স্বদেশ ডেস্ক:
নির্বাচন ঘিরে জাতিসংঘ সচিবালয়, এর বিভিন্ন সংস্থা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দপ্তরের গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা চেয়ে সংস্থার মহাসচিবের দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, নির্বাচন সামনে রেখে বাংলাদেশ বিশ্বের নানা প্রান্তের ‘অযথা, অযৌক্তিক, স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক চাপের’ মুখোমুখি হচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী গত মাসে নিউইয়র্কে জাতিসংঘ মহাসচিবের নির্বাহী দপ্তরের শেফ দ্য কেবিনেট আর্ল কুর্টনি রেটরের কাছে এই চিঠি পাঠান। নিউইয়র্কের একটি কূটনৈতিক সূত্র আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে জানিয়েছে, গত ২০ নভেম্বর জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের মাধ্যমে আর্ল কুর্টনি রেটরের কাছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর লেখা চিঠিটি পৌঁছে দেওয়া হয়।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে জাতিসংঘের মহাসচিবের দপ্তরে এমন সময়ে এই চিঠি পাঠানো হলো, যখন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে আসছে পশ্চিমের অনেক দেশ ও জোট। জাতিসংঘের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে প্রশ্নোত্তরের সময়ও একই আহ্বান জানানো হচ্ছে।
জানা গেছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পাঠানো ওই চিঠির বড় একটি অংশজুড়ে রয়েছে জাতিসংঘে বাংলাদেশের ভূমিকা এবং ভবিষ্যতে জাতিসংঘের প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের সহযোগিতার অভিপ্রায়।
চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিখেছেন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ একটি নেতৃত্বদানকারী দেশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশ বিশ্বের একমাত্র দেশ, যেটি এই অধিকারগুলো প্রতিষ্ঠা করতে ৩০ লাখ প্রাণ দিয়েছে। আব্দুল মোমেন বলেন, এরপরও বাংলাদেশ নির্বাচনের আগে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ‘অযথা, অযৌক্তিক, স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক চাপের’ মুখোমুখি হচ্ছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী তাঁর চিঠিতে লিখেছেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা যে জাতিসংঘ সচিবালয়, এর বিভিন্ন সংস্থা এবং ঢাকায় জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারীর দপ্তরসহ জাতিসংঘের সমগ্র প্রক্রিয়া বাংলাদেশকে তার উন্নয়নের গতিপথে অবিচল থাকতে সহায়তার লক্ষ্যে গঠনমূলক ও সহযোগিতামূলক ভূমিকা রাখবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, জাতিসংঘের ব্যবস্থা জাতীয়, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্তরে সবার জন্য একটি শান্তিপূর্ণ, ন্যায়সংগত, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার প্রচেষ্টায় বিশ্বস্ত অংশীদার হিসেবে কাজ করে যাবে।
আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমরা আশা করি, জাতিসংঘের কর্মকর্তারা জাতিসংঘের বিশ্বাসযোগ্যতা এবং সম্মান বজায় রাখার জন্য নিরপেক্ষতা, সততা এবং বস্তুনিষ্ঠতার সর্বোচ্চ মান বজায় রাখবেন। যদি তাঁদের প্রতিবেদনগুলো মিথ্যার ওপর ভিত্তি করে এবং বস্তুনিষ্ঠতা ছাড়া হয় এবং যদি সত্যভিত্তিক না হয়, তবে তাঁরা তাঁদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে পারেন, যা জাতিসংঘপ্রক্রিয়ার জন্য অশুভ লক্ষণ।’