স্বদেশ ডেস্ক:
শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে ১৩ ছাত্রীর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত ভুক্তভোগী ছাত্রীরা স্কুলে যাবেন না বলে প্রতিজ্ঞা করেছে।
গত বৃহস্পতিবার উপজেলার ডিএম খালী ইউনিয়নের ২৯ নম্বর উকিলকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। স্কুলের ওই প্রধান শিক্ষিকার নাম কবরী গুপ্তা। চুল কেটে দেওয়া ওই ১৩ ছাত্রীর সবাই পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির ভুক্তভোগী কয়েকজন ছাত্রী জানায়, ঘটনার দিন তারা দুপুর ১২টার আগে বিদ্যালয়ে এসে খেলাধুলা করছিল। খেলাধুলা করতে গিয়ে তখন তাদের চুল এলোমেলো হয়ে যায়। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তাদের ডেকে শ্রেণিকক্ষে নিয়ে যান। সেখানে নিয়ে গিয়ে বিদ্যালয়ের দপ্তরিকে দিয়ে চুল কেটে দেন।
ওই ছাত্রীরা আরও জানায়, তাদের বিদ্যালয়ে অনেক হিন্দু ছাত্রী রয়েছে। তারাও তাদের সঙ্গে খেলাধুলা করেছিল। কিন্তু তাদের চুল কাটা হয়নি। তাদের চুল অনেক সুন্দর ছিল বলে ছাত্রীরা জানায়। একই সঙ্গে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত তারা বিদ্যালয়ে যাবেন না বলে প্রতিজ্ঞা করেছে।
ভুক্তভোগী এক ছাত্রীর বাবা খোকন হাওলাদার বলেন, ‘আমি প্রধান শিক্ষিকার কাছে ছাত্রীদের চুল কাটার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি সঠিক কোনো জবাব দেননি। বরং আমার সঙ্গে অনেক খারাপ আচরণ করেছেন। তিনি আমাকে স্কুল থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। আমি আত্মসম্মানের ভয়ে সেখান থেকে চলে আসি।’
ওই অভিভাবক আরও বলেন, ‘আমার মেয়েকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য বিদ্যালয়ে পাঠিয়েছি। সে কোনো অপরাধ করলে তার শাসন করার অধিকার শিক্ষিকার রয়েছে। তাই বলে বিনা অপরাধে আমার মেয়ের চুল কেটে দেবে, তা আমি কোনোভাবেই মানতে পারছি না। আমি ওই শিক্ষিকার বিচার চাই।’
ছাত্রীদের চুল কাটার অভিযোগ স্বীকার করে প্রধান শিক্ষিকা কবরী গুপ্তা বলেন, ‘ছাত্রীরা এলোমেলো চুল নিয়ে স্কুলে আসে। এর আগেও আমি তাদের চুল বেঁধে স্কুলে আসতে বলেছিলাম। কিন্তু তারা চুল বেঁধে আসেনি। তাই আমি ওদের চুল স্কুলের দপ্তরিকে দিয়ে কেটে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমি সেখানে আমার প্রতিনিধি উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মশিউল আজমকে তদন্তের জন্য পাঠিয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’