স্বদেশ ডেস্ক:
নড়াইলে একাধিক মাদক মামলার আসামি, ডজনখানেক পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয়দানকারী এবং পুলিশ ফ্রেন্ড হিসেবে আলোচিত ‘মাদক সম্রাট’ উজ্জ্বল রায়ের আস্তানায় অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আল-আমিনের নেতৃত্বে দুই ঘণ্টাব্যাপী এই অভিযান পরিচালিত হয়। সে সময় বিদেশি মুদ্রা ও ১৯ লাখ টাকাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য উদ্ধার করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ সময় উজ্জ্বল রায়কে পাওয়া না গেলেও তার দ্বিতীয় স্ত্রী দীপালি রায়কে আটক করা হয়।
নড়াইলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আল আমিন বলেন, অভিযানকালে ওই আস্তানায় বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখা প্রায় ১৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা, ২০০ গ্রাম গাঁজা খাওয়ার সরঞ্জাম, ১২টি ফেনসিডিলের খালি বোতল, ১৭ প্যাকেট সিগারেটসহ অন্যান্য উপকরণ উদ্ধার করা হয়।
উজ্জ্বল রায়ের বিরুদ্ধে নড়াইল, যশোরসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদকের মামলা রয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, মাদকের কারবার নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে উজ্জ্বল রায় যশোর, খুলনা ও ঢাকা থেকে প্রকাশিত ডজনখানেক অখ্যাত পত্রিকা ও বেশ কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিক বলে দাবি করতেন।
এদিকে উজ্জ্বল রায়ের বাড়িতে অভিযানের খবরে নড়াইলে কর্মরত সাংবাদিকদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তারা অনতিবিলম্বে ‘মাদক সম্রাট’ উজ্জ্বল রায়কে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সাংবাদিকের পরিচয় দিয়ে উজ্জ্বল রায় নড়াইলের পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক গড়ে তোলেন। একাধিক পত্রিকায় তার অধিকাংশ নিউজ ছাপা হতো পুলিশ প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে। এছাড়াও তার অপর সহযোগী মাদক ব্যবসায়ী বুলু দাস নিজেই এসব কাগজ বিভিন্ন দপ্তরে বিনামূল্যে বিলি করতো। সম্প্রতি তিনি পুলিশ ফ্রেন্ড হিসেবে এলাকায় পরিচিতি লাভ করেছেন। যে কারণে তার মাদক ব্যবসা সম্পর্কে পুলিশের কাছে কেউ অভিযোগ করতে সাহস করতো না।
অভিযোগ রয়েছে, মাদক ব্যবসা চালাতেই সাংবাদিকতাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছেন উজ্জল রায়। বিভিন্ন সময়ে এই মাদক সম্রাট নড়াইলের পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন এবং ছবি ফেসবুকে আপলোডও করেছেন। এসব কর্মকাণ্ড নিয়ে সাধারণ মানুষ পুলিশ প্রশাসনের প্রতি বিরুপ ধারণাও পোষণ করেছেন।