স্বদেশ ডেস্ক:
বিচার বিভাগ এখন গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আমরা কয়েকদিন আগে দেখলাম মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের যিনি প্রধান, তিনি তরবারি দিচ্ছেন দেশের যিনি আইনের অভিভাবক প্রধান বিচারপতি তাকে। এই যে তরবারি দিয়েছেন তার কি কোনো লাইসেন্স আছে? এর ন্যূনতম সাজা ৭ বছর।
সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে নয়া পল্টনে কৃষকদলের উদ্যোগে আয়োজিত কৃষক সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আরো বলেন, ছাত্রলীগ যখন প্রধান বিচারপতিকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানায় তখন আমার কাছে মনে হয় দেশ একটি ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। আজকে বিচার বিভাগকে মনে হয় গোপালগঞ্জ আওয়ামীগের কার্যালয়। বিচার বিভাগ এখন গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে পরিণত হয়েছে।
রিজভী বলেন, আইনমন্ত্রী যে কথা বলেন সেটাও শেখ হাসিনার কথা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী যে কথা বলেন সেটাও শেখ হাসিনার কথা, বিচারকরা যা বলেন, তারা যে সিদ্ধান্ত দেন সেটাও তারই সিদ্ধান্ত। পুলিশ কমিশনার যে বক্তব্য রাখেন সেটাও শেখ হাসিনার বক্তব্য। দেশে এক ব্যক্তির কথায় সব চলছে। আইন কানুন সব ‘জয় বাংলা’য় চলছে। অর্থাৎ দেশে জয় বাংলার আইনের শাসন চলছে, শেখ হাসিনার আইন চলছে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, সপ্তাহখানেক আগে আইনমন্ত্রী বললেন- খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে হলে জেলে যেতে হবে, এর কয়েকদিন পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শেখ হাসিনা বললেন- বেগম খালেদা জিয়াকে বিদেশ যেতে হলে জেলে যেতে হবে, আদালতের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। আবার এক দিন পরে আইনমন্ত্রী বললেন- আমরা সোমবারে সিদ্ধান্ত দেব। গতকাল রোববার সিদ্ধান্ত দিলেন। আমি আগেই বলেছি- শেখ হাসিনা যা বলবেন আইনমন্ত্রীও তাই বলবেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও তাই বলবেন। তাদের কাছে বেগম খালেদা জিয়া যে অসুস্থ সেটির কোনো মূল্য নেই। তার লিভারের সমস্যা, তিনি অত্যন্ত অসুস্থ, তার উচ্চ ডায়াবেটিস- এটা তারা বিবেচনা করেনি, খালেদা জিয়া যে মরণ যন্ত্রণায় ভুগছেন- এর জন্য দায়ী প্রধানমন্ত্রী।
আইন মন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, আইনমন্ত্রীকে আমার কি মনে হয় জানেন? হিটলারের কিছু সহযোগী ছিল তাদের নাম জানেন? এদের একজনের নাম হচ্ছে হেনরিক হিমলার। আরেকজনের নাম হচ্ছে আইখম্যান। আইখম্যানের নিষ্ঠুরতা সর্বজনস্বীকৃত। তিনি ইহুদিদের চামড়া দিয়ে টেবিল ক্লথ বানাতেন এবং তাদের হাড় দিয়ে ফুলদানি বানাতেন। আমার কাছে আইনমন্ত্রীর কথা শুনে আইখম্যানের কথা মনে হয়। আইখম্যানের কথাবার্তা-আচরণের সাথে আইনমন্ত্রীর কথাবার্তা এবং আচরণের মিল আছে। অত্যন্ত নিষ্ঠুর এই আইনমন্ত্রী অত্যন্ত নির্মম এক ব্যক্তি।
জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় কৃষক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু প্রমুখ বক্তব্য দেন।