বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের কোনো কোনো বৈঠকে সরকারি কর্মকর্তাদের সম্মানী দেওয়া হয়। আবার কোনো কোনো সভায় তা দেওয়া হয় না। যেসব বৈঠকে সম্মানী দেওয়া হয় না সেগুলোয় যোগ দিতে আগ্রহ দেখান না সরকারি কর্মকর্তারা। তাদের অনুপস্থিতির কারণে প্রায়ই বৈঠক থেকে কাক্সিক্ষত ফল পাওয়া যায় না। এতে সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি ও প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াও বিঘ্নিত হয়। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পরিকল্পনা কমিশন অর্থ বিভাগের সচিব আবদুর রউফ তালুকদারকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
পরিকল্পনা কমিশনের উপপ্রধান গোলাম মোছাদ্দেক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটির (পিইসি) সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণায়ল/বিভাগের যথাযথ প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করছেন না। যা সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করছে। পিইসির সভায় মূলত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় মন্ত্রণালয় ও বিভাগের উন্নয়ন প্রকল্প প্রক্রিয়াকরণ চূড়ান্ত করা হয়। এসব সভায় প্রকল্পের জনবল নিয়োগ ব্যয় প্রাক্কলন, আর্থিক ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষণ, পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, এসডিজির সম্পৃক্ততা, কর্মসংস্থান, নারী-শিশু ও জেন্ডার ইস্যুর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পরিকল্পনা ও অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নির্দিষ্ট কোনো একক প্রকল্পের মূল্যায়ন সভায় উপস্থিতির জন্য কর্মকর্তাদের সম্মানীর অর্থ বরাদ্দ থাকে। এ ছাড়া বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে টেন্ডার মূল্যায়ন, নিয়োগ বা ক্রয় সংক্রান্ত সভায় উপস্থিতির জন্যও সম্মানী থাকে। ফলে সেসব সভায় কর্মকর্তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু পরিকল্পনা কমিশনের অধীন শিল্প সমন্বয় অনুবিভাগের যে প্রকল্প মূল্যায়ন কমিটি রয়েছে সেটার সভার জন্য কোনো আর্থিক প্রণোদনা বা সম্মানী থাকে না। এ সভায় মূলত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের একাধিক প্রকল্পের বিষয়ে একসঙ্গে আলোচনা করা হয়। পরিকল্পনা কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, এ সভায় উপস্থিতির জন্য কোনো সম্মানীর ব্যবস্থা না থাকায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এতে উপস্থিত হতে অনীহা প্রকাশ করেন।
অর্থ বিভাগের এক কর্মকর্তা বলেন, সম্মানী বা আর্থিক প্রণোদনা একটি বিষয় বটে। তবে প্রত্যেক কর্মকর্তার উচিত নিজ দায়িত্ববোধ থেকে স্ব স্ব সভায় উপস্থিত হওয়া। অনেক কর্মকর্তাই সেটা করেন না।
ওই চিঠিতে আরও বলা হয়, পিইসির সভায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, জলবায়ু বা আবহাওয়া অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত হন না। ফলে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হয়। এ জন্য অর্থ বিভাগের সচিবকে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।