স্বদেশ ডেস্ক:
যুক্তরাষ্ট্রের জ্যাকসন হাইটে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য শামীম ওসমান।
শনিবার (১৫ জুলাই) রাতে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের জবাব দিতে মুখ খুলেন নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ওই এমপি। এর আগে ঘটনার পর থেকে শামীম ওসমানের হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে গণমাধ্যম কর্মীরা প্রতিক্রিয়া জানতে চান।
ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের হোয়াটসঅ্যাপে এক ভয়েস ম্যাসেজে শামীম ওসমান তার প্রতিক্রয়ায় বলেন, দেখেন আপনার প্রশ্নের উত্তরে আমি একটা কথা বলতে চাই যে যারা বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রর মতো একটা সভ্য দেশে এসেছে এবং সেখানে এসে তারা সভ্যতটা শেখেনি। যুক্তরাষ্ট্রর মতো একটি সভ্য দেশে যে ঘটনাটি ঘটিয়েছে সেটা অবশ্যই দু:খজনক ঘটনা। তবে তাদের নেতা তাদের যে শিক্ষা দিয়েছেন তাদের কাছে এর চেয়ে ভালো কিছু আশা করা যায় না।
ভয়েস ম্যাসেজে শামীম ওসমান আরো বলেন, বিষয়টি হচ্ছে আমি ওখানে একাই ছিলাম। আমার সাথে আমার এক ছোট ভাই গাড়ী চালাচ্ছিলেন। আমি হয়তো গাড়ি থেকে নামতামই না। তারা যদি শুধু আমাকে গালি দিত, আমি তাদের সামনেই যেতাম না। যখন তারা জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনাকে নিয়ে অত্যন্ত বাজে মন্তব্য করেছে। তখন আমাকে নামতেই হয়েছে। কারণ আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। যা হোক এ বিষয় নিয়ে আমাদের নারায়ণগঞ্জসহ সব জায়গায় উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। আমি সবার কাছে অনুরোধ করব যে, এতে আমাদের উত্তেজিত হওয়ার কিছু নাই। আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা আমাদের নেত্রী আমাদের এই শিক্ষা দেন নাই। তাই সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ করব এবং দয়া করে আরেকটি অনুরোধ করব যে, এই বিচারের ভার জনগণের কাছেই ছেড়ে দেয়া উচিত।
তিনি আরো বলেন, সেখানে ঘটনার দিন যেটা আমার কাছে ভালো লেগেছে সেটা হচ্ছে যে, যেহেতু আমি একা ছিলাম। তারা অনেকে লোক ছিল। কিন্তু প্রতিবাদ আমি একা করি নাই। প্রতিবাদ করেছেন জ্যাকসন হাইটে যারা বিভিন্ন দোকানের মালিকরা আছেন। তারা নিজেরাই শেষ পর্যন্ত প্রতিবাদ করেছেন এবং একপর্যায়ে প্রতিরোধ করেছেন। তাই তারা ওখান থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। জনগণ যে আমাদের সাথে আছে দেশে এবং বিদেশে এটি তারা প্রমাণিত হয়েছে। তাই আমি আপনাদের গণমাধ্যম কর্মীদের মাধ্যমে সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি সবাই যেন একটু শান্ত থাকেন।
উল্লেখ্য, বুধবার ১২ জুলাই স্থানীয় সময় সন্ধ্যার পর বাংলাদেশী ব্যবসায়ীদের প্রাণকেন্দ্র জ্যাকসন হাইটসের লিটল বাংলাদেশ (৭৩ স্ট্রিট) এলাকায় যান শামীম ওসমান। তিনি একটি কালো রঙের রেঞ্জ রোভার গাড়িতে ছিলেন। তাকে দেখামাত্র রাস্তার বিপরীতে থাকা নিউইয়র্ক মহানগর বিএনপি নেতা রাব্বি ও সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক নেতা বাদল মির্জাসহ কয়েকজন যুবক শামীম ওসমানকে নিয়ে প্রথমে কটুক্তি করতে থাকে। তখনো তিনি গাড়িতেই ছিলেন। পরক্ষণেই কটুক্তিকারীরা প্রধানমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বাজে মন্তব্য করেন। এতে গাড়ি থেকে একাই নেমে এসে সেই বিএনপি কর্মীদের সামনে এসে শামীম ওসমান কথা বলেন ও তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন।
এ সময় তিনি ওই বিএনপি নেতাকর্মীদের বলেন, আমি কিন্তু শামীম ওসমান। একপর্যায়ে শামীম ওসমান ও প্রধানমন্ত্রী নিয়ে কুটক্তি করা হয়েছে এ খবর পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রর জ্যাকসই হাইটের বিভিন্ন দোকান মালিকরা কুটক্তিকারীদের প্রতিবাদ করেন। কুটক্তিকারীদের সাথে ব্যবসায়ীদের হাতাহাতি ধাক্কাধাক্কি হয়। ওই সময় শামীম ওসমান উভয় পক্ষকে নিবৃত থাকার জন্য অনুরোধ করছিলেন। ইতিমধ্যে জ্যাকসন হাইটে ঘটে যাওয়া ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন জায়গায় ভাইরাল হয়েছে এবং টক অফ দ্যা কান্ট্রিতে পরিণত হয়।