স্বদেশ ডেস্ক: সিলেটের কারা উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি প্রিজনস) পার্থ গোপাল বণিকের বাসায় অভিযান চালিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন যে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধার করেছে, সেই টাকা তার স্ত্রী ডা. রতন মনি সাহা পাশের ফ্ল্যাটের ছাদে ফেলে দিয়েছিলেন বলে জানান দুদক পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফ।
গতকাল রোববার দুপুর ২টার দিকে পার্থর ধানমন্ডির নর্থ রোডের (ভূতের গলি) ২৭-২৮১ নম্বর বাসার বি/৬ নম্বর ফ্ল্যাটে অভিযান চালিয়ে এ টাকা উদ্ধার করে দুদক।
এর আগে আজ সকাল ১০টায় কারা বিভাগের ডিআইজি পার্থ গোপাল বণিককে কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদক কর্মকর্তারা। সেই জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে আজ দুপুর ২টার দিকে তার বাসায় অভিযান চালানো হয়।
দুদক পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফ জানান, প্রায় ২ ঘণ্টা পার্থর স্ত্রী ডা. রতন মনি সাহা নানা টালবাহানা করেন। প্রথমে মুঠোফোনে বলেন, তিনি বাসায় নেই। মিরপুরে আছেন। সেখান থেকে ফিরতে ২ ঘণ্টার বেশি সময় লাগবে। অথচ ওই সময় তিনি ফ্ল্যাটেই ছিলেন।
অভিযানে ছিলেন দুদকের এমন এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে জানান, দুদক টিম বিকল্প পন্থায় ফ্ল্যাটে প্রবেশের কথা বললে রতন মনি সাহা নিজেই দরজা খুলে দেন। তবে ততক্ষণে ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে পার্থর আয় করা ৮০ লাখ টাকা দুটি ব্যাগে ভরে পাশের বাসার ছাদে ফেলে দেন তিনি। পরে তাকে নিয়েই ওই টাকা উদ্ধার করা হয়।
পার্থ ও তার পরিবারের সদস্যদের দাবি, ৮০ লাখ টাকার মধ্যে ৩০ লাখ টাকা পার্থর শাশুড়ি তাকে দিয়েছেন। আর বাকি ৫০ লাখ টাকা পার্থর বেতনের একটি অংশ। ওই টাকা ব্যাংকে জমা না রেখে বাসায় রেখেছিলেন তিনি।
দুদক পরিচালক মুহাম্মদ ইউসুফ জানান, ৪ হাজার ৬০০ টাকা বেতনে চাকরি শুরু করেছিলেন পার্থ। বর্তমানে সব মিলিয়ে তিনি পান ৬০ হাজার টাকার মতো। তার বাসা থেকে যে টাকা উদ্ধার হয়েছে তা অবশ্যই ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে আয় করা বলে দাবি করেন দুদক পরিচালক।
দুদক জানায়, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবহেলায় জড়িত থাকার অভিযোগে ডিআইজি (প্রিজন) পার্থ গোপাল বণিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বর্তমানে তার কর্মস্থল সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার।
দুদকের একটি সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের অংশ হিসেবে সিলেটের ডিআইজি প্রিজনস পার্থ গোপাল বণিক ও জ্যেষ্ঠ জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বণিককে আজ সকাল ১০টা থেকে দুদক কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করা হয়। সিলেটে দায়িত্ব পালনের আগে চট্টগ্রাম কারাগারে দায়িত্ব পালন করেন পার্থ গোপাল বণিক। ভূতের গলির ওই বাসা থেকে ৮০ লাখ টাকার পাশাপাশি একটি প্রাইভেটকারও জব্দ করা হয়।