রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৭:৫২ অপরাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
ভারতে গিয়ে নিখোঁজ আওয়ামী লীগের এমপি মিয়ানমারে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ২টি গ্রামে আরাকান আর্মির হামলা ‘কিরগিজস্তানকে আমাদের গভীর উদ্বেগ জানিয়েছি, কোনো বাংলাদেশী শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়নি’ কালশীতে পুলিশ বক্সে আগুন অটোরিকশা চালকদের স্বেচ্ছাসেবক লীগের র‌্যালি থেকে ফেরার পথে ছুরিকাঘাতে কিশোর নিহত দক্ষিণ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় চরম তাপপ্রবাহ আসন্ন বিপদের ইঙ্গিত দ্বিতীয় ধাপে কোটিপতি প্রার্থী বেড়েছে ৩ গুণ, ঋণগ্রস্ত এক-চতুর্থাংশ: টিআইবি সাড়ে ৪ কোটি টাকার স্বর্ণসহ গ্রেপ্তার শহীদ ২ দিনের রিমান্ডে ‘গ্লোবাল ডিসরাপ্টর্স’ তালিকায় দীপিকা, স্ত্রীর সাফল্যে উচ্ছ্বসিত রণবীর খরচ বাঁচাতে গিয়ে দেশের ক্ষতি করবেন না: প্রধানমন্ত্রী
নগরপিতা নির্বাচন আজ

নগরপিতা নির্বাচন আজ

স্বদেশ ডেস্ক:

প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণে আজ ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের নগরপিতা ও কাউন্সিলর নির্বাচনে ভোটগ্রহণ। আর ভোটার ও প্রার্থীদের মধ্যে অনেক উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, শঙ্কা ও অস্বস্তি এই ভোট নিয়ে। আপত্তি সত্ত্বেও নির্বাচন কমিশন (ইসি) ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্তে অটল থাকায় এই শঙ্কার সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিশ্লেষকরা বলছেন, সিটি নির্বাচন নিয়ে অনেক আশঙ্কা, উদ্বেগ ও শঙ্কার পাশাপাশি অস্বস্তিও রয়েছে। ইভিএম নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। জালিয়াতির আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না। তবুও বিতর্কিত নির্বাচনের সংস্কৃতি থেকে দেশকে উদ্ধার করতে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের ভোট পছন্দের প্রার্থীকে দিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। ভোটার উপস্থিতি না হলে নির্বাচনী কর্মকর্তার ভোট দেয়ার যে ক্ষমতা আছে সেটাকে অপব্যবহার করার সুযোগ সৃষ্টি হবে।

ঢাকার দুই সিটি নির্বাচনের জন্য ২৮ হাজার ৮৭৮টি ইভিএম সেট প্রস্তুত করে কেন্দ্রগুলোতে পাঠানো হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিভিন্ন ভোটকেন্দ্রে ইভিএমসহ ভোটের সরঞ্জামাদি পাঠানো শুরু হয়। এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদা। ভোটগ্রহণের জন্য ইএভিএম, এলইডি মনিটর, ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেশিন, স্ক্যানার, বুথের জন্য ত্রিপল, তাঁবু, বোর্ড শিটসহ প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আলাদা আলাদা গাড়িতে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বিভিন্ন কেন্দ্রে পাঠানো হয়। নির্বাচনে মেয়র পদে ১৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আর কাউন্সিলর পদে সংরক্ষিত আসনসহ মোট প্রতিদ্বন্দ্বী সিটির দুই অংশে ৭৪৫ জন। যার মধ্যে সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ৫৮৬ এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে ১৫৯ জন।

এ দিকে জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অণুবিভাগের (এনআইডি) মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুল ইসলাম গতকাল এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেছেন, অনেক সময় ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে কনফিউশন থাকে। প্রিজাইডিং অফিসার অথবা অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রিজাইডিং অফিসার ভোটারের আঙ্গুলের ছাপ নিয়ে সমস্যা চিহ্নিত করার পরও ভোট দিতে পারবে না, তিনি শুধু সমস্যা চিহ্নিত করার পর ব্যালট ওপেন করে দিতে পারবেন। কারণ তার দায়িত্ব কেন্দ্রের নির্বাচন পরিচালনা করা। তবে যাদের সমস্যা তাদের জন্য বলেছি তারা ১ শতাংশ ভোটারের সহযোগিতা করার জন্য ব্যালট ওপেন করে ভোটারকে ভোটের অনুমতি দিতে পারবেন।

সাইদুল ইসলাম বলেন, যদি কেউ অবৈধভাবে কারো ভোট দিতে চায় সে ক্ষেত্রে আমাদের সতর্কতা থাকবে। কারণ যাদের ভোটের জন্য অফিসার ব্যালট ওপেন করে ভোটের অনুমতি দেবেন তাদের ফিঙ্গার প্রিন্ট ক্যাপচার করে রাখা হবে। পরে আমরা এটা চেক করব, ভার্চুয়াল চেকিংয়ের পর মূল সার্ভারের সাথে পরীক্ষা করে দেখব। কেউ অবৈধভাবে ভোট দিয়েছেন প্রমাণ পেলে আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তি দেয়া হবে। বৈধ ভোটারকে ভোট প্রদানে সহযোগিতা করার জন্য কমিশন বদ্ধপরিকর। আমরা প্রমাণ করতে চাই। আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন করতে সক্ষম।

ভোটার চিহ্নিত করার প্রক্রিয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, একজন ব্যক্তি চিহ্নিত করার জন্য তার এনআইডি নম্বর দিলে তাকে চিহ্নিত করতে পারব। স্মার্ট কার্ড নিয়ে এলেও ভোটারকে শনাক্ত করতে পারব। পোলিংদের সামনে শনাক্তের প্রক্রিয়া দৃশ্যমান হবে। তবে কোনো ভোটারের কাছে যদি কিছুই না থাকে সে ক্ষেত্রে ভোটার তালিকা দেখে নম্বর দিলে কন্ট্রোল ইউনিটে তথ্য বের হবে। এ ছাড়াও প্রয়োজন অনুযায়ী নিয়ম অনুসরণ করে ১ শতাংশ ভোটারের ব্যালট ওপেন করতে পারবেন প্রিজাইডিং অথবা সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার। এর বেশি লাগলে রিটার্নিং কর্মকর্তা দেখবেন। প্রয়োজনে এরপর ইসির মাধ্যমে সমাধান করতে পারবে।

সুজন সম্পাদক ও স্থানীয় সরকার বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সিটি নির্বাচন নিয়ে অনেক আশঙ্কা, উদ্বেগ ও শঙ্কার পাশাপাশি অস্বস্তিও রয়েছে। ইভিএম নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে। জালিয়াতির আশঙ্কাকে উড়িয়ে দেয়া যায় না। তবুও বিতর্কিত নির্বাচনের সংস্কৃতি থেকে দেশকে উদ্ধার করতে ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে গিয়ে নিজের ভোট পছন্দের প্রার্থীকে দিয়ে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তিনি বলেন, ইভিএমের দুর্বলতা নিয়ে স¦য়ং আমাদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা নিজেই সংশয় প্রকাশ করেছেন। এ ছাড়া ইভিএম হলো ফোনের মতোই একটা যন্ত্র। এই যন্ত্রকে যেই নির্দেশ ও কমান্ড দেবো সে মোতাবেকই সে কাজ করবে। এই ইভিএমের কমান্ডে থাকবে আমাদের নির্বাচন কমিশন। কিন্তু নির্বাচন কমিশনের বিশ্বাসযোগ্যতা এখন শূন্যের কোটায়। তা সত্ত্বেও এই নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ।

ড. মজুমদার বলেন, আমরা দেখছি নির্বাচন কমিশন নির্বিকার ও নিষ্ক্রিয় আচরণ। অনেক প্রার্থীর আচরণবিধি লঙ্ঘন নিয়ে অনেক অভিযোগ ছিল। কিন্তু ইসি নির্বিকার। আপনারা ভোটকেন্দ্রে উপস্থিত হোন। ভোট প্রদান করুন। তাহলে বিতর্কিত সংস্কৃতিকে উত্তরণ ঘটাতে পারব।

নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা ফেমার চেয়ারপারসন মুনিরা খান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনী ব্যবস্থাপনা জানতে হয়। যে ভালো ব্যবস্থাপনা করতে পারবে ভোট ব্যাংকের ভোটারদের আনতে পারবে তারাই ভালো ফল পাবে। তিনি বলেন, আপাত দৃষ্টিতে আমার মনে হয় নির্বাচন কমিশনের একটা স্বদিচ্ছা আছে ভালো নির্বাচন করার। দেখার বিষয় হলো ইভিএম নামের মেশিনটি কী আচরণ করে। ওটা বলা মুশকিল। তিনি বলেন, আমাদের দেশে সব প্রার্থীই জিততে চান। তারা যেকোনো উপায়ে হোক জয় নিতে চান। ফলে এতে সীমা লঙ্ঘনের প্রতিযোগিতা চলে। ইসির উচিত হবে কেউ যেন কোনোভাবেই সীমা লঙ্ঘন করতে না পারে। সে বিষয়টি কঠোরভাবে দেখা। এবারের নির্বাচন ইসির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। তবে এখানে ফিফটি ফিফটি অবস্থা মনে করছি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877