স্বদেশ ডেস্ক:
মাসিক ভাতা ৫০ হাজার টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকেরা। টানা এক সপ্তাহের এ আন্দোলনে আজ রোববার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ভেতরে অবস্থান নেন তারা। পরে শাহবাগ অবরোধ করেন। তবে ৫০ হাজার নয়, ৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
আজ সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. বায়জীদ খুরশীদ রিয়াজ গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে এই সিদ্ধান্ত এসেছে। আমরা সবাইকে এমনটাই নিশ্চিত করেছি।’
বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেসরকারি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রশিক্ষণার্থী চিকিৎসকদের ভাতা আপাতত পাঁচ হাজার বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করোছেন। বর্তমানে এর চেয়ে বেশি বাড়ানো সম্ভব নয়।’
তবে আন্দোলনকারী চিকিৎসকেরা বলছেন, ‘আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করেই এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আমরা এ সিদ্ধান্ত মানি না।’
পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ডক্টর অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক নূরনবী বলেন, ‘আমরা এই ৫ হাজার টাকা মানি না। যে দাবি আমাদের ছিল, সেখানেই রয়েছি আমরা। আর আমাদের দীর্ঘদিনের এই আন্দোলনে দাবি ছিল দুটো। একটা হচ্ছে ভাতা নিয়মিত করা এবং ৫০ হাজার টাকা ভাতা। সেখানে কী করে ৫ হাজার টাকা বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করা হয়? এই ৫ হাজার টাকা বাড়ানো আর না বাড়ানো সমান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আন্দোলনরত সবার সঙ্গে কথা বলেছি, আমরা কেউ এই ৫ হাজার টাকা বৃদ্ধি মেনে নিচ্ছি না। ভাতা আরও বাড়াতে হবে। কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে এটা করা হয়েছে। কিন্তু আমাদরে বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়নি। যদি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হতো, তাহলে ৫ হাজার টাকা বাড়ানো হতো না। কোনো মানুষই এ সিদ্ধান্ত নিতে পারে না যে, ২৫ হাজার টাকা ভাতা হতে পারে। কর্মসূচি চলবে।’
এর আগে আজ সকালে শাহবাগ অবরোধ করার কথা জানালেও পুলিশি বাধায় পরে বিএসএমএমইউ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে অবস্থান নেন তারা। একপর্যায়ে সব গেটে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়।
এ সময় চিকিৎসকরা ‘ক্ষুধা পেটে সেবা নয়, অধিকার চাই ভিক্ষা নয়’, ‘অনুগ্রহ নয় অধিকার চাই, সামঞ্জস্যপূর্ণ বেতন কাঠামো চাই’, ‘আশ্বাস নয় প্রমাণ চাই, ৫০ হাজার ভাতা চাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
এদিকে, চিকিৎসকদের এমন আন্দোলনে বিপাকে পড়েন রোগীরা। বহির্বিভাগ ও অন্তঃবিভাগে প্রতিদিন কয়েক হাজার রোগী চিকিৎসা সেবা নেন। এসব সেবাদানকারীদের বড় অংশই ট্রেইনি চিকিৎসকেরা।
এর আগে একই দাবিতে গত ৯ জুলাই থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছিলেন চিকিৎসকেরা। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত করা হয়। তবে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় ফের আন্দোলনে নামেন তারা।
শিক্ষানবীশ চিকিৎসকরা বলেন, ‘২০২০ সাল থেকে এই দাবিতে আন্দোলন চলছে, ভাতা ৫০ হাজার টাকা বৃদ্ধির পাশাপাশি ভাতা নিয়মিতকরণ ও বকেয়া ভাতা পরিশোধের দাবি জানিয়ে আসছি আমরা। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেবল বকেয়া ভাতা পরিশোধের দাবিটি মানা হয়েছে, অন্য দুটি এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি।’