ভিসার ক্ষেত্রে নতুন নিয়ম তৈরি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন আইন অনুযায়ী এখন থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য আবেদনকারীদের ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপের বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে হবে। তবে এতে মার্কিন ভিসা পাওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
মার্কিন ভিসার নতুন এই নিয়ম নিয়ে বিশ্বজুড়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। অনেকেই নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্টের তথ্য জানাতে চান না। কারণ, হ্যাক হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। পাশাপাশি গোপনীয়তা বজায় থাকবে না মনে করে। সেখানে এই নতুন নিয়ম বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নতুন নিয়মে বলা হয়েছে, আবেদনকারীকে তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যবহৃত নাম এবং পাঁচ বছর ধরে ব্যবহার করছেন—এমন ই–মেইল ও ফোন নম্বর মার্কিন ভিসা আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের তথ্য জমা দেওয়ার পর মিলবে মার্কিন ভিসা। গত বছর যখন নতুন এই নিয়মের প্রস্তাব করা হয়েছিল, তখন মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছিল, এটা ১ কোটি ৪৭ লাখ মানুষকে প্রভাবিত করবে।
কূটনীতিক ও সরকারি কর্মকর্তাদের ভিসার ক্ষেত্রে সব সময় এই কঠোর ব্যবস্থা নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ কিংবা পড়াশোনার জন্য যাঁরা যেতে আগ্রহী, তাঁদের তথ্য জমা দিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম সম্পর্কে কেউ মিথ্যা তথ্য দিলে তাঁকে অভিবাসনসংক্রান্ত বিষয়ে কঠোর পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে সতর্ক করে দিয়েছে পররাষ্ট্র দপ্তর। তবে কেউ যদি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার না করেন, তাহলে সেটি উল্লেখ করার সুযোগ থাকবে ভিসা আবেদন ফরমে।
মার্কিন প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বিশ্বজুড়ে দেখা গেছে যে সন্ত্রাসীদের কর্মকাণ্ডের জন্য একটি ক্ষেত্র হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। এর মাধ্যমে সন্ত্রাসীদের বাছাই করা সম্ভব হবে বলে কর্মকর্তারা মনে করেন। ২০১৮ সালের মার্চ মাসে ট্রাম্প প্রশাসন নতুন এ নিয়মের প্রস্তাব করে। সে সময় মার্কিন একটি মানবাধিকার সংস্থা আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস ইউনিয়ন বলেছিল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নজরদারি করে কোনো কার্যকর কিছু হয়েছে, এমন প্রমাণ নেই।
সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন বলেছে, এর ফলে মানুষ অনলাইনে তাদের মতপ্রকাশের বিষয়টি নিজে থেকেই সীমিত করে ফেলবে।