স্বদেশ ডেস্ক: হংকংয়ে আইনসভার ভেতরে গিয়ে বিক্ষোভকারীদের ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা জানিয়ে চীন বলেছে, এ ধরনের কর্মকা- কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না। চীনা কর্তৃপক্ষ এ গুরুতর অপরাধের দায় বিক্ষোভকারীদের নিতে হবে বলে হুশিয়ারি জানায়।
গত সোমবার যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে হস্তান্তর দিবসের কর্মসূচিতে বিক্ষোভকারীরা হংকংয়ের আইনসভার ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়। এ ঘটনায় চীনা কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্রকেও দোষারোপ করছে। খবর বিবিসি।
চীনা কর্তৃপক্ষ জানায়, আইনসভা হলো আনুগত্য ও আইনের মন্দির। সেখানে এ ধরনের কর্মকা- মারাত্মক অবৈধ। এ ছাড়া গতকাল এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকার সমালোচনা করে চীনা কর্তৃপক্ষ। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গেং শুয়াং নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে বলেন, আমরা ট্রাম্পের বক্তব্য প্রত্যাখ্যান এবং হংকং ও চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত হস্তক্ষেপের কঠোর বিরোধিতা করছি। তিনি বলেন, হংকংয়ে সহিংসতা ও আইন ভাঙায় জড়িতদের সমর্থন দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের কোনোভাবেই উচিত হবে না।
প্রসঙ্গত হংকং হলো সাবেক ব্রিটিশ কলোনি। ১৯৮৭ সালে ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ সুনির্দিষ্ট কিছু শর্তে হংকংকে চীনের কাছে হস্তান্তর করে। শর্তগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল স্বায়ত্তশাসন। হংকংয়ের কারণে চীন এক দেশ দুই নীতি অবলম্বন করে থাকে। অর্থাৎ চীনের মূল ভূখ-ের চেয়ে হংকংয়ের বাসিন্দারা বেশি স্বাধীনতা পেয়ে থাকে। সম্প্রতি একটি বিতর্কিত আইন পাসের উদ্যোগ নেয় হংকং পার্লামেন্ট।
সে বিলে বলা হয়, আসামিকে বিচারের জন্য চীনে প্রেরণ করতে হবে। পার্লামেন্টে চীনাপন্থিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকলেও বিলটির প্রতিবাদে লাখ লাখ লোক রাস্তায় নামে। ১৯৮৭ সালের পর এই প্রথম সেখানকার জনগণ এত প্রবল প্রতিরোধ গড়ে তুলল। জনগণের বিক্ষোভের মুখে হংকং কর্তৃপক্ষ বিলটি পাস থেকে পিছু হটে। কিন্তু আন্দোলনকারীরা এর পর প্রধান নির্বাহী ক্যারি লামের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করে। আর সোমবারের বিক্ষোভটি আসলে আগের আন্দোলনেরই ধারাবাহিকতা। গত সোমবার ছিল হস্তান্তরের বার্ষিকীর দিন।
প্রথমত আন্দোলকনারীরা শান্তিপূর্ণ থাকলেও পরবর্তীতে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে চাইলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের লাঠিচার্জ ও মরিচের গুঁড়া ছোড়ে। এর এক পর্যায়ের প্রায় মধ্যরাতে বিক্ষোভকারীরা হংকংয়ের আইনসভার ভেতরে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালায়। এতে চূড়ান্ত মাত্রায় ক্ষুব্ধ হয় চীনা কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া ক্যারি লাম গতকাল বিক্ষোভকারীদের নিন্দা করেন। তার পরও অল্প আবেগ নিয়ে বলেন, তিনি আশা করছেন পরিস্থিতি যত দ্রুত সম্ভব স্বাভাবিক হয়ে আসবে।