি।
ইসরাই এখন গাজা সীমান্তে সৈন্য এবং সামরিক সরঞ্জাম জড়ো করছে। এখন পর্যন্ত ইসরাইল গাজার ওপর বিরামহীনভাবে বোমা বর্ষণ করে যাচ্ছে।
অনেকেই আশঙ্কা করছে, ইসরাইল গাজায় স্থল হামলা চালাবে। ইতোমধ্যেই গাজায় জ্বালানি, খাদ্য, পানি বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। উপত্যকাটিকে তারা পুরোপুরি অবরুদ্ধ করে রেখেছে।
সূত্র : আল জাজিরা