সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৭ অপরাহ্ন

ট্রাম্পের বাড়িতে পাওয়া নথির হলফনামা প্রকাশ

ট্রাম্পের বাড়িতে পাওয়া নথির হলফনামা প্রকাশ

স্বদেশ ডেস্ক:

সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাড়িতে পাওয়া নথির হলফনামা প্রকাশ করেছে দেশটির বিচার বিভাগ। প্রকাশিত নথিতে দেখা যাচ্ছে, এফবিআই বিচারকদের জানিয়েছে যে ট্রাম্পের বাড়িতে তারা যে তল্লাশি চালিয়েছে সেখান থেকে বিচারে বাধা দেয়ার কিছু প্রমাণ তারা পেয়েছে।

তদন্ত কর্মকর্তারা বলেছেন, ট্রাম্পের বাড়ি মার-এ-লাগোতে সংবাদপত্র ও ম্যাগাজিনের সাথে অতি গোপনীয় নথিও মজুদ করে রাখা হয়েছিলো।

মার্কিন বিচার বিভাগ বলছে যে, তল্লাশির যে হলফনামা আদালতে দেয়া হয়েছে সেটি তারা সেন্সর করে প্রকাশ করেছে। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক বেসামরিক নাগরিকের সাক্ষীদের সুরক্ষা দিতে এটি করা হয়েছে।

ট্রাম্প এ তদন্তকে সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।

শুক্রবার মার্কিন বিচার বিভাগ ওই হলফনামা প্রকাশ করে।

এফবিআই এজেন্টরা গত ৮ অগাস্ট ট্রাম্পের বাড়িতে তল্লাশি চালায় এবং ওই সময় একটি সিন্দুক ভেঙ্গে ফেলা হয়।

প্রেসিডেন্ট থাকার সময় সরকারি কাগজপত্র ট্রাম্প কিভাবে ব্যবহার করেছেন, তা নিয়ে একটি তদন্তের অংশ হিসাবে এই তল্লাশি চালানো হচ্ছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তল্লাশি বেড়েছে এমন সময়, যখন তিনি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মনোনয়নের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছেন।

তিনি অভিযোগ করেছেন, প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে তাকে বিরত রাখতে বিচার বিভাগকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

‘এ ধরনের হামলা শুধুমাত্র ভঙ্গুর, তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোয় দেখা যায়। দুঃখজনক হলো, আমেরিকান এখন সেসব দেশের একটি হয়ে উঠেছে, এরকম দুর্নীতি আগে কখনো দেখা যায়নি,’ তিনি বলেছেন।

‘তারা এমনকি আমার একটা সিন্দুকও ভেঙ্গেছে,’ বাড়ি তল্লাশির পর বলেছিলেন ট্রাম্প।

তবে এফবিআই এজেন্টদের যারা তল্লাশির বিষয়ে হলফনামা তৈরি করেছেন তারা লিখেছেন যে প্রমাণ ও বিভিন্ন অবৈধ দ্রব্য সেখান থেকে পাওয়া যাবে এটা বিশ্বাস করার অনেক কারণ আছে।

ওই ডকুমেন্টসে দেখা যাচ্ছে, সাবেক প্রেসিডেন্টের বাড়িতে নজিরবিহীন এই অপরাধ তদন্ত শুরু হয়েছে ন্যাশনাল আর্কাইভস গত জানুয়ারিতে মার-এ-লাগোতে পাওয়া ১৫টি বাক্সের মধ্যে বেশ কিছু গোপন নথির সন্ধান পায় তার ওপর ভিত্তি করে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্সিয়াল নথিপত্র সংরক্ষণ করে ন্যাশনাল আর্কাইভস। ডোনাল্ড ট্রাম্প কীভাবে সেখানকার নথিপত্র ব্যবহার করেছেন, তা তদন্ত করে দেখতে গত ফেব্রুয়ারিতে সংস্থাটি মার্কিন বিচার বিভাগের কাছে অনুরোধ করে।

ন্যাশনাল আর্কাইভস জানিয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাসভবন মার-এ-লাগো থেকে তারা ১৫ বাক্স কাগজপত্র নিয়ে এসেছে, যার মধ্যে অনেক গোপনীয় নথিপত্র ছিল।

এফবিআর এগুলো পর্যালোচনা করে দেখেছে যে এর মধ্যে ১৮৪টি ক্লাসিফায়েড ডকুমেন্টস আছে যার মধ্যে ২৫টি ‘অতি গোপনীয়’ হিসেবে চিহ্নিত করা।

যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, মার্কিন প্রেসিডেন্টকে তার সকল চিঠিপত্র, কাজের কাগজপত্র এবং ইমেইল ন্যাশনাল আর্কাইভের কাছে হস্তান্তর করতে হয়।

কিন্তু কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট এরকম অনেক নথিপত্র বেআইনিভাবে ছিঁড়ে ফেলেছেন।

ন্যাশনাল আর্কাইভস জানিয়েছে, অনেক কাগজপত্র আবার আঠা লাগিয়ে জোড়া দিতে হয়েছে।

যখন প্রথম এই খবর প্রকাশিত হয়, তখন সেটি ‘মিথ্যা সংবাদ’ বলে দাবি করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

তবে এফবিআই বলছে ট্রাম্পের বাড়িতে পাওয়া প্রমাণগুলোর মধ্যে কিছু খুবই স্পর্শকাতর গোয়েন্দা তথ্য আছে।

কিছু এমন ভাবে চিহ্নিত করা আছে, যাতে সেগুলো কখনো বিদেশী নাগরিকদের কাছে না যায়।

কয়েকটি ফাইলে ট্রাম্পের হাতে লেখা নোট আছে।

‘সবচেয়ে বেশি উদ্বেগের বিষয় হলো, অতি গোপনীয় নথি ছিলো উন্মুক্ত এবং অন্য কাগজপত্রের সাথে মেশানো,’ হলফনামায় বলেছে এফবিআই।

এসব পাওয়ার কারণে তদন্তকারীরা বলছেন যে এর মাধ্যমে তিন আলাদা আইনের লঙ্ঘন করেছেন ট্রাম্প।

৩৮ পাতার এই হলফনামায় ২১টি পাতার লেখাই কালো কালি দিয়ে মুছে প্রকাশ করেছে বিচার বিভাগ। এর মধ্যে কোন কোন পাতায় একটি শব্দও বোঝা যায় না।

তবে আরেকটি ডকুমেন্টসে বলা হয়েছে যে, বেসামরিক সাক্ষীদের সুরক্ষার জন্য হলফনামার কিছু অংশ অবশ্যই গোপন রাখতে হবে।

যাতে করে সাক্ষীদের নিরাপত্তা হুমকির মুখে না পড়ে।

তবে ট্রাম্প এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

বলেছেন যে, তিনি আগেই এসব নথি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

বিচার বিভাগ অবশ্য এসব ফাইল পর্যালোচনা অব্যাহত রাখবে তবে সর্বসাধারণের তা শোনার সুযোগ থাকবে না।

সূত্র : বিবিসি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877