স্বদেশ ডেস্ক:
করোনাভাইরাসের ভয়াবহ সংক্রমণ রোধে চলমান কঠোর বিধিনিষেধচলবে আগামী ৫ আগস্ট পর্যন্ত। চলমান এই বিধিনিষেধ আরও বাড়ানোর সুপারিশ করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার এক আদেশে ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফলে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা করে সারাদেশ থেকে ঢাকার পথে রওনা হয়েছেন গার্মেন্টস শ্রমিকরা। এ অবস্থায় জনমনে প্রশ্ন উঠেছে আগামী ৫ আগস্টের পর তাহলে চলমান বিধিনিষেধ আরও বাড়ছে কি না।
এ ব্যাপারে আজ শনিবার জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘বিধিনিষেধ বাড়বে কি না, তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন ধরনের প্রস্তাব আছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে বাড়াতে বলা হয়েছে। তাই পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিকল্প কী হতে পারে, সেসব নিয়েও সরকারের মধ্যে আলোচনা আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৩ আগস্টের মধ্যে তা জানানোর চেষ্টা করা হবে।’
শিল্পকারখানা খোলার সিদ্ধান্ত ও পোশাক শ্রমিকদের ব্যাপারে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি স্পষ্টই ছিল। কারণ, তৈরি পোশাকশিল্পের মালিকেরা বলেছিলেন, যেসব শ্রমিক ঈদে বাড়ি যাননি বা ঈদের পরপর চলে গেছেন এবং কারখানার আশপাশে থাকেন, তাদের নিয়ে কারখানা চালু রাখা হবে। তারা (গার্মেন্টসমালিকেরা) বলেছেন, পরে যারা আসবেন, তাদের চাকরিতে কোনো সমস্যা হবে না। ৫ আগস্টের পর পর্যায়ক্রমে তাদের আনা হবে। এ ক্ষেত্রে তাদের (শ্রমিক) চাকরি ছাঁটাই হওয়ার কারণ নেই। ছাঁটাইয়ের অভিযোগ পেলে পুনর্বহাল করা হবে। এ ক্ষেত্রে শ্রমিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। এ বিষয়ে তারা সরকারের কাছে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
করোনার ভয়াবহ সংক্রমণ রোধে গত ১ জুলাই থেকে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন জারি করে সরকার। পরে তা ১৪ জুলাই পর্যন্ত তা বাড়ানো হয়। ঈদুল আজহা উপলক্ষে এই লকডাউন শিথিল করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। একই প্রজ্ঞাপনে ২৩ আগস্ট থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আবারও কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়।
এদিকে গতকাল শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এক আদেশে জানায়, ১ আগস্ট থেকে রপ্তানিমুখী সব শিল্প ও কলকারখানা চলমান বিধিনিষেধের আওতাবহির্ভূত করা হয়েছে। এর আগে কোরবানির পশুর চামড়া পরিবহন, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণ, খাদ্য ও খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন বা প্রক্রিয়াজাতকরণ কলকারখানা এবং ওষুধ, অক্সিজেন ও কোভিড-১৯ প্রতিরোধ ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য উৎপাদনকারী শিল্পও এ বিধিনিষেধের আওতার বাইরে রাখার কথা জানিয়েছিল সরকার।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, চলমান বিধিনিষেধে সব সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি অফিস, সড়ক, রেল ও নৌপথে গণপরিবহন, অভ্যন্তরীণ উড়োজাহাজসহ যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। সরকারি কর্মচারীদের দাপ্তরিক কাজগুলো ভার্চ্যুয়ালি সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া শপিং মল, মার্কেটসহ সব দোকানপাট, রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে।
তবে আইনশৃঙ্খলা ও জরুরি পরিষেবা, যেমন কৃষিপণ্য-উপকরণ, খাদ্যশস্য-খাদ্যদ্রব্য পরিবহন বা বিক্রি, ত্রাণ বিতরণ, স্বাস্থ্যসেবা, করোনার টিকাদান, ফায়ার সার্ভিস, টেলিফোন, ইন্টারনেট (সরকারি-বেসরকারি), গণমাধ্যম (প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া), বেসরকারি নিরাপত্তাব্যবস্থা, ডাকসেবা, ব্যাংক, সিটি করপোরেশন, পৌরসভার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাসহ অন্যান্য জরুরি বা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য-সেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অফিসের কর্মচারী ও যানবাহন প্রাতিষ্ঠানিক পরিচয়পত্র প্রদর্শন সাপেক্ষে যাতায়াত করতে পারবে।