স্বদেশ ডেস্ক:
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তার বাড়িকে ‘মিনি ব্যাংক’ হিসেবে কাজে লাগাতেন। তবে ওই টাকায় নাকি কোনদিন হাতও দিয়ে দেখেননি তিনি। এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) হেফাজতে এমনই বিস্ফোরক দাবি করেছেন মন্ত্রী ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।
হিন্দুস্তান টাইমস, জিনিউজসহ ভারতের একাধিক গণমাধ্যম জানিয়েছে, শুক্রবার অর্পিতার টালিগঞ্জের অভিজাত আবাসনে হানা দেন ইডির কর্মকর্তারা। সেখানে একটি বন্ধ ঘর নজরে আসে তাদের। ওই বন্ধ ঘরে ঢুকে কার্যত বিস্মিত হয়ে গিয়েছিলেন তদন্তকারীরা। কারণ, ঘরে কার্যত পা ফেলার জায়গা ছিল না। চতুর্দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল ২ হাজার এবং পাঁচশো টাকার নোটের বান্ডিল। বন্ধ ওয়ারড্রবের দরজা খুলেও টাকার পাহাড় দেখতে পান তারা। ম্যারাথন জেরার পর গ্রেপ্তার করা হয় অর্পিতাকে। আপাতত ইডি হেফাজতেই রয়েছেন তিনি।
ইতোমধ্যেই অর্পিতাকে একাধিকবার জেরা করেছে ইডি। প্রশ্ন একটাই, বিপুল টাকার উৎস কী? ইডি সূত্রে খবর, অর্পিতা দাবি করেছেন তার বাড়িকে ‘মিনি ব্যাংক’ হিসেবে কাজে লাগাতেন পার্থ। সপ্তাহে একদিন, আবার কখনো কখনো ১০দিন অন্তর একবার ওই ঘরে টাকা রাখতেন পার্থ।
কখনো কখনো মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন সঙ্গী সাথীও ওই ফ্ল্যাটে এসে টাকা রাখতেন বলেও দাবি অর্পিতার। ওই ঘরে কত টাকা রয়েছে, তা জানতেন না বলেও দাবি তার।
ইডি সূত্রে জানা গেছে, অর্পিতা তাদেরকে জানিয়েছেন যে তার বাড়ি ছাড়াও পার্থ চ্যাটার্জি আরও একজন মহিলার বাড়িকে ‘মিনি ব্যাংক’ হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। সেই মহিলাও পার্থ চ্যাটার্জির ঘনিষ্ঠ বলে জানা গেছে।
ইডি সূত্র জানায়, একজন টলিউড অভিনেতার মাধ্যমে অর্পিতা এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আলাপ হয়। গত ২০১৬ সালে ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয় তাদের। শিক্ষক নিয়োগের দুর্নীতি সংক্রান্ত টাকাই যে ওই ফ্ল্যাটবন্দী হয়েছিল, সে ইঙ্গিত অর্পিতা দিয়েছেন বলেই ইডি সূত্রে খবর।
তবে নিজের ফ্ল্যাটকে কেন ‘মিনি ব্যাংক’ হিসেবে ব্যবহার করতে দিলেন অর্পিতা, সে প্রশ্ন উঠছেই। আপাতত ৩ আগস্ট পর্যন্ত ইডি হেফাজতেই থাকতে হবে অর্পিতা ও পার্থকে। তাদের জেরা করে সমস্ত প্রশ্নের কিনারা হবে বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
উল্লেখ্য, গত ২২ জুলাই ভারতের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ইডির ২৭ ঘণ্টা জেরার পর গ্রেপ্তার হন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং তার বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়।