স্বদেশ ডেস্ক: সোমবার শেয়ার বাজারের পতনে মাথায় হাত পড়ল ভারতের পাঁচ ধনকুবের শিল্পপতির। মুকেশ আম্বানি, শিব নাদার, পালোনজি মিস্ত্রি, আজিম প্রেমজি ও উদয় কোটাকদের সংস্থার শেয়ারদর দ্রুত নেমে যায়। এর ফলে শুধু এক দিনেই ৪০৮ কোটি মার্কিন ডলার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন এই পাঁচ ধনকুবের। সার্বিকভাবে যার প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারে।
এর আগে ভারতের দেশীয় শেয়ার বাজারে সেনসেক্সের অস্থিরতা থাকলেও এতটা বেশি ক্ষতির মুখে পড়তে হয়নি আম্বানি-মিস্ত্রিদের। তা হলে হঠাৎ করে কেন তাদের এত বড় ক্ষতির মুখে পড়তে হলো? এই প্রশ্নের দু’টি কারণ উল্লেখ করেছেন আর্থিক বিশেষজ্ঞরা। এক, সম্প্রতি চীনা পণ্যের উপর ১০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এই সিদ্ধান্তে আন্তর্জাতিক শেয়ার বাজারে ব্যাপক ধস নেমেছে এই কয়েক দিনে। প্রত্যক্ষভাবে তার প্রভাব পড়েছে ভারতের বাজারে। দুই, কাশ্মীর নিয়ে কেন্দ্রের বর্তমান পদক্ষেপের জেরে গতকাল শেয়ার সূচক উল্লেখযোগ্যভাবে নেমে আসে। যাতে করে বাজার নিয়ন্ত্রণকারী প্রথম সারির বহু সংস্থার শেয়ার দর কমে যায়। মূলত এই দু’য়ের কারণেই দিনের শেষে বিএসই সেনসেক্স ৪১৮ পয়েন্ট হারিয়ে বসে।
ব্লুমবার্গ বিলিওনিয়ারের ইনডেক্সে বিশ্বের ধনকুবেরদের তালিকায় ঠাঁই পেয়েছিলেন ভারতের ওই পাঁচ শিল্পপতি। গতকাল মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারদর ৩.৫ শতাংশ কমে হয় এক হাজার ১৪৩ টাকা। সবমিলিয়ে আম্বানিদের ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৪৫ কোটি মার্কিন ডলার। ফলে সমান্তরালভাবে কমেছে মুকেশদের মোট সম্পদের পরিমাণও। ধনকুবেরদের তালিকায় ৪৪ নম্বর স্থানে ছিলেন পালোনজি মিস্ত্রি। টাটা সন্সের সবচেয়ে বড় শেয়ার হোল্ডার তিনি। এই সংস্থার ১৮.৪ শতাংশ শেয়ারই রয়েছে মিস্ত্রির হাতে। একদিনেই এই শিল্পপতির আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২০ কোটি ৮১ লক্ষ মার্কিন ডলার।
এদিন উইপ্রোর শেয়ারদরও এক শতাংশ নীচে নেমে যায়। যার দরুণ প্রায় ৪২কোটি ৮০ লক্ষ মার্কিন ডলার আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন সংস্থার কর্ণধার আজিম প্রেমজি। ২০০০ কোটি মার্কিন ডলারের সম্পদের অধিকারী প্রেমজি ধনকুবেরদের তালিকায় ছিলেন ৪৯তম স্থানে। অন্যদিকে, এইচসিএলের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান শিব নাদার, কোটাক মাহিন্দ্রা ব্যাঙ্কের চেয়ারম্যান উদয় কোটাকও প্রবল আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। নাদারের ২৬ কোটি ৬৫ লক্ষ মার্কিন ডলার এবং কোটাকদের ৬৬ কোটি ২০ লক্ষ মার্কিন ডলার ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে। শুধু দেশীয় শিল্পপতিরাই নন, সবমিলিয়ে বিশ্বের ৫০০ জন ধনকুবের তাঁদের সম্পদ হারিয়েছেন ২.১ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়েছে আমাজন প্রধান জেফ বেজোসের। তাঁর ক্ষতি ৩৪০ কোটি ডলার।