শুক্রবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ০২:১৯ অপরাহ্ন

জুয়ার শীর্ষ নিয়ন্ত্রকেরা ধরাছোঁয়ার বাইরে

জুয়ার শীর্ষ নিয়ন্ত্রকেরা ধরাছোঁয়ার বাইরে

স্বদেশ ডেস্ক: রাজধানীর জমজমাট জুয়ার আড্ডাগুলো আপাতত বন্ধ। ক্যাসিনো ও ক্লাবগুলোর প্রধান গেটে ঝুলছে বড় বড় তালা। কোনো কোনোটি ভেতর থেকে বন্ধ থাকলেও দারোয়ান-পিয়ন ছাড়া সেখানে কেউ নেই। এসব আড্ডার নিয়ন্ত্রক যারা ছিলেন তারা এখন লাপাত্তা। পৃথক অভিযানে দু’টি ক্যাসিনো ও ক্লাবের সভাপতিকে গ্রেফতার করা হলেও অন্যরা ধরাছোঁয়ার বাইরে।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ফকিরাপুলের ইয়ংমেন্স ক্লাবে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। সেখান থেকে ১৪২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ওই রাতে ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র এবং বনানীস্থ গোল্ডেন ঢাকা বাংলাদেশ ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র্যাব সদস্যরা। ২০ সেপ্টেম্বর কলাবাগান ক্রীড়াচক্রে অভিযান চালায় র্যাব সদস্যরা। এই ক্লাব ও ক্যাসিনোগুলোর মধ্যে ইয়ংমেন্সের সভাপতি খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া এবং কলাবাগান ক্রীড়াচক্রের সভাপতি ফিরোজকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি ক্লাব ও ক্যাসিনোগুলো যারা পরিচালনা করে আসছিল তাদের কেউ গ্রেফতার হয়নি।

গতকাল রাজধানীর দিলকুশা ও ফকিরাপুল এলাকায় ঘুরে দেখা যায় প্রায় সব ক্লাবের গেটেই তালা দেয়া অথবা ভেতর থেকে বন্ধ করা। ভেতরে কারো প্রবেশের অনুমতি নেই। ওয়ান্ডারার্স ক্লাব, ইয়ংমেন্স ক্লাব, দিলকুশা ক্লাব, ওয়ারী ক্লাব, গুলিস্তানের মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্র, কলাবাগান ক্রীড়াচক্রসহ রাজধানীর ছোট বড় অনেক ক্লাবেই এখন তালা ঝুলছে। যেগুলোর বাইরে থেকে তালা খোলা রয়েছে; সেগুলোও ভেতর থেকে গেট বন্ধ। গতকাল ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের সামনে গিয়ে দেখা যায় তার গেট বন্ধ। পাশেই ক্লাবের এক কর্মচারী ঘোরাফেরা করছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ক্লাব কর্মচারী বলেন, গেট খুলতে নিষেধ আছে। বাইরের কোনো লোকের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ওই কর্মচারী বলেন, এখন ক্লাবের কর্মকর্তারাও কেউ আসছেন না।

অপর এক ক্লাবের একজন পরিচালক বলেন, ক্লাবপাড়ায় জুয়ার আসর বসে এটা নতুন কোনো ঘটনা নয়। বছরের পর বছর এখানে জুয়ার আসর বসছে। কোনো কোনো ক্লাব অনুমতি নিয়েই এই জুয়া চালায়। কিন্তু হঠাৎ এমন কী ঘটল তা তারা বুঝতে পারছেন না! ওই কর্মকর্তা বলেন, যারা জুয়ার আসর চালায় না এমন ক্লাব পরিচালকরাও এখন আতঙ্কের মধ্যে আছেন। তিনি বলেন, ক্লাবপাড়ায়ই নয়; ঢাকার পাড়া-মহল্লার ক্লাবেও জুয়া চলে। আর প্রশাসনের চোখের সামনেই বছরের পর বছর এই অনৈতিক কর্ম চলে আসছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তো দু’চারটিতে অভিযান চালিয়েছে; এর বাইরেও শত শত ক্লাব রয়েছে, যেখানে জুয়ার আসর বসছে। গতকাল বেশ কয়েকটি ক্লাবে খবর নিয়ে জানা গেছে, অভিযান শুরুর পর তারা জুয়ার সরঞ্জামাদি সরিয়ে ফেলেছেন। ওইসব ক্লাবে জুয়া চলত তার ছিটে ফোঁটা চিহ্নও নেই।

এ দিকে দু’টি ক্লাবের দু’জন শীর্ষ কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হলেও আরো অনেক ক্লাব রয়েছে যেখানে জুয়া পরিচালনার তথ্য প্রমাণের পরও তাদের শীর্ষ সারির কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। এ নিয়ে নানা কানাঘুষা রয়েছে। ইতোমধ্যে অনেকেই গা ঢাকা দিয়েছেন। আবার অনেকে গ্রেফতার এড়িয়ে চলছেন বলে জানা গেছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দু’জন কর্মকর্তা বলেছেন, যেসব ক্লাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ মিলবে তার প্রতিটিতেই অভিযান চালানো হবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877