বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ০১:৩৭ পূর্বাহ্ন

এই সাঈদ নিহত সাঈদ কি না, জানতে চান আদালত

এই সাঈদ নিহত সাঈদ কি না, জানতে চান আদালত

স্বদেশ ডেস্ক:

আবু সাঈদ নামের যে ছেলেটি গ্রেপ্তার হয়েছে, সে খুন হওয়া আবু সাঈদ কি না, এ বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল–৫-এর বিচারক বেগম ছামসুন নাহার আজ বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন।

খুন হওয়ার ৫ বছর পর ফিরে এসে প্রতারণার মামলায় কারাগারে থাকা কিশোর আবু সাঈদকে (১৫) আজ ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যতন দমন ট্রাইব্যুনালে তোলা হয়েছে। আদালতে তোলার পর মিথ্যা মামলা করার কারণে জেলে থাকা আসামিরা তার বিচার দাবি করেন।

আজ আবু সাঈদের বাবা মোহাম্মদ আজম ও মা মাহিনুর বেগমকেও কারাগারে ওই ট্রাইব্যুনালে হাজির করে পুলিশ।

শুনানিকালে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘একটি ছেলে নিজ থেকে পালিয়ে যায়। সেখানে মিথ্যা অপহরণ মামলায় তিনজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের নির্যাতন করে দুজনকে দিয়ে মিথ্যা হত্যার স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়। আজ সেই মৃত ছেলে জীবিত হয়ে আদালতে।’

মো. ওয়াহিদুজ্জামান আরও বলেন, ‘এ মামলার যে তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির উপপরিদর্শক (এসআই) রুহুল আমিন, বর্তমানে তিনি ডেমরা থানায় কর্মরত। তিনি এদের নির্যাতন করে মিথ্য স্বীকারোক্তি আদায়কারীর মাস্টারমাইন্ড ছিলেন। তার এবং তার পেছনে যারা কলকাঠি নাড়িয়েছে, তার বিচার চাই।’

এরপর বিচারক বেগম শাসসুন্নাহার মামলার ভিকটিম আবু সাঈদ ও তার বাবা মোহাম্মদ আজমকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদে আজম আদালতে উপস্থিত ছেলেকে দেখিয়ে বলেন, ‘এই সেই আবু সাঈদ, যে হারিয়ে গিয়েছিল।

আবু সাঈদকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সে বলে, পড়ালেখা ভালো লাগত না, তাই বাড়ি থেকে সে পালিয়ে গিয়েছিল। তাকে কেউ অপহরণ করে নাই।

এরপর বিচারক বলেন, এই আবু সাঈদ-ই যে এ মামলার নিহত “আবু সাঈদ” তা আমাকে পুলিশ প্রতিবেদনের মাধ্যমে জানতে হবে। তাই আগামী ২২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে হাজারীবাগ থানাকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে আদেশ দিলাম। আর অপনাদের মিথ্যা মামলার বিচার চাওয়ার আবেদনের আদেশ পুলিশ প্রতিবেদন পাওয়ার পর দেওয়া হবে। ‘

শুনানিকালে মিথ্যা মামলায় দীর্ঘদিন জেল হাজতে থাকা মো. সাইফুল ইসলাম, সোনিয়া আক্তার ও তার ভাই আফজাল হোসেন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আবু সাঈদ হারিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ২০১৪ সালের ১৭ এপ্রিল বাবা মো. আজম একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেন। ওই জিডির পর তিনি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবীর মামলা করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন সময় আসগর আলী, মিলন, মো. সাইফুল ইসলাম হাওলাদার, সোনিয়া আক্তার, তার ভাই আফজাল হোসেন ও মো. শাহীন বাড়ীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

পরবর্তীতে মামলায় ২০১৪ সালের ৭ ডিসেম্বর সাইফুল ও আফজাল ঢাকা সিএমএম আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। স্বীকারোক্তিতে তারা বলেন, ভিকটিম আবু সাঈদকে তারা অপহরণ করে হত্যার পর লাশ বরিশালগামী লঞ্চ থেকে নদীতে ফেলে দেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন ডিবির ধানমন্ডি জোনাল টিমের এসআই মো. রুহুল আমিন। বর্তমানে মামলাটি আদেশ দানকারী ট্রাইব্যুনালে যুক্তিতর্কের পর্যায়ে রয়েছে।

আসামি পক্ষের অভিযোগ, বাদীপক্ষ ছেলেকে পাওয়ার পরও তা না জানিয়ে আপোষের কথা বলে সাঈদের বাবা আজম ৫ লাখ টাকা নেন। গত ৩০ আগস্ট ছেলেকে নিয়ে আরও ২ লাখ টাকা নেওয়ার জন্য পল্লবী থানাধীন একটি বাসায় আসেন। এ সময় তাদের আটক করে প্রতারণার মামলা করে পুলিশ। ওই মামলায় তারা এখন জেল হাজতে রয়েছেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877