বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো তুরস্কও রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়েছে। যে কোনো একটিকে পছন্দ করতে হবে আঙ্কারাকে। ইস্যুটি দেখা দিয়েছে-রাশিয়ার কাছ থেকে যুদ্ধবিমান ক্রয় করবে নাকি যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান ক্রয় করবে। এমন প্রেক্ষাপটে তুরস্ককে জুলাই মাস পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছে ওয়াশিংটন। এর মধ্যেই আঙ্কারাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। খবর বিবিসি।
তর্কটি শুরু হয়েছে মূলত রাশিয়ার তৈরি এস ৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র বনাম যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এফ-৩৫ আধুনিক জেট ফাইটারের মধ্যে। এ নিয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী প্যাট্রিক শানাহান তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকারকে চিঠির মাধ্যমে আলটিমেটাম দিয়েছে। ওই চিঠিতে তিনি স্পষ্ট করে বলেছেনÑ তুরস্ক একই সঙ্গে দুটি অর্থাৎ আমেরিকার এফ-৩৫ অত্যাধুনিক জেট ফাইটার এবং রাশিয়ার এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র সিস্টেম পেতে পারে না। এ নিয়ে কয়েক মাস থেকে তুরস্কের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের টানাপড়েন চলছে।
ওয়াশিংটনের যুক্তি হলোÑ রাশিয়ার প্রযুক্তি ন্যাটোর প্রতিরক্ষা পদ্ধতির জন্য হুমকি, বরং যুক্তরাষ্ট্র খুশি হবে যদি তাদের প্যাট্রিয়ট অ্যান্টি-এয়ারক্রাফট সিস্টেম ক্রয় করে তুরস্ক। তুরস্ক যদিও ইতোমধ্যে একশ এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান কিনতে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে এবং এফ-৩৫ কর্মসূচিতে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছে। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বোমারু বিমানগুলোর যন্ত্রাংশ তৈরি করবে তুর্কি কোম্পানিই।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ওই চিঠিতে জানান, রাশিয়ার এস-৪০০ প্রযুক্তির ওপর প্রশিক্ষণ নিতে তুর্কি লোকবল রাশিয়ায় গেছেÑ এ খবরে যুক্তরাষ্ট্র ‘অসন্তুষ্ট’। এ ছাড়া তিনি এটাও জানান যে, তুরস্ক এস-৪০০ গ্রহণ করলে তারা এফ-৩৫ পাবে না। তাদের এখনো সময় আছে এস-৪০০ এর বিষয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার। এদিকে প্রথম চারটি এফ-৩৫ ইতোমধ্যে তুরস্ককে হস্তান্তর করার কথা থাকলেও সেগুলো এখনো তুরস্কের হাতে দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র।
এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেন, এস-৪০০ চুক্তি এগিয়ে নিতে তাদের মনোভাব দৃঢ়। অন্যদিকে রাশিয়ার কর্মকর্তারা বলছেন, দুমাসের মধ্যে এস-৪০০ তুরস্ককে দেওয়া শুয় করবে রাশিয়া। এস-৪০০ মিসাইল প্রযুক্তি কী? এস-৪০০ প্রযুক্তি ‘ট্রিউমফ’ হলো বর্তমান বিশ্বে ভূমি থেকে আকাশে মিসাইল নিক্ষেপের সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তি। এটার আওতা হচ্ছে ৪০০ কিলোমিটার এলাকা। একটি এস-৪০০ প্রযুক্তি দিয়ে একটানা ৮০টি লক্ষ্যে আঘাত করা যায়।