স্বদেশ ডেস্ক:
ভারতের উত্তরপ্রদেশ সরকারের ‘বুলডোজার-নীতি’র বিরোধিতায় এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলো জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ। ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্তদের বাড়ি যেভাবে ভেঙে গুড়িয়ে দেয়া হচ্ছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই ভারতজুড়ে আলোড়ন ছড়িয়েছে। দ্বিধাবিভক্ত আইন বিশারদেরাও। এই পরিস্থিতিতে শীর্ষ আদালতের কাছে জমিয়তের আবেদন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপে হিসাবে যাতে তাদের সম্পত্তি নষ্ট না করা হয়, তার নির্দেশ দেয়া হোক যোগী আদিত্যনাথের সরকারকে।
বেআইনি নির্মাণকাজের অভিযোগে সম্প্রতি কানপুর ও প্রয়াগরাজের একাধিক বাড়িতে বুলডোজার চালিয়েছে যোগী প্রশাসন। ঘটনাচক্রে, যাদের বাড়ি ভেঙে ফেলা হয়েছে, তাদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধে সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করার অভিযোগ উঠেছে।
কানপুরে বিক্ষোভের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত ‘ওয়েলফেয়ার পার্টি অব ইন্ডিয়া’-র নেতা জাভেদ আহমেদের বাড়িও ভাঙা হয়েছে। স্থানীয় সময় রোববার সকাল ১১টার মধ্যে বাড়ি ছাড়তে বলে শনিবার রাতে দরজায় নোটিশ সেঁটে দিয়েছিল পৌরসভা। স্থানীয় পৌর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দাবি, বেআইনিভাবে বাড়ি নির্মাণ নিয়ে জাভেদকে নোটিশ পাঠানো হয়েছিল। তিনি তার জবাব না দেয়ায় গত ২৫ মে তার বাড়ি ভাঙার নির্দেশ জারি হয়। উত্তরপ্রদেশের সরকারের এই নীতির বিরুদ্ধেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে জমিয়তে।
তবে যে সময় জাভেদের বাড়ি ভাঙা হলো, তার ভিত্তিতে দুয়ে দুয়ে চার করে নিচ্ছেন রাজনীতির কারবারিদের একাংশ। তাদের মত, বিক্ষোভকারীদের শিক্ষা দিতেই বুলডোজার নামিয়ে দিয়েছে যোগী প্রশাসন। আইন বিশারদদের একাংশ আবার বলছেন, বেআইনি নির্মাণ হয়ে থাকলে বাড়ি ভাঙার ক্ষমতা রয়েছে পৌরসভার। তবে তা পুরোটাই হতে হবে আইন মেনে।
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক বিচারপতি আরএম লোঢা বলেন, ‘অপরাধে অভিযুক্ত মানে তার বাড়ি ভাঙা যেতে পারে না কখনোই। সম্পত্তি নিয়ে সমস্যা থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে আদালত থেকে নোটিশ পাঠাতে হবে। নোটিশ ছাড়া সম্পত্তি নষ্টের কোনো আইনি সংস্থান নেই।’
অন্য দিকে, দিল্লি হাইকোর্টে বিচারপতি রাজীব সহায় এন্ডল বলছেন, ‘বেআইনি নির্মাণ হলে বাড়ি ভাঙাই যেতে পারে। আইন সবার জন্যই এক। বেছে বেছে কারো বাড়ি ভাঙা যায় না। সকলের চলাফেরার রাস্তায় নির্মাণ করলে কোনো নোটিশ লাগে না। পাশাপাশিই, যদি কেউ সরকারি জমিতে নির্মাণকাজ করেন, তবে আইন মেনে তার বাড়িও ভাঙা যেতে পারে। এমন সংস্থান রয়েছে পৌর আইনে।’
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা