শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ০১:৩৫ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
একনেকে ৮ হাজার কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন যু্ক্তরাষ্ট্রের সেতু দুর্ঘটনা, বিশ্বজুড়ে প্রভাবের আশঙ্কা ৫ ঘণ্টা ধরে বিক্ষোভ করছেন পোশাকশ্রমিকরা ভুল হলে শুধরে দিবেন : বিএসএমএমইউ নতুন ভিসি বিএনপি নেতাকর্মীদের সম্পত্তি দখলের অভিযোগ খণ্ডালেন ওবায়দুল কাদের পণবন্দী জাহাজ ও ক্রুদের মুক্ত করার প্রচেষ্টায় অগ্রগতি হয়েছে : পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্বাস্থ্যমন্ত্রীর আশ্বাসে আন্দোলন স্থগিত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদন প্রথম বাংলাদেশী আম্পায়ার হিসেবে আইসিসির এলিট প্যানেলে সৈকত যেকোনো দিন কাওরান বাজার স্থানান্তরের কাজ শুরু
‘সব স্মৃতি মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত কালো হাত’

‘সব স্মৃতি মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত কালো হাত’

স্বদেশ ডেস্ক:

এ ‘আগস্ট’ শোকের মাস। এ মাসেই হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারাতে হয়। জীবনের সুবর্ণ সময়গুলো দেশের মানুষের জন্য ব্যয় করে, মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে যে মানুষটি একটি দেশের স্বাধীনতা এনে দেন-এ মাসে তাকেই সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।

এমন বিশ্বাসঘাতকতা বোধহয় আর কখনও দেখেনি প্রকৃতি। রক্তঝরা সেই আগস্টের ১৩তম দিন আজ। ১৯৭৫ সালের ১৩ আগস্ট ছিল বুধবার। শোকের এই মাসে বাঙালি জাতি আজও গভীর শোক ও শ্রদ্ধায় ১৫ আগস্টের শহিদদের স্মরণ করে। স্মরণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

কবি নির্মলেন্দু গুণ ‘স্বাধীনতা, এই শব্দটি কিভাবে আমাদের হলো’ কবিতায় লিখেছেন, ‘জানি, সেদিনের সব স্মৃতি মুছে দিতে হয়েছে উদ্যত কালো হাত। তাই দেখি কবিহীন এই বিমুখ প্রান্তরে আজ/কবির বিরুদ্ধে কবি, মাঠের বিরুদ্ধে মাঠ, বিকেলের বিরুদ্ধে বিকেল/উদযানের বিরুদ্ধে উদযান, মার্চের বিরুদ্ধে মার্চ। হে অনাগত শিশু, হে আগামী দিনের কবি/শিশুপার্কের রঙিন দোলনায় দোল খেতে খেতে তুমি/একদিন সব জানতে পারবে-আমি তোমাদের কথা ভেবে/লিখে রেখে যাচ্ছি সেই শ্রেষ্ঠ বিকেলের গল্প।’

মুক্তিযুদ্ধের সময় ‘জয় বাংলা’ স্লোগান পুরো জাতিকে উজ্জীবিত করত। সেই স্লোগানই ৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর হয়ে যায় ‘আওয়ামী লীগ এবং হিন্দুদের স্লোগান।’ যার ফলস্বরূপ ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ স্লোগান উচ্চারিত হতে থাকে। বাংলাদেশ বেতার হয়ে যায় ‘রেডিও বাংলাদেশ’। সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার পরিবর্তে আসে ধর্মের নামে রাজনীতিকে ব্যবহারের পুরোনো কায়দা।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি দেশকে বিপরীত স্রোতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। পাকিস্তানি ভাবধারা পুনঃগ্রথিত করার প্রয়াসে রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে পুরোনো মূল্যবোধকে পুনরুজ্জীবিত করার অপচেষ্টাও চালায়। তাই মুক্তিযুদ্ধের স্লোগান ‘জয় বাংলা’ বাদ দিয়ে তাদের মুখে উচ্চারিত হয়েছিল ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’।

বাঙালি জাতি হিসাবে আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন আমাদের স্বাধীনতা ও নিজস্ব ভূখণ্ড। বঙ্গবন্ধু, বাঙালি ও বাংলাদেশ একই সূত্রে গ্রথিত-একটি অন্যটির পরিপূরক। জাতি হিসাবে আমরা ভাগ্যবান যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মতো একজন মহান নেতাকে পেয়েছিলাম।

জাতির পিতাও বিরল সেই ভাগ্যবানদের একজন, যিনি দেশের জন্য নিজের প্রাণকে বিলিয়ে দিয়ে গেছেন। ক্ষণজন্মা মানুষের পক্ষেই এই ধরনের আত্মদান সম্ভব। স্বভাবতই বঙ্গবন্ধুর রক্ত অন্য যে কোনো রক্তের চেয়ে আলাদা। বঙ্গবন্ধুর অসাধারণ রক্ত বাঙালি জাতির মুক্তির অনিঃশেষ লড়াইয়ে চিরদিন প্রেরণা জোগাবে।

জাতির পিতা, মুক্তিযুদ্ধের মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু ইতিহাসের অংশই নন, বিশ্বসভ্যতার ইতিহাসেও তিনি কালের বরপুত্র।

বঙ্গবন্ধুর জীবনের সঙ্গে বাঙালি জাতির উত্থান ও বাংলাদেশের স্বাধীনতা যেমন অবিচ্ছেদ্য, তেমনি বিশ্বের নিপীড়িত, বঞ্চিত ও শোষিত মানুষেরও তিনি অনুপ্রেরণা। তার এই অবদান বা কৃতিত্ব যতই চেষ্টা করুক কখনও কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। অন্তত ইতিহাস তাই বলে। আর তা না হলে ৭৫-এর ১৫ আগস্ট সপরিবারে হত্যা করেও বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলতে পারেনি ষড়যন্ত্রকারী ও খুনিরা।

বঙ্গবন্ধু মানুষের ভালোবাসা নিয়ে তাদের অন্তরে বেঁচে আছেন। তিনিই নির্বাচিত হয়েছেন হাজার বছরের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসাবে। বাঙালি শোককে শক্তিতে পরিণত করেছে। তাই জীবিত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের চেয়ে শহিদ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অনেক শক্তিশালী।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877