বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
চলছে দাবদাহ, এই গরমে কী খাবেন আর কী খাবেন না? ফিলিস্তিনের পক্ষে থাকার ঘোষণা এরদোয়ানের সশস্ত্র সংগঠনের সদস্যরা আত্মসমর্পণ করতে চাইলে সহযোগিতা করা হবে: র‌্যাব ডিজি ‘অভিভাবকদের উচিত মেয়েরা কোথায় যায়, সেদিকে খেয়াল রাখা’ গুলশানে বারের সামনে মারামারি, ৩ নারী গ্রেপ্তার ইরান-ইসরায়েল ‘যুদ্ধের’ প্রভাব মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর ঝালকাঠিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষে নারী ও শিশুসহ নিহত ১২ এমভি আবদুল্লাহর ২ নাবিক দেশে ফিরবেন বিমানে, বাকিরা জাহাজে শাকিব খানের ‘মা’ হতে যা করতে হয়েছে মাহিকে সুনামগঞ্জ জেলা পরিষদের উদ্যোগে কৃতি শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান

অনড় জনসন, ফাঁসতে পারেন আদালতে

স্বদেশ ডেস্ক:

শনিবার যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্ট অধিবেশন বসার রেওয়াজ নেই। সর্বশেষ, ফকল্যান্ড দ্বীপ ইস্যুতে বসেছিল ১৯৮২ সালের ৩ এপ্রিল। ৩৭ বছরেরও বেশি সময় পর ফের শনিবার অর্থাৎ গতকাল বসেছিল পার্লামেন্ট অধিবেশন। যে ইস্যুতে অল্প দিনের ব্যবধানে দুজন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ও তেরেসা মে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রিত্বের ঝা-া গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন, সেই ব্রেক্সিট ইস্যুতে। বোধ করি এই একই ইস্যুতে ঝা-া গুটানো প্রধানমন্ত্রীর তালিকায় তিন নম্বর নামটি হতে পারে বরিস জনসন। কারণ গতকালের অধিবেশনে যে ভোটাভুটি হয়েছে, তাতে লেটউইন সংশোধনীর পক্ষে পড়েছে ৩২২ ভোট আর বিপক্ষে ৩০৬। তার মানে, ব্রেক্সিট চুক্তির ওপর ভোটাভুটির প্রস্তাবটি পার্লামেন্টে ফের নাকচ হয়ে গেছে। পার্লামেন্টে পাস হওয়া প্রস্তাব অনুযায়ী, ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেনের প্রস্থানের জন্য যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে; সেটি পিছিয়ে দিতে ইইউর কাছে চিঠি লিখতে হবে বরিস জনসনকে।

এদিকে পার্লামেন্টে আবার হেরে যাওয়ার পরও প্রধানমন্ত্রী সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি ইইউর সঙ্গে বিলম্বের বিষয়ে আলোচনা করবেন না। বরং সরকারের পরিকল্পিত ব্রেক্সিট চুক্তির বিষয়ে ভোটাভুটির জন্য আগামী মঙ্গলবার আবারও পার্লামেন্টে প্রস্তাব তুলে ধরবেন বরিস।
ডেভিড ক্যামেরনের উত্তরসূরি তেরেসা মে চলতি বছরের মে মাসে পদত্যাগ করেন ব্রেক্সিট ইস্যুতে সমঝোতায় পৌঁছতে ব্যর্থ হয়ে। এর পর প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন ব্রেক্সিটপন্থি কনজারভেটিভ নেতা বরিস জনসন। নির্বাচিত হওয়ার পরই তিনি ঘোষণা দেন, আগামী ৩১ অক্টোবর নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বেক্সিট বাস্তবায়ন করা হবে। প্রয়োজনে চুক্তিবিহীন ব্রেক্সিটেরও আভাস দিয়েছিলেন তিনি। এর পর নানা নাটকীয়তা পেরিয়ে গত ১৭ অক্টোবর চুক্তির ব্যাপারে ইইউর সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছায় জনসন নেতৃত্বাধীন সরকার।

বিবিসি বলছে, এর মানে ইইউ থেকে বিচ্ছেদের নির্দিষ্ট চুক্তি সংসদে আগে আইন আকারে পাস না হলে ব্রেক্সিট বাস্তবায়ন হবে না। এবং এর মানে নির্ধারিত ৩১ অক্টোবরের মধ্যে অন্তত ব্রেক্সিট হচ্ছে না।
অথচ ‘প্রয়োজনে বিনাচুক্তি’তে ওই দিনই বিচ্ছেদ কার্যকর করার হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন জনসন। এমনকি গতকাল হাড্ডাহাড্ডি ভোট-লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার পরও জনসনের দল জানিয়েছে, ইইউকে ব্রেক্সিট পেছানোর জন্য বলবেন না প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তা হলে, তাকে আদালত অবমাননার দায় নিতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন এক বিরোধী নেতা।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নিজ কথায় অনড় থাকতে গেলে পদত্যাগেও বাধ্য হতে পারেন ‘ব্রিটিশ ট্রাম্প’ নামে পরিচিত বরিস জনসন।
২০১৬ সালের জুনে এক গণভোটে ৫১.৯ শতাংশ ব্রিটিশ ইইউ থেকে বিচ্ছেদ নেওয়ার রায় দেয়। এর পরই ব্রেক্সিটবিরোধী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন পদত্যাগ করেন। পরে দায়িত্ব নেন তেরেসা মে। তিন বছর ধরে তিনি চেষ্টা করেছেন; কিন্তু এমপিদের বাধায় ব্রেক্সিট বাস্তবায়নে বারবার ব্যর্থ হয়ে মেও পদত্যাগে বাধ্য হন। এর পর কনজারভেটির পার্টির প্রধান এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন বরিস জনসন।
কাক্সিক্ষত বিচ্ছেদ ঘটানোর জন্য প্রথমে নির্ধারিত দিন ছিল এ বছর ২৯ মার্চ। মের সরকার সেই সময় এটি বাড়িয়ে নিতে পেরেছিল। এখন স্বয়ংক্রিয়ভাবে ব্রেক্সিট বাস্তবায়নের নির্ধারিত দিন হচ্ছে ৩১ অক্টোবর।

বিবিসি বলছে, এখন জনসনকে বাধ্য হয়েই ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অনুরোধ করতে হবে যেন ব্রেক্সিট কার্যকর করার সময়সীমা বাড়ানো হয়। কিন্তু খসড়া চুক্তিকে ঘষেমেজে নতুন রূপ দিয়ে আইন আকারে আগামী সপ্তাহে আবার সংসদে ভোটাভুটির মুখে উত্থান করবেন বলে জানিয়েছে ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দল। টুইটারে দলটি লিখেছে, প্রধানমন্ত্রী ইইউকে সময় বাড়ানোর জন্য অনুরোধ করবেন না। বরং তিনি বলবেন, ‘৩১ অক্টোবরেই ব্রেক্সিট হওয়া চাই; এ জন্য আমরা নতুন চুক্তি নিয়ে আসছি।’

কিন্তু ব্রেক্সিট পার্টির নেতা নিগেল ফারাজ বলছেন, জনসনের চুক্তি আর মের চুক্তি প্রায় একই কথা, ‘৯৫ শতাংশই মিল’ আছে দুজনার চুক্তিতে। ফলে এ ধরনের চুক্তি আসলে সংসদে পাস হবে না, সেই সম্ভাবনাই বেশি।

এদিকে লিবারেল ডেমোক্র্যাটিক এমপি চুকা উমানা বলেছেন, ভোটে এমপিরা যে রায় দিয়েছেন, মানে ব্রেক্সিট পেছাতে হবে, সেই বার্তাসহ চিঠি যদি জনসন ইইউকে না জানান, তা হলে স্পটত তিনি আদালত অবমাননার দায়ে পড়বেন। কারণ একটি আইনে এমন দায়িত্ব পালন করা তার জন্য আবশ্যক। গত মাসে ওই ‘বেন আইন’ পাস হয় যার অধীনে প্রধানমন্ত্রী অবশ্যই এমপিদের সমর্থন ছাড়া কোনোভাবেই ব্রেক্সিট কার্যকর করতে পারবেন না।
গতকাল জন্মদিন ছিল টরি এমপি পিটার বোনের। ব্রেক্সিটপন্থি এই নেতা বলেন, ‘আমি তো হতাশ। বৃথা সময় নষ্ট হলো। কাজের কাজ কিছুই হলো না। আমার জন্মদিনটাই উল্টো মাটি হলো।’

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877