স্বদেশ ডেস্ক:
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছেন, ‘আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে বিদেশীদের তৎপরতায় কোনো চাপ অনুভব করছি না। নির্বাচন কমিশন আইন অনুযায়ী অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন করতে চায়। তাই নির্বাচনকালীন প্রশাসনের কেউ দায়িত্ব পালনে কোনো ধরনের ব্যত্যয় করলে তা মেনে নেয়া হবে না।’
বুধবার (৭ জুন) দুপুরে রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সিইসি কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘বিদেশীদের তৎপরতায় আমরা কোনো চাপ অনুভব করছি না। আর সত্যি বলতে ওই বিষয়গুলো গায়েও মাখছি না। ওগুলো বিষয় হয়ে থাকলে তা সরকারের জন্য হতে পারে, আমাদের জন্য নয়।’
তিনি আরো বলেন, সবাইকে নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলতে হবে। অধিকারের প্রশ্নে কমিশনের চোখে সবাই এক। তাই যে দলেরই হোক, গুরুতর আচরণবিধি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে কোনো প্রার্থীর প্রার্থিতা বাতিল করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করা হবে না। কমিশন কোনো দল বা পক্ষের হয়ে কাজ করে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্বাধীনভাবে কাজ করবে। আর নির্বাচনের দিন কোনো রকম সমস্যা মনে হলে নির্বাচন বন্ধ করে দেয়া হবে। এমন দৃষ্টান্তও রয়েছে নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচন কমিশন সরকারের প্রতিনিধিত্ব করে না, এটি একটি স্বাধীন সংস্থা।
সিইসি রসিক নির্বাচনের প্রার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড আছে। আপনারা ইচ্ছা মতো প্রচারণা চালাতে পারছেন। কেউ যদি নির্বাচনে প্রচারণা না চালিয়ে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) নিয়ে বিভ্রান্ত সৃষ্টি করেন, তাহলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব। আমরা স্বচ্ছতায় বিশ্বাস করি। আপনারা ভোটে দাঁড়িয়েছেন, ভোটাররাও ভোট দিতে আসবে। ইভিএম সম্পর্কে আপনাদের ধারণা দিতে হবে। তাহলে নির্বাচন সফল হবে।’
বুধবার সকাল ১০টায় রাজশাহী শিল্পকলা অ্যাকাডেমি মিলনায়তনে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফর উল্লাহর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভা শুরু হয়। সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) মো: আহসান হাবিব খান ও সচিব মো: জাহাঙ্গীর আলম।
মতবিনিময় সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আব্দুল বাতেন, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আনিসুর রহমান, রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ, রাজশাহীর পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন ও রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন। সভায় নির্বাচন কাজে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের কর্মকর্তারাও অংশ নেয়।
সভায় রসিক নির্বাচনের চার মেয়র প্রার্থীসহ ৩০টি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিল প্রার্থীরা অংশ নেন। প্রার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্ন ও অভিযোগের উত্তর দেন নির্বাচন কমিশনের সচিব জাহাঙ্গীর আলম ও রাজশাহী সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো: দেলোয়ার হোসেন।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২১ জুন রাজশাহী সিটি করপোরেশন (রাসিক) নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। মোট ১৫২টি ভোট কেন্দ্রের এক হাজার ১৭৩টি কক্ষে ওই দিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হবে। রাসিক নির্বাচনে এবার ভোটার সংখ্যা তিন লাখ ৫২ হাজার ১৫৭ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৭১ হাজার ১৮৫ এবং নারী ভোটার এক লাখ ৮০ হাজার ৯৭২। নির্বাচনে মেয়র পদে চারজন, ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৪৬ জন নারী কাউন্সিলর এবং ২৯টি ওয়ার্ডে ১১১ জন কাউন্সিলর প্রার্থী অংশ নিচ্ছেন। এছাড়া ২০ নম্বর ওয়ার্ডে একক প্রার্থী থাকায় তাকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে।