রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:০৩ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে ‘নো ট্রিটমেন্ট, নো রিলিজ’ নির্দেশ দেন হাসিনা: চিফ প্রসিকিউটর জীবন থাকতে কোনো স্থানীয় নির্বাচন করতে দেওয়া হবে না: ইশরাক ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা এবার বাধ্যতামূলক অবসরে ৪ ডিআইজি ইলন মাস্ককে বাংলাদেশ সফরে আমন্ত্রণ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা বহিষ্কৃত সেই চাঁদাবাজ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেপ্তার ৪ ‘আজীবন আমার ঘেন্নায় তোমাকে বাঁচতে হবে সোনা’ প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় আসছেন কুয়েট শিক্ষার্থীরা ১৭ বছর পর গ্রামের বাড়িতে বিএনপি নেতা বাবর পাকিস্তান-বাংলাদেশ সরাসরি বাণিজ্য পুনরায় শুরু, ১৯৭১ সালের পর প্রথম
বাংলায় নিরক্ষর রোহিঙ্গা রফিক সাংবাদিকও

বাংলায় নিরক্ষর রোহিঙ্গা রফিক সাংবাদিকও

স্বদেশ ডেস্ক:

মো. রফিকের বয়স ৪৪ বছর। ‘প্রাইভেট ডিটেকটিভ’ নামে কথিত একটি অপরাধ ও অনুসন্ধানীমূলক পত্রিকার চট্টগ্রাম অঞ্চলের ব্যুরোপ্রধান তিনি। যদিও বাংলা লিখতে পারেন না। পারার কথাও নয়। কারণ তিনি প্রতিবেশী মিয়ানমার থেকে এ দেশে এসে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একজন। যদিও প্রকৃত পরিচয় ছাপিয়ে তিনি এখন বাংলাদেশের নাগরিক।
হ্যাঁ, এ পরিচয়ের বিধিগত ভিত্তিও রয়েছে তার। কারণ তার নামে রয়েছে বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয়পত্র বা এনআইডি। শুধু তাই নয়; এ দেশে বেশ শক্ত শিকড় গেড়েই বসেছেন তিনি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন থেকে এক্সপোর্ট-ইমপোর্টের ব্যবসায়িক সনদও বাগিয়ে নিয়েছেন নিজ নামে। উপরন্তু একটি ট্রাভেল এজেন্সির মালিক। আর এ এজেন্সির মাধ্যমে কাঁড়ি কাঁড়ি টাকাও কামিয়েছেন রফিক; স্বজাতি রোহিঙ্গাদের সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাঠাতেন। ১১ বছর আগে বাংলাদেশে এসেছেন। এর মধ্যেই বনে গেছেন বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক।

রফিকের থলের বিড়াল বেরিয়ে এসেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানের বদৌলতে। গত ২৫ সেপ্টেম্বর রাতে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) মো. রফিককে নগরীর সবচেয়ে সংবেদনশীল এলাকা কাজীর দেউড়ি সার্কিট হাউসের উল্টো পাশের ভিআইপি টাওয়ারের দ্বিতীয় তলায় অবস্থিত তার ট্রাভেল এজেন্সি আরএসএম ফার্স্ট ইন্টারন্যাশনাল থেকে গ্রেপ্তার করে।

এ সময় তার কাছ থেকে ১৫টি পাসপোর্ট, তার নামে তৈরি বাংলাদেশের এনআইডি, ট্রেড লাইসেন্স, ৫টি ব্যাংকের চেকবই, ৫টি ভিসা প্রক্রিয়াকরণ ফাইলসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি জব্দ করা হয়েছে। তবে আটাবের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি জাফর আলম দাবি করেছেন, এ নামের কোনো এজেন্সি তাদের সংগঠনের সদস্য নয়।

বাংলাদেশের নাগরিক বনে গিয়ে মো. রফিক নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার ব্লক ফোরে ফ্ল্যাট কিনেছেন; হাঁকান টয়োটা এলিয়ন প্রাইভেট কার। বান্দরবানের আলীকদম এলাকায় তিনি একাধিক পাহাড়ও কিনেছেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।

অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মো. রুহুল আমিন আমাদের সময়কে বলেন, গোপনে বিদেশে পাচারের জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তরুণ-তরুণীদের এনে জড়ো করা হয়েছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালাই। এ সময় মো. রফিক ও তার শ্যালক নুর ফাহাদ কৌশলে পালানোর চেষ্টা করলেও শেষ রক্ষা হয়নি।

ধরা পড়ার পর রফিক নিজেকে ‘প্রাইভেট ডিটেকটিভ’ নামের একটি অপরাধবিষয়ক পত্রিকার চট্টগ্রাম ব্যুরোপ্রধান বলে পরিচয় দেন, তুলে ধরেন এ সংক্রান্ত একটি পরিচয়পত্রও। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে জানা যায়, তিনি বাংলা লিখতে পর্যন্ত পারেন না। তার কথাবার্তা শুনেও সহজেই অনুমান করা যায় যে তিনি একজন রোহিঙ্গা। কারণ মাতৃভাষায় কথা বলছিলেন তিনি। জিজ্ঞাসাবাদেও দুজনই স্বীকার করেছেন যে তারা রোহিঙ্গা।

রফিকের এজেন্সি থেকে জব্দ করা পাসপোর্টগুলো যাদের নামে, তাদের স্থায়ী ঠিকানা দেখানো হয়েছে কক্সবাজার সদর, রামু, টেকনাফ, চট্টগ্রাম শহরের পাঁচলাইশ, জেলার বাঁশখালী, আনোয়ারা, ঢাকা জেলার দোহার, নোয়াখালী, সিলেট ও কুমিল্লার নাঙ্গলকোট। এগুলো রোহিঙ্গাদের জন্য করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। এটি সামনে রেখেই চলছে তদন্ত, জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877