স্বদেশ ডেস্ক:
ইউরোপে মাঙ্কিপক্সের প্রকোপ বেড়েই চলেছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আফ্রিকার পশ্চিম ও মধ্যাঞ্চলে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হাজারো রোগী শনাক্ত হলেও ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলোয় এতদিন রোগটির প্রাদুর্ভাব দেখা যায়নি। তবে গত কয়েকদিনে সেই চিত্র বদলে গেছে। শুক্রবার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচ) জানিয়েছে, এরই মধ্যে ইউরোপের ১১টি দেশে রোগটি ছড়িয়ে পড়েছে। আক্রান্তের সংখ্যাও ছাড়িয়েছে ১০০। তবে কারা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে মাঙ্কিপক্সে?
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য নিরাপত্তা সংস্থা বলছে, পুরুষদের মধ্যে যারা নিজেদের সমকামী বা উভকামী পরিচয় দেয় কিংবা যেসব পুরুষ অন্য পুরুষের সঙ্গে যৌনতায় জড়ায় সেখানে এ রোগ বেশি ছড়ায়। তাদের সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পর্তুগালে সমকামীরা চিকিৎসা নেন এমন হাসপাতালে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়েছে বলে গ্লোবাল নিউজের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
ইউনিভার্সিটি অব সাস্কটচেওয়ানের ভ্যাকসিন অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ অর্গানাইজেশনের ভাইরোলজিস্ট এঞ্জেলা রাসমুসেন বলেন, সমকামী পুরুষের গোত্রকে ঐতিহাসিকভাবে ভাইরাস সংক্রমণের জন্য দায়ী করা হয়। এ কারণে আমি সমকামিতার সঙ্গে মাঙ্কিপক্স ছড়ানোর বিষয়টি নিয়ে সম্পূর্ণ নিশ্চিত না হয়ে কিছু বলতে চাই না।
রামুসেন আরও বলেন, প্রত্যেকেরই মনে রাখা উচিত যে কীভাবে মাঙ্কিপক্স সংক্রমণ হতে পারে। এটি বাতাসের মাধ্যমে, অ্যারোসলের মাধ্যমে, প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়াতে পারে। তবে সংক্রামিত ব্যক্তির সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক নৈকট্যের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে।
ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির অণুজীব বিশেষজ্ঞ ড. সাফা বারকাটি বলেন, এটা (মাঙ্কিপক্স) পুরুষের সঙ্গে পুরুষের যৌনতা হয় এমন সম্প্রদায়ে বেশি হয়ে থাকে।
অবশ্য, বিজ্ঞানীরা করোনাভাইরাস মহামারির মতো সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন না। সার্স-কভ-২ ভাইরাসের মতো সহজে মাঙ্কিপক্স ছড়ায় না বলে তারা মনে করছেন। মাঙ্কিপক্স সাধারণ একটি ভাইরাসজনিত মৃদু রোগ। এটি প্রাণীবাহিত। এর উপসর্গের মধ্যে রয়েছে জ্বর ও ফুসকুড়ি।
বানরে শনাক্ত হওয়া রোগটি ঘনিষ্ঠ স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। তবে আফ্রিকার বাইরে রোগটিতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা এতদিন পর্যন্ত বিরল ছিল। ফলে ইউরোপসহ যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ায় রোগটি ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগের জন্ম দিয়েছে।