স্বদেশ ডেস্ক:
ফুসফুসের পুনর্বাসন কার্যক্রম বলতে কী বুঝায়?
এটা একটা কার্যক্রম, যেখানে ফুসফুসের রোগীরা দলবদ্ধভাবে ফুসফুসের ব্যায়াম শিখে এবং একসঙ্গে সবাই মিলে নিজের ফুসফুসের শক্তি ফিরিয়ে আনার জন্য ব্যায়াম করে। এখানে দলবদ্ধভাবে কাজ করার কারণে এক রোগী অন্যজনের জন্য উৎসাহী হয়।
এ কার্যক্রমে শেখা যায়- কীভাবে অসুখ নিয়ে ব্যায়াম করে সুস্থ থাকা যায়। এ কার্যক্রমের অংশ ৫টি।
১. রোগীকে পরিপূর্ণভাবে মূল্যায়ন করা অর্থাৎ তার ফুসফুসের রোগ ও তার ক্ষমতা বুঝে নেওয়া
২. ফুসফুস ও শারীরিক ব্যায়ামের প্রশিক্ষণ
৩. শিক্ষা কার্যক্রম
৪. খাদ্যাভ্যাস উন্নতিকরণ
৫. সবসময় মানসিক চাপ কমান ও কমাতে সাহায্য করা।
ফুসফুস পুনর্বাসন কার্যক্রম একটা টিমের মাধ্যমে বা দলবদ্ধরূপে করতে হয়। এই দলে ডাক্তার, নার্স, ফিজিওথেরাপিস্ট এবং প্রশিক্ষণ ইত্যাদি থাকতে পারে।
ফুসফুস পুনর্বাসন কার্যক্রম মানুষের শ্বাসকে সহজতর করে, তাদের জীবনের মানকে উন্নত করে, জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন এবং হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন কমায়। এ পুনর্বাসন কার্যক্রমে অংশগ্রহণের পর রোগীরা অনেক সময় তার পূর্ব কাজে ফিরে যেতে পারে, যা ছেড়ে দিয়েছিল এক সময় সিওপিডি বা শ্বাসকষ্টের কারণে।
কীভাবে ফুসফুসের পুনর্বাসন কার্যক্রম রোগীকে সাহায্য করতে পারে?
এই কার্যক্রমে শিক্ষা কার্যক্রম আছে। যেখান থেকে আপনি শিখবেন সহজ ভাষায়-
* ফুসফুস সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য
* কীভাবে ওষুধ কাজ করে
* কখন আপনি ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন
* কীভাবে নিজেকে হাসপাতালে ভর্তি থেকে বাঁচাতে পারবেন।
এই ফুসফুসের পুনর্বাসন কার্যক্রমে আপনার সঙ্গে দেখা হবে অন্য অনেক মানুষ, যাদের সিওপিডি আছে এবং অন্য শ্বাসকষ্ট রোগ আছে। এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে অন্য রোগীর কাছ থেকে নিজেদের কষ্ট লাঘবের বিভিন্ন তথ্য, অভিজ্ঞতা ইত্যাদির সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা পরস্পর জ্ঞানের আদান-প্রদান করতে পারবেন।
এ ব্যায়ামের ক্লাসগুলোয় ফুসফুসের পুনর্বাসন কার্যক্রম যেমন বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম-
* দু’হাতের ব্যায়াম
* দু’পায়ের ব্যায়াম
* ফুসফুসের ব্যায়াম।
বেশিরভাগ মানুষ এই শিক্ষা কার্যক্রম, ট্রেনিং এবং নিয়মিত ব্যায়াম করে নিজের দৈনন্দিন কার্যক্রম সহজতর করতে পারে। ফুসফুসের পুনর্বাসন কার্যক্রম কতদিন সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে হয়?
এই পুনর্বাসন কার্যক্রমে সাধারণত সপ্তাহে দু’দিন এবং ৮ সপ্তাহ ধারাবাহিকভাবে করা উচিত।
প্রতিটা প্রোগ্রামে থাকে-
* ধারাবাহিক শিক্ষামূলক ক্লাস
* ব্যায়াম প্রদর্শনী
* পারস্পরিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা।
এ কার্যক্রমে প্রথমে রোগীর ইতিহাস নিতে হয় এবং রোগীর ব্যায়াম করার ক্ষমতা পরীক্ষা করে দেখে নিতে হয়। এ কারণে সাধারণত আমরা ৬ মিনিট হাঁটার পরীক্ষাটি করে নিই। আপনার হাঁটার শক্তি মেপে ঠিক করতে হবে, কতটুকু ব্যায়াম দিয়ে এ পুনর্বাসন কার্যক্রমে আপনি চলতে শুরু করবেন। ৮ সপ্তাহ পর ব্যায়াম অনুশীলনের পর আবার হাঁটার পরীক্ষা করে দেখতে হবে আপনার উন্নতি কতটুকু। শেষের পরীক্ষার পর বাসায় প্রতিদিন ব্যায়াম কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে।