স্বদেশ ডেস্ক:
সংসদ সদস্য পদ বহাল রাখতে কুয়েতের আদালতে দণ্ডিত কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের পক্ষে করা রিট আবেদন সরাসরি খারিজ করে দিয়েছে হাইকোর্ট। গ্রহণযোগ্যতার প্রশ্নে রিট আবেদনটির কোনো সারবত্তা নেই উল্লেখ করে মঙ্গলবার এ খারিজের আদেশ দেয় বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লার ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ।
ফৌজদারি অপরাধে দণ্ডের কারণে কাজী শহিদ ইসলাম পাপুলের সংসদ সদস্যপদ বাতিলের বৈধতা,লক্ষ্মীপুর-২ নির্বাচনী আসন শূন্য ঘোষণা এবং উপনির্বাচনের তফসিলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিটটি করেছিলেন তার বোন নুরুন্নাহার বেগম এবং পাপুলের মনোনয়নপত্রে প্রস্তাবকারী শাহাদাত হোসেন।
গত মার্চে ওই রিট আবেদনটি করলেও সোমবার এর ওপর শুনানির পর আদেশের জন্য রাখে আদালত।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও মোস্তাফিজুর রহমান খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
মোস্তাফিজুর রহমান খানকে বলেন, আমাদের রিট আবেদনটি ‘সামারালি (সরাসরি) খারিজ করা হয়েছে। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যাওয়ার সুযোগ আছে। তবে এখন পর্যন্ত মক্কেলদের কাছ থেকে এমন কোনো নির্দেশনা পাইনি।’
২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন পাপুল। পরে তার স্ত্রী সেলিনা ইসলামকেও সংরক্ষিত আসনে সংসদ সদস্য করিয়ে আনেন। অর্থ ও মানবপাচার এবং ঘুষ দেওয়ার অভিযোগে গত বছর জুনে কুয়েতে গ্রেপ্তার হন পাপুল। ওই মামলার বিচার শেষে গত ২৮ জানুয়ারি তাকে চার বছরের কারাদণ্ড দেয় কুয়েতের একটি আদালত। সেদিন থেকেই পাপুলের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে আসনটি শূন্য ঘোষণা করে পরে গেজেট জারি করে সংসদ সচিবালয়। ওই আসনে উপনির্বাচনের জন্য ২১ জুন তারিখ ঘোষণা করে তফসিলও দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বাংলাদেশের কোনো আইনপ্রণেতার এভাবে বিদেশে দণ্ডিত হওয়া এবং সাজার কারণে পদ বাতিলের এটাই প্রথম ঘটনা।
পাপুলের পক্ষে রিট আবেদনে যুক্তি দেখানো হয়েছিল, বাংলাদেশের আদালতে দণ্ড না হওয়ায় বাংলাদেশের সংবিধানের বিধি এক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। তবে রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি ছিল, সংবিধানের ৬৬(২)(ঘ) অনুচ্ছদে দেশ বা বিদেশের আদালতের কথা সুনির্দিষ্ট করে বলা নেই। সেখানে ‘নৈতিক স্খলনজনিত’ কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্তের কথা বলা হয়েছে। ফলে সংবিধানের সংশ্লিষ্ট এই অনুচ্ছেদ পাপুলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এছাড়া পাপুলের বিরুদ্ধে অর্থ পাচার আইনে দুদকে মামলার উল্লেখ করে রাষ্ট্রপক্ষ শুনানিতে বলেছিল, কোনো পলাতক বা ফেরারী আসামি আইনি প্রতিকার পেতে পারে না।