বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০২৪, ০২:৩১ অপরাহ্ন

রাশিয়ায় ওয়াগনার বিদ্রোহে লাভ মার্কিন গুপ্তচর সংস্থার!

রাশিয়ায় ওয়াগনার বিদ্রোহে লাভ মার্কিন গুপ্তচর সংস্থার!

স্বদেশ ডেস্ক:

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গুপ্তচর সংস্থা- সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স অ্যাজেন্সির (সিআইএ) প্রধান বলেছেন, ইউক্রেন যুদ্ধ রাশিয়ার নেতা ভ্লাদিমির পুতিনের নেতৃত্বকে খর্ব করে দিচ্ছে।

সংস্থাটির পরিচালক উইলিয়াম জে বার্নস বলেছেন, এই যুদ্ধে রাশিয়ার লোকজন যেভাবে অসন্তুষ্ট হয়ে পড়েছে তার ফলে সিআইএ’র পক্ষে গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।

আমেরিকার শীর্ষ এই গোয়েন্দা যুক্তরাজ্যের ডিচলে ফাউন্ডেশনে বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি এই মন্তব্য করেন। রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের বিদ্রোহের সপ্তাহখানেক পরে তিনি এই ভাষণ দেন।

বার্নস বলেন, প্রিগোজিন মস্কোকে যেভাবে ‘সশস্ত্র চ্যালেঞ্জ’ জানিয়েছেন তার প্রতি সকলেরই ‘মনোযোগ’ আকৃষ্ট হয়েছে, যখন তার ভাড়াটে সৈন্যরা রাশিয়ার রাজধানীর দিকে অগ্রসর হচ্ছিল।

সিআইএ’র প্রধান বলেন, প্রিগোজিনের এই বিদ্রোহ ‘পরিষ্কারভাবে মনে করিয়ে দিয়েছে যে এই যুদ্ধের কারণ পুতিনের নিজের সমাজ ও নিজের সরকার কিভাবে ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে।’

বার্নস বলেন, শুধু যে প্রিগোজিনের কর্মকাণ্ডেরই প্রভাব পড়ছে তা নয়, তার বিভিন্ন বক্তব্য- যেখানে তিনি এই যুদ্ধের যৌক্তিকতা ও বাস্তবায়ন এই উভয় বিষয়েই প্রশ্ন তুলেছেন- তার প্রভাব আরো কিছু সময় ধরে পড়তে থাকবে।

‘এই যুদ্ধের ব্যাপারে যে অসন্তোষ তা রুশ নেতৃত্বকে আরো বেশি ক্ষয় করে ফেলবে,’ বলেন তিনি।

তিনি বলেন, এই অসন্তোষ তাদের সিআইএ’র জন্য বিরল এক সুযোগ তৈরি করে দিয়েছে, যার ফলে সংস্থাটি এখন রাশিয়ার ব্যাপারে গোপন তথ্যের জন্য রাশিয়া থেকে সহজেই গুপ্তচর সংগ্রহ করতে পারবে।

‘আমরা এই সুযোগ নষ্ট হতে দেব না,’ উপস্থিতি দর্শকরা তার এই মন্তব্যে হেসে উঠলে তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এটাকে কাজে লাগাবো।’

রাশিয়া থেকে গুপ্তচর সংগ্রহের লক্ষ্যে সিআইএ সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়াতে নতুন করে প্রচারণা চালাতে শুরু করেছে। তারই অংশ হিসেবে টেলিগ্রামে পোস্ট করা হয়েছে একটি ভিডিও। রাশিয়াতে লোকজনের কাছে এই সামাজিক মাধ্যমটি অত্যন্ত জনপ্রিয়।

এই ভিডিওতে নজরদারি এড়িয়ে কিভাবে ডার্ক ওয়েবের মাধ্যমে সিআইএ’র সাথে যোগাযোগ করা যাবে সেবিষয়ে কিছু নির্দেশনা তুলে ধরা হয়েছে।

প্রথম সপ্তাহেই এই ভিডিওটি ২৫ লাখ বার দেখা হয়েছে।

অন্যান্য মার্কিন কর্মকর্তাদের মতো সিআইএ’র পরিচালক বার্নস আবারো বলেছেন যে প্রিগোজিনের বিদ্রোহে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা নেই।

তবে ওয়াশিংটন পোস্টে সম্প্রতি একটি খবর প্রকাশিত হয়েছে যে ওয়াগনারের বিদ্রোহের আগে তিনি গোপনে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ সফর করেছিলেন। এই রিপোর্টের বিষয়ে বার্নস সরাসরি কোনো মন্তব্য করেননি।

ওয়াশিংটন পোস্টের ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, তার ওই সফরে যেসব বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে- রুশ বাহিনীর ওপর ইউক্রেনের পাল্টা হামলায় উল্লেখযোগ্য কিছু এলাকা যদি পুনর্দখল করে নেয়া যায় তাহলে রাশিয়ার সাথে আলোচনার রাস্তা তৈরি হতে পারে।

২০০৫ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত রাশিয়াতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করা বার্নস বলেছেন, গত দুই দশক ধরে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনকে বোঝার চেষ্টা করেছেন এবং একারণে তিনি পুতিন ও রাশিয়াকে বেশ ভালো করেই বুঝতে পারেন।

তবে তিনি বলেছেন, একটা বিষয় তিনি শিখেছেন এবং সেটা হচ্ছে ইউক্রেনকে নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট পুতিনের যে মোহ সেটাতে তারা সবসময়ই খাটো করে দেখেছেন।

রুশ নেতা পুতিন বিশ্বাস করেন যে ইউক্রেন ছাড়া রাশিয়া বড়ো শক্তি হতে পারবে না এবং পুতিন নিজেও বড় একজন নেতা হতে পারবেন না, বলেন বার্নস।

‘তার এই মর্মান্তিক ও পাশবিক মোহ রাশিয়ার জন্য ইতোমধ্যে দুর্নাম বয়ে এনেছে এবং এর দুর্বলতাগুলো বের হয়ে এসেছে,’ বলেন তিনি।

‘পুতিনের এই যুদ্ধ ইতোমধ্যেই রাশিয়ার কৌশলগত ব্যর্থতা, এর সামরিক দুর্বলতা নগ্ন হয়ে পড়েছে। এর ভবিষ্যৎ অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে,’ বলেন তিনি।

সূত্র : বিবিসি

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877