স্বদেশ ডেস্ক: আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় শুরু হচ্ছে কোরবানির পশুর হাট। আর এজন্য হাটের নির্ধারিত স্থানগুলো সুন্দরভাবে শেড আকারে তৈরি করা হচ্ছে। একই সঙ্গে চালানো হচ্ছে হাটের প্রচার- প্রচারণা। বেশিরভাগ হাটগুলোতেই চলছে সাজসজ্জার কাজ।
তবে অন্য হাটের প্রস্তুতির কাজ চললেও গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাটে সারা দেশ থেকে কোরবানির পশু আসতে শুরু করেছে। এই হাটে শুধু গরু, ছাগল নয় কোরবানির পশু হিসেবে বিক্রির জন্য আনা হয়েছে পাকিস্তানের উট ও দুম্বা। আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে গাবতলী পশুর হাটে গিয়ে এসব দৃশ্য চোখে পড়ে।
হাটের ভেতরের একটি শেডে তিনটি উট নিয়ে এসেছেন এক ব্যবসায়ী। এক একটি উটের দাম চাওয়া হচ্ছে ১৬ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা পর্যন্ত। আর দুম্বার দাম চাওয়া হচ্ছে সাড়ে তিন লাখ টাকা থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত।
কথা হয় উট বিক্রেতা ইমরান আহমেদের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রতি বছরই গাবতলীর পশুর হাটে উট নিয়ে আসেন তিনি। উটগুলো পাকিস্তান থেকে আনা হয়েছে। সবগুলো উট ঢাকায় আনার আগে পর্যন্ত চার ব্যবসায়ীর হাত বদল হয়েছে। সে কারণে উটের দাম বেশি পড়েছে। তাই বিক্রিও করতে হবে বেশি দামে।
ইমরান আরও জানান, তিনি ভুটান থেকে ছয়টি গরু এনেছেন। এসব গরুর দাম ৬ থেকে ১২ লাখ টাকা চাওয়া হচ্ছে। গরুগুলোর সাইজ এবং শিং বেশি বড় হওয়ায় অনেক মানুষ আগ্রহ নিয়ে তা দেখছেন এবং দরদাম করছেন।
উটের পাশের একটি শেডেই দেখা যাচ্ছিল ১০টি দুম্বা একটি ঘরে বাঁধা। আর এসব দুম্বা ক্রেতার চেয়ে বেশি মানুষ উৎসুকভাব দেখতে এসেছেন। অনেকেই দাম জিজ্ঞাসা করছেন। অনেকে আবার সাধ্যের মধ্যে দরদামও করছেন। উটের ঘরের সামনে ছোট একটি কাগজে লেখা দুম্বার গায়ে হাত দেওয়া নিষেধ।
দুম্বা বিক্রেতা আনিস শেখ জানান, দুম্বাগুলো কিনতে হয়েছে পাকিস্তান থেকে। তবে তিনি এগুলো কিনেছেন ভারতীয় এক ব্যবসায়ীর মাধ্যমে। প্রতি বছর তিনি এই হাটে দুম্বা বিক্রি করেন। এবার একটু বেশি নিয়ে এসেছেন দুম্বা। তবে এখনো একটিও বিক্রি করতে পারননি।
অপরদিকে গাবতলীর পশুর হাটের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ ও র্যাবের পক্ষ থেকে আলাদা দুটি কন্টোল রুম বসানো হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে ওয়াচ টাওয়ার। এসব ওয়াচ টাওয়ার এবং কন্টোল রুম থেকে হাটের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।
গরু ব্যবসায়ীদের নানাভাবে সচেতনতামূলক পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে হাট ইজারাদারের পক্ষে। হাটের প্রবেশ পথেই সাজানো হয়েছে সুবিশাল একটি গেট। গেটের চারপাশে বসানো হয়েছে মাইক। এসব মাইকে সর্তকতা বাণীর পাশাপাশি, ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে নানা ছন্দে হাটের বর্ণনা প্রচার করা হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবার রাজধানীতে কোরবানির পশু বেচাকেনার জন্য দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট ২৪টি হাট বসানো হচ্ছে। এর মধ্যে গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাটসহ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১০টি এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৪টি। হাট ইজারার নিয়ম অনুযায়ী, আগামীকাল ৭ আগস্ট থেকে এসব হাটে পশু বেচাকেনা আনুষ্ঠনিকভাবে শুরু হবে।