বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:১৭ অপরাহ্ন

দু’দিন পর ডেঙ্গু রোগী আবার বেড়েছে

দু’দিন পর ডেঙ্গু রোগী আবার বেড়েছে

স্বদেশ ডেস্ক:

দুই দিন পর আবারো বেড়েছে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা। সম্মিলিতভাবে রাজধানীর বাইরে রোগীর সংখ্যা বেশি। রাজধানীতে গতকাল দুপুরের পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৬৫ জন আক্রান্ত হয়েছে আর ঢাকার বাইরে ছিল এক হাজার ১১১ জন। স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্যে, সারা দেশে ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ওই সময়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে দুই হাজার ১৭৬ জন। তবে মৃত্যুর সংখ্যা সরকারি হিসেবে গতকালও ২৯-এ সীমাবদ্ধ ছিল। চলতি বছর গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছে ৩৮ হাজার ৮৪৪ জন। সারা দেশে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে ৯ হাজার ৪২০ জন রোগী। গতকাল ঢাকার বেসরকারি হাসপাতালে ৩৮২ জন ভর্তি হয়েছে। কেবল ঢাকা মেডিক্যালেই ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে ২৫৩ জন, মুগদায় ১১৩ জন। মিটফোর্ডে ৬৩, শিশুতে ২৪, সোহরাওয়ার্দীতে ৭৮, বিএসএমএমইউতে ৩০, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৩৪, কুর্মিটোলায় ৭২, পুলিশ হাসপাতালে ১৪ ও বিজিবি হাসপাতালে দুইজন ভর্তি হয়েছে। দিনাজপুর ও বরিশাল মেডিক্যালে আরো দুই শিশু শিক্ষার্থী ডেঙ্গুতে মারা গেছে। বলা চলে সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু ভাইরাসবাহী এডিস মশা। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা: মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ বছর যা হওয়ার, হয়েছে। এডিস মশা ছড়িয়ে গেছে সারা দেশে। আগামী বছর যেন মশার বিস্তার না ঘটতে পারে সে জন্য এখন থেকেই পরিকল্পনা করে মশা নিধনের কাজ করতে হবে। গত মার্চেই মশা নিধনের ব্যবস্থা করতে পারলে এত ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়ত না। মার্চে ঢাকায় মশক নিধনে ব্যবস্থা নিতে পারলে খরচ হয়তো কমে যেতে পারত। এবার সারা দেশেই মশার ওষুধ দিতে হবে। তা করতে না পারলে আগামী বছর এর চেয়ে ভয়াবহ হতে পারে ডেঙ্গু পরিস্থিতি।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান জানান, মশা নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই। কারণ এ সময়টায় বাংলাদেশে যে তাপমাত্রা, বাতাসে যে ধরনের আর্দ্রতা থাকে তা এডিস মশার বংশ বিস্তারের জন্য উপযুক্ত। সে জন্য আগে থেকেই নিধনে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি জানান, এ সময় তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো থাকে। ডিম থেকে লার্ভা ফোটার জন্য এটা উপযুক্ত। অতএব আগে থেকে মশা নিধনে ব্যবস্থা করতে পারলে এ বিপদ থেকে বাঁচা সম্ভব।

এদিকে সরকারি হাসপাতালে রোগীর প্রচণ্ড ভিড়। সবাইকে ভর্তি করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে স্বজনরা এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি করছেন। এর মধ্যেই যারা ভর্তি হচ্ছেন প্রায় সবাই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরছেন। হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন সেবা দিতে। এ চিত্র ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা, সলিমুল্লাহ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালসহ সর্বত্র। সুস্থ হয়ে ফেরা রোগীরা বলছেন, তারা হাসপাতালে কষ্টের মধ্যে চিকিৎসা নিয়েছেন। কারণ এত মানুষ আসছে, সবাই চেষ্টা করছেন ভর্তি হতে। চিকিৎসকদেরও সীমাবদ্ধতা আছে। বলছিলেন মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফেরা আব্দুল লতিফ। তিনি কদমতলায় থাকেন। আব্দুল লতিফ জানান, আমি রিকশা চালাই। বাসায় মশারির ভেতরেই ঘুমাই। কখন এডিস মশা কামড় দিয়েছে বলতে পারব না। ভর্তি হওয়াটা অনেক কঠিন ছিল। এলাকার একজন বড় ভাইকে ধরে এখানে ভর্তি হয়েছি। ডাক্তার সাহেবরা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন রোগীদের সুস্থ করে তুলতে।

বিএমএ : আওয়ামী লীগের ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও চিকিৎসা মনিটরিং সেলের উদ্যোগে গতকাল বিএমএ সভাপতি ও সেলের আহ্বায়ক ডা: মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের চিকিৎসাসংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় পরিদর্শন করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও চিকিৎসা মনিটরিং সেলের সদস্য ডা: বদিউজ্জামান ভূঁইয়া, অধ্যাপক কনককান্তি বড়–য়া, অধ্যাপক ডা: মনিরুজ্জামান ভূইয়া, অধ্যাপক ডা: এম এ আজিজ, অধ্যাপক ডা: মো: শারফুদ্দিন আহমেদ, ডা: মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন চৌধুরী, অধ্যাপক ডা: কামরুল হাসান খান, অধ্যাপক ডা: এ বি এম আব্দুল্লাহ, ডা: মো: কামরুল হাসান, ডা: আলী আসগর মোড়ল, ডা: এম নজরুল ইসলাম, ডা: পূরবী রাণী দেবনাথ, ডা: মোহাম্মদ শেখ শহীদ উল্লাহ, অধ্যাপক ডা: মতিউর রহমান, ডা: মোজহার হোসেন, ডা: এম এ বি সিদ্দিক, ডা: এন খন্দকার এজাজ আহমেদ হিরু প্রমুখ।

বিএসএমএমইউ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯ আগস্ট থেকে গতকাল পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ছিল ১৮০ জন। নতুন ভর্তি রোগী ৩০ জন, আগের ভর্তি রোগী ১৫০ জন। গত ২৭ আগস্ট থেকে ১০ আগস্ট পর্যন্ত ডেঙ্গু চিকিৎসা সেলে ৫৬৮ রোগী ভর্তি হয়েছেন। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৩৮৬ জন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন বহির্বিভাগে বর্তমানে দৈনিক গড়ে প্রায় ৩০০ জন জ্বরের রোগী সেবা নিচ্ছেন। এসব রোগীর প্রায় ৩০ শতাংশ ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের বহির্বিভাগে পাঁচ হাজার ১৪৫ জন ডেঙ্গু রোগী সেবা নিয়েছেন। ভর্তিকৃত রোগীদের পরীক্ষা-নিরীক্ষা, ওষুধ, স্টেশনারিসহ চিকিৎসাসেবা, বেড ভাড়া এমনকি আইসিইউ এবং এইচডিইউ সেবাও বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে। ঈদের ছুটির মধ্যেও বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেঙ্গু চিকিৎসাসেবা সেল খোলা থাকবে। ঈদের পরদিন থেকে বহির্বিভাগ খোলা থাকবে। ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর শাহাদতবার্ষিকীতে বহির্বিভাগে সকাল ৯টা থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা প্রদান করবেন।
নওগাঁ সংবাদদাতা জানান, গতকাল শনিবার দুপুরে জ্বর নিয়ে নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তির আড়াই ঘণ্টার মধ্যে ডানা (৯) নামে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বলছেন ডানা ডেঙ্গু আক্রান্ত ছিল না। তার রিপোর্টে ডেঙ্গু নেগেটিভ এসেছে। তবে কেন ডানার মৃত্যু হয়েছে এমন প্রশ্নে ডা: রওশন আরা বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ডানা শহরের ভবানীপুর এলাকার নওগাঁ মাল্টিপারপাসের নির্বাহী পরিচালক মাসুদ রানার মেয়ে। সে নওগাঁ বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী।
এদিকে নওগাঁয় শনিবার পাঁচজন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে গত ১৩ দিনে জেলায় ৮৭ জন ডেঙ্গুরোগী শনাক্ত হয়েছে। শনিবার শনাক্ত পাঁচ ডেঙ্গুরোগীর মধ্যে দুইজন নওগাঁ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। দুইজন সাপাহার ও একজন পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন। নওগাঁ সিভিল সার্জন ডা: মুমিনুল হক জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ডেঙ্গু পরীক্ষার ডিভাইস কেনার জন্য অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। শিগগিরই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও ডেঙ্গু পরীক্ষা সম্ভব হবে।

ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা জানান, ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ঠাকুরগাঁওয়ে অপি রানী রায় (১৮) নামে আরেক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩। শুক্রবার সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতাল থেকে দিনাজপুর মেডিক্যালে নেয়ার পর ওই শিক্ষার্থী মারা যায়। অপি রানীশংকৈল উপজেলার লেহেম্বা গ্রামের অনুকূল চন্দ্র রায়ের মেয়ে। এ ছাড়া ঠাকুরগাঁওয়ে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬ জন।

জানা যায়, অপি রংপুর ক্যান্ট পাবলিক কলেজ থেকে এ প্লাস পেয়ে এইচএসসি পাসের পর বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং করতে ঢাকায় যায়। জ্বর নিয়ে গত ৪ আগস্ট ঢাকা থেকে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার শিবগঞ্জ মামার বাড়িতে আসে অপি। পরে তাকে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসক তাকে দিনাজপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে জানা যায়, হাসপাতালটিতে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে ৬৬ রোগী। এখনো চিকিৎসাধীন রয়েছে ২৯ জন রোগী। এর আগে ৬ আগস্ট রানীশংকৈল উপজেলার ভকরগাঁও গ্রামের রবিউল ইসলাম রুবেল নামে এক মাদরাসাছাত্র এবং ২৬ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ফিরোজ কবির ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। তার বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আখানগরে।

রাজাপুর (ঝালকাঠি) সংবাদদাতা জানান, ঈদ উদযাপন করতে ঢাকা থেকে ডেঙ্গুজ¦র নিয়ে দাদার বাড়ি রাজাপুরে এসে রুসা মনি নামে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার সকালে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। রুসা রাজাপুরের গালুয়া ইউনিয়নের জীবনদাশকাঠি গ্রামের রুহুল আমিন হাওলাদারের মেয়ে এবং ঢাকার ধানমন্ডি রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী। তার মৃত্যুতে রুসার পরিবারে ঈদের আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়েছে। রুসার বাবা রুহুল আমিন হাওলাদার জানান, কয়েক দিন আগে ঢাকায় রুসার ডেঙ্গু ধরা পড়লে চিকিৎসা করানোর পর কিছুটা সুস্থ হলে বৃহস্পতিবার তাকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু শুক্রবার সকালে আবার জ¦র বাড়লে তাকে রাজাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিলে চিকিৎসক বরিশাল রেফার করেন। শেরেবাংলা মেডিক্যালে বেড না পাওয়ায় বেসরকারি রাহাত আনোয়ারা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। অবস্থার আরো অবনতি হলে শুক্রবার রাত ৮টার দিকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়। শনিবার সকালে তার মৃত্যু হয়।

উজিরপুর (বরিশাল) সংবাদদাতা জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত ১১ দিনে ১৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে পাঁচজন রোগী এ উপজেলায় আক্রান্ত হলেও বাকিরা পাশের বাবুগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা। গতকাল সরেজমিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দেখা যায়, হাসপাতালে জায়গা স্বল্পতার কারণে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের জন্য কোনো কর্নার করা হয়নি। সাধারণ রোগীদের ওয়ার্ডেই ডেঙ্গু আক্রান্ত ১৫ রোগী চিকিৎসা নেন। বর্তমানে ১৩ জন ভর্তি আছেন। চিকিৎসক মাকসুদুর রহমান জানান, স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গু আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি আমরা নিশ্চিত হয়েছি এবং প্রতিদিনই ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এখানে যে পরিমাণ কিট দেয়া হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় একেবারেই কম।

সাপাহার (নওগাঁ) সংবাদদাতা জানান, ঈদের পূর্ব মহূর্তে সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাত ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। দুইজনকে ইতোমধ্যেই নওগাঁ জেলা সদরের সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। জরুরি বিভাগ থেকে জানা গেছে, গত দুই-তিন দিনে বিভিন্ন স্থান থেকে ঈদ করতে আসা সাতজন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ডেঙ্গুর সন্দেহে হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর দুইজনের শরীরে পজেটিভ রিপোর্ট পাওয়া যায়।

ভাণ্ডারিয়া (পিরোজপুর) সংবাদদাতা জানান, গতকাল দুইজন ডেঙ্গু রোগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসে। এ ছাড়া গত দুই সপ্তাহে ১৫ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে। এদের মধ্যে এক শিশু চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে। এ দিকে সাধারণ জ্বর হলেও রোগীরা ডেঙ্গুজ্বর পরীক্ষা করতে ভিড় জমাচ্ছে হাসপাতালে। গত সোমবার ভাণ্ডারিয়া পৌরসভার লক্ষ্মীপুরা গ্রামের হাসান জোমাদ্দারের একমাত্র মেয়ে উম্মে হাবিবা (৫) ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকার বাড্ডার এ এম জেড বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা: মো: বেলাল হোসেন জানান, ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৫ জন ভর্তি রয়েছে।

দশমিনা (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা জানান, গতকাল পর্যন্ত বিভিন্ন স্থান থেকে ঈদ উপলক্ষে আসা আটজন দশমিনা হাসপাতালে ডেঙ্গু সন্দেহে ভর্তি হয়েছে। তাদের ভর্তি করে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে ডেঙ্গু আতঙ্ক।

বগুড়া অফিস জানায়, জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত বেড়েই চলেছে। বর্তমানে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ১৪৪জন এবং হাসপাতাল ছেড়েছে ২০জন। জেলা সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলের পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় বগুড়ার বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ৩৪জন ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে শজিমেক হাসপাতালে ১১৬জন, মোহাম্মাদ আলী হাসপাতালে ৭জন, শামছুন্নাহার ক্লিনিকে ৫জন, টিএমএসএস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৭জন, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ১, ডক্টরস ক্লিনিকে ৬জন ও সিটি ক্লিনিকে ২জন চিকিৎসাধীন।

বরিশাল ব্যুরো জানায়, গত এক মাসে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চারজন এবং গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার সকাল পর্যন্ত শেবাচিমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৩৯ জন ডেঙ্গু রোগী। এর মধ্যে গতকাল বিকেলের পূর্বের ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৯৮ জন। যা এ পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার হিসাব অনুযায়ী রেকর্ড সংখ্যক ভর্তি রোগী। এদের মধ্যে পুরুষ ৫২জন, নারী ২৬জন ও ২০জন শিশু। হাসপাতালের পরিচালক বলেন, ঈদের আগমুহুর্তে রোগীর সংখ্যা বাড়াটা শঙ্কার। কারণ এখন মানুষ গ্রামের বাড়িতে ফিরছে আর রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। তবে আমরা আগাম সবধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877