স্বদেশ ডেস্ক:
বাংলাদেশ এবার ব্রিকসের সদস্যপদ পাওয়ার চেষ্টা করেনি বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ মঙ্গলবার গণভবনে ব্রিকস সম্মেলন নিয়ে ডাকা সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্যপদ চেয়েছিল কি না, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্তের করা এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘চাইলে পাব না, এমন কিন্তু না। কিন্তু প্রত্যেক কাজের একটি নিয়ম থাকে, সেই নিয়ম মেনেই চলি। আমার সঙ্গে যখন সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের সাক্ষাৎ হলো, তিনি যখন আমাকে আমন্ত্রণ জানালেন যে ব্রিকস সম্মেলন করবেন। আমাকে আসতে বললেন এবং সেই সময় আমাকে জানালেন যে তারা কিছু সদস্যপদ বাড়াবেনও এবং সেটায় আমার মতামতও জানতে চাইলেন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি বললাম যে এটা খুবই ভালো হবে। কারণ, ব্রিকস যখন প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন থেকে এই পাঁচ দেশের সরকারপ্রধানের সঙ্গে কিন্তু আমার একটা ভালো যোগাযোগ সব সময় ছিল এবং আছে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা জানেন ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট, তিনিও তখন ক্ষমতায় ছিলেন মাঝখানে তো ছিলেন না, আবার নতুন করে এলেন। তো, সেই সময় আলাপ হলো এই পর্যন্ত। আমরা যখন শুনলাম নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক তৈরি হচ্ছে, ওইটার ওপরই আমার বেশি আগ্রহটা ছিল। সেখানে আমরা যুক্ত হতে চেয়েছিলাম, যখন থেকে তৈরি হয় তখন থেকেই আমার একটা আগ্রহ ছিল যে আমরা যুক্ত হব।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আর ব্রিকসের সদস্যপদ, প্রেসিডেন্ট কিন্তু তখনই বলেছেন ধাপে ধাপে নেবেন ভৌগলিক অবস্থাটা বিবেচনা করে। যে দেশগুলো নেবেন, তারপর পর্যায়ক্রমে সদস্য সংখ্যা তারা বাড়াবে। আমরা ঠিক ওইভাবে…., হ্যাঁ, নিলে খুব খুশি কিন্তু আমরা ঠিক ওইভাবে, ওই ব্রিকসে এখনই সদস্যপদ পাব, প্রথমবার যেয়েই সদস্যপদ পাব সেই ধরনের কোনো চিন্তা আমাদের মাথায় ছিলও না বা সেই রকম কোনো চেষ্টাও আমরা করিওনি বা বলিও নাই।’
তিনি বলেন, ‘ওখানে তো আমার সব সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে দেখা হয়েছে। ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট, ইন্ডিয়ার প্রাইম মিনিস্টিার থেকে শুরু করে প্রত্যেকের সঙ্গে- আমরা কিন্তু কারও কাছে বলতে যাইনি যে আমাদের এক্ষুনি মেম্বার করেন। তখন থেকেই আমরা জানি প্রথমে কয়েকটা দেশ নেবেন, এটা আমাকে প্রেসিডেন্ট যখন লাঞ্চে বসি, পাশেই ছিলেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট এবং সাউথ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট, এদিকে ছিলেন আমাদের নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি জেনারেল জাতিসংঘের, ওই সময় আলোচনা হয়। বলে যে আমরা এখন এই কয়জন নেব, এরপর আমরা ধাপে ধাপে সদস্য সংখ্যা বাড়াব।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন আমি জানি জানি প্রশ্নটা আসবে কারণ আমাদের অপজিশন থেকে খুব হুতাশ যে, আমরা নাকি চেয়ে পাইনি, হেন-তেন। বাংলাদেশ কিছু চেয়ে পাবে না, এটা কিন্তু ঠিক না। আন্তর্জাতিকভাবে আমরা বাংলাদেশের যে মর্যাদা তুলে ধরেছি, সেখানে আমাদের সেই সুযোগটা আছে।’
তিনি বলেন, ‘তারা (বিএনপি) বলতে পারে, কারণ তাদের বিএনপির আমলে ওইটাই ছিল। বাংলাদেশের কোনো অবস্থানই ছিল না সারা বিশ্বে। বাংলাদেশ মানেই ছিল দুর্ভিক্ষের দেশ, ঝড়ের দেশ, বন্যার দেশ, হাত পেতে চলার দেশ, ভিক্ষা চাওয়ার দেশ। এখন অন্তত বাংলাদেশ ভিক্ষা চাওয়ার দেশ না, এটা সবাই জানে।’