স্বদেশ ডেস্ক:
ফেসবুক অ্যাকাউন্ট মানুষের ব্যক্তিগত বিষয়। তবে ফেসবুক জগতের বাইরে বাস্তব জীবনে মানুষের অনেক ব্যক্তিগত বিষয় থাকে। আর সেসব তথ্যও ব্যবহারকারীর অজান্তেই চলে যাচ্ছে ফেসুবকের হাতে। শুধু তাই নয়, আপনি কখন আপনার সঙ্গীর সঙ্গে অন্তরঙ্গ হচ্ছেন সে খবরও জেনে যাচ্ছে ফেসবুক।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য সানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ফেসবুকের হাতে মানুষের অন্তরঙ্গ হওয়ার এ খবর পৌঁছে দিচ্ছে দুটি অ্যাপস। মূলত ‘মায়া’ ও ‘মিয়া ফেম’ নামে দুটি অ্যাপসের বিরুদ্ধেই মানুষের একান্ত ব্যক্তিগত তথ্য ফেসবুককে পাচারের অভিযোগ উঠেছে। এ দুই অ্যাপসই মেয়েদের মাসিক চক্রের হিসাব রাখে।
সম্প্রতি এক গবেষণায় এমন তথ্য তুলে এনেছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রাইভেসি বা গোপনীয়তা নজরদারি ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান প্রাইভেসি ইন্টারন্যাশনাল (পিআই)।
পিআই এর গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, অনেক নারীই মাসিক চক্রের হিসাব রাখতে অ্যাপস ব্যবহার করেন। এ অ্যাপস ইনস্টল দেওয়ার সময় ব্যবহারকারী নারীকে অনেক ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ করতে বলা হয়। এসব ব্যক্তিগত তথ্যের মধ্যে সঙ্গীর সঙ্গে শেষ কবে অন্তরঙ্গ হয়েছে, কোন ধরনের জন্মনিরোধক ব্যবহার করছে সে তথ্যও চাওয়া হয়। আর এ ধরনের স্পর্শকাতর তথ্য অ্যাপসগুলো ফেসবুকের সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কিট ব্যবহার করে ফেসবুকে জানায়।
আর এ ফেসবুকের সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট কিট এসব তথ্য দিয়ে অ্যাপস ডেভেলপারদের নির্দিষ্ট অপারেটিং সিস্টেমের জন্য অ্যাপ তৈরি, তথ্য বিশ্লেষণ ও অ্যাপ থেকে অর্থ আয়ের সুযোগ করে দেয়। এর ফলে বিজ্ঞাপনদাতারা নির্দিষ্ট শ্রেণির ব্যক্তির কাছে তাদের পণ্য বা সেবার বিজ্ঞাপন দেখাতে পারে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিআই দাবি করেছে, মোবাইল ফোনে ‘মায়া’ ও ‘মিয়া ফেম’ অ্যাপ ডাউনলোড করে তা ইনস্টল করার সময় ফেসবুককে এ অ্যাপস দুটি তথ্য শেয়ার করে। যদিও এ অ্যাপস দুটিতে ব্যবহারকারী তার গোপনীয়তার নীতিমালা ঠিক করতে পারেন, তবে অধিকাংশ ব্যবহারকারীই তা লক্ষ্য করেন না। আর এ সুযোগটাই নিচ্ছে অ্যাপস দুটি।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে ফেসবুকের এক মুখপাত্র এ অভিযোগ স্বীকার করেছেন। তবে স্পর্শকাতর এসব তথ্যে বিজ্ঞাপনদাতাদের ঢোকার সুযোগ নেই বলেও দাবি করেছেন।
ফেসবুকের বিরুদ্ধে আগেও কয়েকবার ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল। সবচেয়ে বড় অভিযোগ ওঠে গত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়। গত জুলাই মাসে প্রাইভেসি লঙ্ঘনের দায়ে ফেসবুককে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলার জরিমানা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ট্রেড কমিশন।