স্বদেশ ডেস্ক:
আবহাওয়া উপেক্ষা করে বুধবার সকালে ১৮ নং ওয়ার্ড বারিধারা ডিওএইচএসের দক্ষিণ গেইট থেকে নির্বাচনী গণসংযোগ শুরু করেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়াল। প্রচারে নেমেই ভোটাররা যাতে কেন্দ্রে গিয়ে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন নির্বাচন কমিশনকে সেই পরিবেশ নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।
সকালে ১৮ নং ওয়ার্ডে নদ্দায় প্রথম পথসভায় হয়। সেখানে তাবিথ আউয়াল বলেন, যেভাবে ভোটারদের মধ্যে সাড়া পাচ্ছি তাতে ধানের শীষের বিজয় ঠেকানো যাবে না। বিজয়ী হওয়ার জন্য সব ধরনের শান্তিপূর্ণ প্রস্তুতি আমরা নিয়েছি। আমরা ভোট কেন্দ্রে যাব, আমাদের পোলিং এজেন্টরা যাবেন, প্রার্থীরা যাবেন। সুষ্ঠু ও নির্বিঘ্নে যাতে ভোটাররা ভোট দিতে যেতে পারেন, সেই পরিবেশ নির্বাচন কমিশনকে নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন ভালোভাবেই জানেন, অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ করতে গেলে কী কী পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হয়। তাই সব পরিস্থিতিতে যেন ভোটাররা নির্ভয়ে ভোট দিতে পারে তা কমিশনকেই নিশ্চিত করতে হবে।
একইসঙ্গে তাবিথ আউয়াল ভোটারদেরও প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আমি ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি, তাদের ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। ভোটাররা বৃষ্টি ও শীত উপেক্ষা করে আমার কথা শুনছেন, আমাকে আশ^স্ত করছেন। সকল অবস্থায় আপনারা প্রস্তুত থাকবেন। নির্ভয়ে ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেবেন। ভয়ের কিছু নেই। আপনারা ধানের শীষে ভোট দেবেন, আপনাদের অধিকার চর্চা করবেন। নাগরিক দায়িত্ব পালন করবেন।
সেখান থেকে বারিধারা ডিওএইচএস দক্ষিণ গেইট (ইউনাইটেড হাসপাতালের পাশে) গণসংযোগ করেন তাবিথ আউয়াল। এসময় ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী শরিফ উদ্দীন জুয়েলসহ (ব্যাডমিন্টন মার্কা) নেতাকর্মীরা সঙ্গে ছিলেন।
দুপুর ১২টার দিকে শাহাজাদপুর বাসস্ট্যান্ডে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তাবিথ বলেন, হামলা মামলার পরও আমরা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আছি। আপনারা সরকারকে প্রশ্ন করেন। হামলা মামলা করে সরকার আমাদেরকে নির্বাচন থেকে সরিয়ে দিতে চাইছে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তাবিথ বলেন, যেভাবে ধানের শীষের পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, যদি কোন অপচেষ্টাও হয় জনগণই তার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে।
গণসংযোগে ১৮ নং ওয়ার্ডে বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মশিউর রহমান, হাবীবুর রহমান হাবীব, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক, জলবায়ু বিষয়ক সহসম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, নির্বাহী কমিটির সদস্য নিপুণ রায় চৌধুরী, বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এলডিপির শাহাদাৎ হোসেন সেলিম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, মহিলা দলের সুলতানা আহম্মেদ, যুবদল উত্তরের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রাজিব আহসান, ঐক্যফ্রন্টের দফতর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু, ছাত্রদল নেতা আব্দুল্লাহ আল জোবায়ের বাবু, মো. এনামুল হাসান, সংরক্ষিত ওয়ার্ডে রাবেয়া আলম (চশমা মার্কা), আয়েশা আক্তার মিলি (বই মার্কা)। এছাড়াও স্থানীয় বিএনপি ও তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী প্রচারণায় অংশ নেন।
এরপর নূরের চালা, খিলবাড়ির টেক, নয়ানগর, কাঠালদিয়া, মহাখালী কাঁচাবাজার ও মগবাজার নয়াটোলা পথসভায় বক্তব্য রাখেন তিনি। সেখান থেকে গুলশান-১ ডিএনসিসি মার্কেট ও শাহ সাহেলব বাড়ির মাজার এলকায় গণসংযোগ ও পথসভা করেন। এ সময় হাজার হাজার নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন। পথচারীরা, দোকানি, কর্মজীবী ও শ্রমজীবী মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে ধানের শীষের পক্ষে ভোট চান তিনি।
মগবাজার নয়াটোলায় প্রচারণায় নেতা-কর্মী ও স্থানীয় জনগণের উদ্দেশ্যে তাবিথ আউয়াল বলেন, আমরা চাই, মা-বোনেরা বাড়িতে ফিরুক? সকল কী সকল নাগরিক সুবিধা চাই? তাহলে অবশ্যই ভোট কেন্দ্রে যেতে হবে। সরকারকে দেখিয়ে দিতে হবে, আসল ক্ষমতা জনগণের। জনগণ ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনবে।
এর আগে সেখানে গণসংযোগে অংশ নেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। তিনি বলেন, যে ব্যক্তি আপনাদের সামনে ভোটের জন্য এসেছে, তিনি তাবিথ আউয়াল। যুক্তরাজ্য থেকে উচ্চ শিক্ষিত একজন মানুষ। তিনি আপনাদের সামনে কেন এসেছেন? দুটি কারণে। একটি হলো- এই ভোটের মাধ্যমে আবারো বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে। দ্বিতীয়ত- এই ভোটের মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারামুক্ত করতে পারবো।
মগবাজার নয়াটোলা শিশু পার্কো পথ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা বরকত উল্লাহ বুলু , বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, যুবদল উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, ৩৫ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ আমির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
হামলা: উত্তরার ১ ওয়ার্ডের ৬ নং সেক্টরে প্রচার মাইক ভেঙে এক কর্মীকে মারধর করেছেন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীরা। নিকুঞ্জ বিএনপির অফিসে ভাংচুর করে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা।