বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৫:১২ অপরাহ্ন

হজযাত্রীদের টাকা নিয়ে নয়-ছয় : দুই এজেন্সীর মালিককে হজক্যাম্পে আটক

হজযাত্রীদের টাকা নিয়ে নয়-ছয় : দুই এজেন্সীর মালিককে হজক্যাম্পে আটক

স্বদেশ ডেস্ক: হজযাত্রীদের টাকা নিয়ে নয়-ছয় করার অভিযোগে দু’টি হজ এজেন্সীর মালিককে ঢাকার আশকোনাস্থ হজ অফিস আটকে রাখা হয়েছে। এজেন্সী দুটির মালিক (যদিও ভাড়ায় নিয়েছেন) শামসুদ্দিন আহমেদ তোহাকে গত সোমবার দুপুরে আটক করার পর প্রায় ৩৬ ঘন্টা যাবৎ তাকে আটকে রাখা হয়েছে আশকোনার হজ অফিসের দ্বোতলায় একটি কক্ষে। তোহার পরিচালনায় স্বদেশ ওভারসীস (লাইসেন্স নং ১৫৩১) ও বিদেশ ভ্রমণ (লাইসেন্স নং ৭০১) নামের দুটি এজেন্সী তাদের ৬৬ জনের মতো হজযাত্রী এখনো হজের বাড়ি ভাড়া ও হজ ভিসাও করতে পারেনি। তাই তোহাকে বুধবারের মধ্যে সব টাকা জমা দিয়ে হজযাত্রীদের হজে পাঠানোর সব বন্দোবস্ত করতে বলা হয়েছে। একজন হাজি বাকি থাকতেও তাকে ছাড়া হবে না বলেও হজ অফিস থেকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে তাকে।

এদিকে বুধবারের মধ্যে আরো কয়েকটি এজেন্সী মালিককে তলব করেছে হজ অফিস। এসব এজেন্সীর অনেক হজযাত্রী এখনো হজে যেতে পারেননি। অনেকের ভিসাও করেনি এই এজেন্সীগুলো। সব টাকা পরিশোধ করার পরেও উপরোন্তু মূল হজযাত্রীদের বাদ দিয়ে অন্য নতুন যাত্রীদের প্রতিস্থাপন বা রিপ্লেসমেন্টের পাঁয়তারা করছে কোনো কোনো এজেন্সী।

বুধবার হজ অফিসে তলব করা হয়েছে জাবালে নূর (লাইসেন্স নং ৮৪৭) ও তাওসীফ ট্রাভেলস (লাইসেন্স নং ১৩৯১) এর মালিককে। এই দুটি এজেন্সীর ২০ জন হজযাত্রী এখনো ভিসা হাতে পাননি। এই ২০ জনের মধ্যে রয়েছেন ৫ জন নারী হজযাত্রী। মঙ্গলবার দুপুরে হজক্যাম্পে এসে তারা কান্নাকাটিও করেছেন। এই ২০ জন হজযাত্রীর বাড়ি দিনাজপুর ও পীরগঞ্জে। তারা সবাই গত শুক্রবার থেকে আশকোনায় মোহনা নামের একটি হোটেলে এসে অবস্থান করছেন।

অন্যদিকে হজযাত্রীকে ঢাকায় রেখে হজ গ্রুপ বা দলের নেতাই চলে গেছেন হজ পালন করতে মক্কায়। ‘সালাম আবাদ’ নামের একটি হজ এজেন্সীর দলনেতা হজযাত্রীদের কাছ থেকে হজের সমুদয় টাকা নিয়ে এখন তিনি নিজেই লাপাত্তা।

ভুক্তভোগী হজযাত্রীরা জানান, সালাম আবাদ হজ এজেন্সীর (লাইসেন্স নং ১৪৪৭) মফিজ উদ্দিন নামের ঐ দলনেতা (হজ এজেন্সীর ভাষায় গ্রুপ লিডার) তার গ্রুপের ৭ জন হজযাত্রীকে ঢাকায় নিয়ে আসেন। পরে তাদেরকে হজ ক্যাম্পে ফেলে তিনি নিজেই এখন মক্কায় অবস্থান করছেন। প্রথম দিকে দু’দিন ফোন রিসিভ না করলেও রোববার তার বিরুদ্ধে হজ অফিসে লিখিত অভিযোগ দায়েরের পর এখন তিনি বলছেন ভিন্ন কথা।

মফিজ উদ্দিন নামের ঐ দলনেতা দাবি করেছেন, ৭ জন হজযাত্রীর মধ্যে চার জন হজযাত্রীর টাকা তিনি তার এজেন্সীর (সালাম আবাদ) নির্দেশ মতো বাবুস সালাম নামের আরেকটি হজ এজেন্সীর কাছে জমা দিয়েছেন।

এদিকে ‘বাবুস সালাম’ নামের ঐ এজেন্সীর (লাইসেন্স নং ১৪২১) সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা জানান, আমরা চার জন হজযাত্রীর শুধু বিমান ভাড়ার টাকা পেয়েছি। বাড়ি ভাড়া ও খাওয়ার টাকা পরিশোধ না করা হলে আমরা চার জনের ভিসা করতে পারবো না। আর একথা আমরা আগেই ঐ গ্রুপ লিডার মফিজ উদ্দিনকে জানিয়ে দিয়েছি।

বুধবারের মধ্যে এই দুটি এজেন্সীকেও তাদের বাদবাকি হাজিদের হজে পাঠানোর প্রক্রিয়া কতদূর এগিয়েছে তা হজ অফিসকে জানাতে বলা হয়েছে। এদিকে মঙ্গলবার রাত নয়টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শামসুদ্দিন তোহাকে হজক্যাম্পের দ্বোতলায় একটি কক্ষে আটকে রাখা হয়েছে। তাকে অতি দ্রুত টাকা সংগ্রহ করে তা সৌদী আরবে জমা দিয়ে হজযাত্রীদের বাড়ি ভাড়ার মোফা সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। তোহার এক আত্মীয় নয়া দিগন্তকে জানান, আমরা ইতোমধ্যে ২০ লাখ টাকা সংগ্রহ করতে পেরেছি। মোট টাকা লাগবে ৩০ লাখ। বাকি টাকা সংগ্রহের চেষ্টা করছি।

মঙ্গলবার রাত নয়টায় হজ এজেন্সীজ এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম নয়া দিগন্তকে জানান, আমরা তোহাকে সময় দিয়েছি। টাকা সে সংগ্রহ করছে। আশা করছি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। সব হজযাত্রীই যেতে পারবেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877