স্বদেশ ডেস্ক:
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো আমাদের দেশেও যৌনবাহিত রোগের ব্যাপকতা বেড়েছে। দিন যত যাচ্ছে, মানুষের সচেতনতাও বাড়ছে। তবে অনেকেই যৌনরোগ কোনো রোগই মনে করেন না। ফলে তাদের ক্ষেত্রে রোগমুক্তি কঠিন হয়ে পড়ে। যেমন-
গনোরিয়ার জটিলতা : এ রোগে প্রতিবছর বিশ্বের বিভন্ন দেশে আনুমানিক সাড়ে ৬ কোটি মানুষ আক্রান্ত হয়। পুরুষের ক্ষেত্রে শুক্রনালি বন্ধ এবং উপ-শুক্রাশয় নষ্ট হয়ে যেতে পারে (এপিডিডাইমিস)। এসব ক্ষেত্রে স্ত্রীসঙ্গমে সমস্যা দেখা না দিলেও সন্তানের বাবা হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে। কারণ ঠিকভাবে বীর্য তৈরি হয় না। হলেও ভালো নল দিয়ে তা আসতে পারে না। তাই সন্তানের বাবা হওয়ার ক্ষমতা হারিয়ে যায়।
দীর্ঘস্থায়ী হলে প্রোস্টেট গ্রন্থির প্রদাহ হতে পারে। ফলে মূত্রনালির সমস্যা দেখা দেয়। যেমন- প্রস্রাব করতে অসুবিধা হয়। এমনকি প্রস্রাব বের হতে বাধাগ্রস্ত ও ব্যথা হয়। এতে মূত্রনালি সংকীর্ণ হয়ে আসতে পারে। নারীর ক্ষেত্রে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া না হলে ডিম্বনালির ছিদ্র বন্ধ এবং মা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। মূত্রাশয়ের প্রদাহ হওয়ায় ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে। গর্ভবতী হলে সন্তান জন্মদানের সময় শিশুর চোখ আক্রান্ত হতে পারে। এ ছাড়া নারী-পুরুষ উভয়ের ক্ষেত্রেই হাঁটু বা গোড়ালিতে পুঁজ জমে ফুলে যেতে পারে।
সিফিলিসের জটিলতা : এ ক্ষেত্রে উপযুক্ত চিকিৎসা না হলে জটিল রূপ ধারণ করে। সঠিক চিকিৎসা না হলে সিফিলিস মেয়াদি সিফিলিসে পরিণত হতে পারে, যা দুবছরের পর থেকে শুরু করে সিফিলিসের মধ্য থেকে ৩০ শতাংশ প্রাকৃতিকভাবে ভালো হয়ে যেতে পারে। বাকি ৭০ শতাংশের মধ্য থেকে ৩০ শতাংশ মেয়াদি সুপ্ত জীবনব্যাপী সিফিলিস হতে পারে অর্থাৎ সারাজীবন তিনি এ জীবাণু উপসর্গবিহীন অবস্থায় বয়ে বেড়াবেন। বাকি ৪০ শতাংশের মধ্য থেকে ১২.৫ শতাংশ স্নায়ুতন্ত্রের সিফিলিস ও ১২.৫ শতাংশ হৃদযন্ত্রের সিফিলিসের জটিলতাসহকারে দেখা দেয়। আক্রান্ত মায়ের মাধ্যমে গর্ভস্থ শিশুর দেহে এ রোগের জীবাণু প্রবেশ করতে পারে এবং গর্ভপাতও হতে পারে। মৃত সন্তান প্রসব হতে পারে অথবা সিফিলিসে আক্রান্ত হয়ে শিশু জন্ম নিতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তির হার্ট ও মস্তিষ্কে গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে, যা থেকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে পারেন। কাজেই উপযুক্ত চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা বা গুরুত্ব আশা করি সবাই বুঝতে সমর্থ হবেন।
শেনকরোয়েডের জটিলতা : চিকিৎসা না হলে বা উপযুক্ত চিকিৎসা না হলে এ থেকে অনেক জটিলতা সৃষ্টি হয়। যেমন- আক্রান্ত ব্যক্তির কুঁচকির লসিকাগ্রন্থি আক্রান্ত হতে পারে, যা একপর্যায়ে ফেটে গিয়ে নিঃসরণ নালি তৈরি হতে পারে। ফাইমোসিস বা প্যারাফাইমোসিস দেখা দিতে পারে। ফলে পুরুষাঙ্গের ছিদ্র সরু হয়ে প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যেতে পারে। এ রোগের দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে।
জেনিটাল হারপিসের জটিলতা : এটি একটি ভাইরাসজনিত রোগ। একবার হলে কখনই ভালো হয় না। কিছুদিন পর দেখা দেয় আবার চলে যায় এবং একটি নির্দিষ্ট সময় পর দেখা দেয়। মায়ের এ রোগ থাকলে প্রসবের সময় শিশু আক্রান্ত হতে পারে। গর্ভপাত হতে পারে। মায়ের জরায়ুগ্রীবায় ক্যানসার হতে পারে। এসব বিষয় নিয়ে অবহেলা না করে একজন বিশেষজ্ঞ চর্মরোগ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন।