শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২:১৮ অপরাহ্ন

লোডশেডিংয়ে ঘরে বাইরে পড়াশোনা বন্ধের উপক্রম

লোডশেডিংয়ে ঘরে বাইরে পড়াশোনা বন্ধের উপক্রম

স্বদেশ ডেস্ক:

আড়াই বছরে করোনার ধকল কাটতে না কাটতেই এবার লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। জ্বালানির সঙ্কটের কারণ দেখিয়ে সারা দেশেই লোডশেডিং দিচ্ছে সরকার। ফলে দিনের বেলায় ক্লাসে গিয়েও গরমের কারণে পড়াশোনা করতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। অন্য েিদক সন্ধ্যার পরেও কয়েক দফায় বিদু্যুৎ চলে যাওয়ার কারণে ঘরে বসেও ঠিকমতো পড়াশোনায় মন বসাতে পারেছে না তারা। ফলে করোনায় শিক্ষায় যে ক্ষতি হয়েছিল তা সহসা কাটিয়ে ওঠার সম্ভাবনাও ক্ষীণ হয়ে উঠেছে। গত কয়েক দিনে দেখা গেছে, ঘোষণার চেয়েও বেশি সময় লোডশেডিং হওয়ার কারণে সব শ্রেণীর শিক্ষার্থীরই পড়াশোনা বন্ধের উপক্রম হয়েছে।

অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সরকার ঘোষণা দিয়ে এক ঘণ্টার লোডশেডিংয়ের কথা বললেও সত্যিকার অর্থে দিনে রাতে কয়েক দফায় বিদ্যুতের লুকোচুরি চলছে। দিনের বেলায় বিদ্যুৎ না থাকলে স্কুলে গিয়েও শিক্ষার্থীরা পড়াশোনায় মন বসাতে পারছে না। এ ছাড়া গত কয়েক দিনের তীব্র তাপদাহে অনেক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তারা স্কুলে গিয়েও প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। শিক্ষকরা ক্লাসে গিয়েও লোডশেডিংয়ের কারণে ঠিকমতো নিয়মিত পাঠ কার্যক্রম চালাতে পারছেন না।
শুধু স্কুলের ক্লাসরুমেই নয়, বরং বাসাবাড়িতে সন্ধ্যার পরেও বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। অনেকসময়ে দেখা যায়, গভীর রাতেও বিদ্যুতের লুকোচুরি চলছে। সবচেয়ে সমস্যা তৈরি হচ্ছে সন্ধ্যার পরে বিদ্যুৎ চলে গেলে। সারা দেশে প্রত্যেক গ্রাম কিংবা শহরই শুধু নয়; প্রতিটি পরিবারের শিক্ষার্থী সন্তানরাই সন্ধ্যার পরে পড়তে বসে। কিন্তু গত কয়েক দিনের প্রাত্যহিক রুটিনে দেখা গেছে সেখানেও বিভ্রান্তি ঘটছে। সন্ধ্যার পরে বিদ্যুৎ না থাকলে অনেক পরিবারের ছেলেমেয়েরাই আর বিকল্প আলোতে পড়তে পারছে না। নিয়মিতভাবে এভাবে বিদ্যুতের বিভ্রাট চলতে থাকলে নিশ্চিতভাবেই তারা পড়াশোনায় আরো পিছিয়ে পড়বে।

সম্প্রতি সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা দিয়েই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিদ্যুতের ব্যবহার কমানোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। গত ১৯ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এক অনুষ্ঠানে দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিদ্যুতের ব্যবহার কমিয়ে নিয়মিত কার্যসম্পাদন করতে বলেছে। সূত্র জানায়, দেশে বিদ্যুৎঘাটতি মোকাবেলায় সরকারের নেয়া নির্দেশনা মোতাবেক সব বিশ্ববিদ্যালয়কে বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইউজিসি।

কমিশনের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের সাথে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর চলমান প্রকল্প নিয়ে গত ১৯ জুলাই অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় ইউজিসি সদস্য প্রফেসর ড. মুহাম্মদ আলমগীর এ আহ্বান জানান। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো যথাসময়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে না। এতে প্রকল্পের সময় বৃদ্ধির সাথে সাথে ব্যয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রফেসর আলমগীর সারা দেশে বিদ্যুৎঘাটতি মোকাবেলায় সরকারের নেয়া নির্দেশনা মোতাবেক সব বিশ্ববিদ্যালয়কে বিদ্যুৎ ব্যবহারে মিতব্যয়ী হওয়ার আহ্বান জানান। অপ্রয়োজনে লাইট, ফ্যান ও এসি ব্যবহার থেকে বিরত থাকার অনুরোধ করেন। কৃচ্ছ্রসাধনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে মিতব্যয়ী হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি। অন্য দিকে অভিভাবকদের দাবিÑ করোনার কারণে দীর্ঘ আড়াই বছরে শিক্ষা সেক্টর যেভাবে পিছিয়ে পড়েছে সেখান থেকে উত্তরণের জন্য এখন শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা নিয়মিত হওয়া জরুরি। বিশেষ করে এই শিক্ষাবর্ষের বাকি সময়ে যেন নতুন করে আর কোনো বিরতি বা ছন্দপতন না ঘটে সে জন্যই নিয়মিত ক্লাসগুলো হওয়া জরুরি। তাই শিক্ষা সেক্টরকে নতুন করে আর কোনো সঙ্কটে না ফেলেতেই ক্লাসরুমে ও বাসাবাড়িতে পড়ালেখার সময়টুকুতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের দাবি তাদের।

বাংলাদেশ অভিভাবক ফোরামরে সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউল কবির দুলু নয়া দিগন্তকে জানান, শিক্ষার্থীদের কোনো ক্ষতি হলে এই ক্ষতি অন্য কোনোভাবে পুষিয়ে নেয়া যায় না। এমনিতেই গত আড়াই বছরে শিক্ষা সেক্টর ও শিক্ষার্থীরা অনেক পিছিয়ে পড়েছে। তাই বিদ্যুতের কারণে যেন ক্লাস বা পরীক্ষায় কোনো ব্যাঘাত সৃষ্টি না হয়। বিশেষ করে ক্লাসের সময়ে এবং সন্ধ্যার সময়টিতে খেয়াল রেখে পড়াশোনার সময়ে যেন লোডশেডিং না দেয়া হয় সি বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877