বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০১:১৮ অপরাহ্ন

এখন থেকে অক্ষয় ভারতের নাগরিক

এখন থেকে অক্ষয় ভারতের নাগরিক

স্বদেশ ডেস্ক:

বলিউড তারকা অক্ষয় কুমার এতো দিন যে কাগজে কলমে ভারতের নাগরিক ছিলেন না তা হয়তো অনেকেরই অজানা। এ অভিনেতার জন্ম পাঞ্জাবের অমৃতসরে। তার বাবা ওম ভাটিয়া ছিলেন আর্মি অফিসার। তবে ভারতে জন্ম এবং হিন্দি সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করলেও কানাডার নাগরিক ছিলেন অক্ষয়। এ নিয়ে প্রায়ই কটু কথা শুনতে হয়েছে তাকে। মূলত, ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের সময়ে অক্ষয়ের নাগরিকত্ব নিয়ে বিতর্কের সূচনা হয়। সেই সময় কানাডার নাগরিক হওয়ায় ভোট দেননি তিনি। এরপর তাকে নিয়ে শুরু হয় বিদ্রূপ।

বলিউডে দেশপ্রেমিক অভিনেতার তালিকায় উপরের দিকে আছেন অক্ষয় কুমার। ব্যক্তি কিংবা নায়ক হিসেবে তিনি এর প্রমাণও রেখেছেন। অক্ষয়ের দেশাত্মবোধের পটভূমি নিয়ে তৈরি সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘জলি এলএলবি টু’, ‘এয়ারলিফট’ ও ‘রুস্তম’। তারপরও অক্ষয়কে বারবার নাগরিকত্ব নিয়ে ট্রোল করা হয়েছে।

বিশেষ করে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতার কারণে এই প্রশ্ন বারবার সামনে আসে। সমালোচকরা বলেন, ‘অক্ষয় এত বড় জাতীয়াতাবাদী যে ওর ভারতীয় নাগরিকত্ব ও পাসপোর্টই নেই।’

কানাডার নাগরিক হওয়ার কারণ এর আগে ব্যাখ্যা করেছিলেন অক্ষয়। এ অভিনেতা বলেছিলেন— ‘বেশ কয়েক বছর আগে আমার সিনেমা বক্স অফিসে চলছিল না। পরপর ১৪-১৫টা সিনেমা ফ্লপ হয়। তখন মনে হয়েছিল আমার বলিউড ছেড়ে নতুন পেশায় যোগ দেওয়া উচিত। এরপর কানাডায় বসবাসকারী এক বন্ধু আমাকে ব্যবসার প্রস্তাব দেন। অনেক ভারতীয় কাজের জন্য বিদেশে যায়। আমিও ভেবেছিলাম ভাগ্য যখন আমাকে সায় দিচ্ছে না, তখন আমারো কিছু ভাবা উচিত। এরপর আমি কানাডার নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করি এবং পেয়ে যাই।’

ঘটনা জানতে একটু অতীতে ফিরতে হবে। একবার যুক্তরাজ্যের হিথ্রো বিমানবন্দরে আটকানো হয়েছিলো এই তারকাকে। যেখানে তাকে সব কাগজপত্র দেখাতে হয়েছিল। তখনই মিলেছিল অক্ষয়ের কানাডিয়ান পাসপোর্ট। কারণ তিনি একইসঙ্গে ভারতীয় ও কানাডিয়ান দুই দেশের নাগরিক। এমনকি উইকিপিডিয়াতেও এই নায়কের জাতীয়তা কানাডিয়ান দেওয়া রয়েছে।

এমনটা হতেই পারে যে, একসঙ্গে দ্বৈত নাগরিকত্ব ভোগ করছেন অক্ষয় কুমার। কিন্তু ভারতের সংবিধান এটি সমর্থন করেনা। এ কারণে ভারতের কোনও নির্বাচনে তিনি ভোট দিতে পারেননি। ১৯৫৫ সালের সিটিজেনশিপ অ্যাক্টের (৯ ধারা) অনুযায়ী, যদি কেউ অন্য কোনও দেশের নাগরিকত্ব নেন, তাহলে তিনি ভারতীয় নাগরিকত্ব হারাবেন। অক্ষয়ের সঙ্গে সেটাই হয়েছিল।

এ জন্যই অক্ষয়কে বারবার শুনতে হত, তিনি ভারতীয় নন, ভারতের নাগরিক নন। এই বিদ্রুপের জেরে বিরক্ত হয়ে নতুন করে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেন। অবশেষে আজ মঙ্গলবার স্বাধীনতা দিবসে নিজের নাগরিকত্বের প্রশংসাপত্র টুইট করে জানান দিলেন তিনি এখন থেকে ভারতের নাগরিক। ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘দিল আর সিটিজেনশিপ দুটোই এখন হিন্দুস্তানি।’

কিছুদিন আগে অক্ষয় কুমার জানিয়েছিলেন, কোভিডের সময়েই তিনি ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করেছিলেন। কিন্তু কোভিডের কারণে আড়াই বছর সময় নষ্ট হয়। তিনি আরও বলেন, ‘পাসপোর্ট না থাকলেও আমি কোনও অংশে কম ভারতীয় নই।’

 

ছোট থেকেই খেলাধুলায় বেশ আগ্রহ ছিল অক্ষয়ের। কলেজের পড়াশুনার পাশাপাশি তিনি তায়কোন্ডুতে ব্ল্যাক বেল্ট পান। তারপর থাইল্যান্ডের ব্যাংককে গিয়ে মার্শাল আর্ট শেখেন। পরে কলকাতায় একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে কাজ করেছেন। এরপর ঢাকায় একটি হোটেলে শেফের কাজও করেছেন। শেষে মুম্বাইতে মার্শাল আর্ট শেখানোর সময়ে তিনি পরিচালক-প্রযোজকদের নজরে পড়েন।

নব্বইয়ের দশকে অক্ষয়ের সিনেমা পরপর ফ্লপ হচ্ছিল। মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিলেন তার থেকে। তখনই দেশ ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেন ‘খিলাড়ি’ কুমার। যদিও পরে ভারতে ফিরে আসেন এবং কাজ শুরু করে সাফল্য পান।

সম্প্রতি তার মুক্তি পাওয়া সিনেমা ‘ওমজি ২’ নিয়ে বেশ আলোচনায় অক্ষয়। যদিও নানা কারণে সিনেমাটি শিরোনামে এসেছে একাধিকবার। একদিকে যেমন তাদের সিনেমার বিভিন্ন দৃশ্য নিয়ে চর্চা, তেমনই আবার সিনেমার ছোটখাটো বিভিন্ন মুহূর্ত নিয়ে সমস্যা তৈরি হতে দেখা গিয়েছে। এমনকী সেন্সর নিয়েও হয়েছে সমস্যা। তবে সবকিছুর মধ্যেই তার সিনেমাটি বক্স অফিসে বেশ ভালো ব্যবসা করছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877