স্বদেশ ডেস্ক:
নিজের সৎভাই রাজপুত্র হামজাকে গৃহবন্দি রাখার আদেশ দিয়েছেন মধ্যপ্রাচ্যের দেশ জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ। গতকাল বৃহস্পতিবার এ আদেশ দেন তিনি।এর আগে ক্ষমতা দখলের জন্য অভ্যুত্থান করে ব্যর্থ হয়েছেন হামজা।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার খবরে বলা হয়, সৎভাইকে গৃহবন্দির আদেশ সংক্রান্ত এক বিবৃতি দেন বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ। বিবৃতিতে হামজা মানসিকভাবে সুস্থ নন বলে দাবি করেন তিনি।
জর্ডানের বাদশাহ তার বিবৃতিতে বলেন, প্রিন্স হামজার বিষয়ে একটি ডিক্রি জারি হয়েছে। এই ডিক্রি অনুযায়ী, এখন থেকে তাকে সবসময় ঘরে অবস্থান করতে হবে। তিনি বাইরের কারো সঙ্গে যোগাযোগ ও কোথাও যাতায়াত করতে পারবেন না। রাজপরিবারবিষয়ক আইন অনুযায়ী গঠিত পরিষদের সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতেই এ ডিক্রি জারি করা হয়েছে।
নিজের সৎভাই সম্পর্কে আব্দুল্লাহ বলেন, ‘মানসিকভাবে তিনি (হামজা) সুস্থ নয়, এক ধরনের বিভ্রান্তিতে ভুগছেন এবং এই বিভ্রান্তিও নতুন কোনো ব্যাপার নয়। তিনি বরাবরেই জাতীয় স্বার্থের চেয়ে নিজের স্বার্থকে গুরুত্ব দিতে ভালোবাসেন। বছরের পর বছর ধরে যে পথে তিনি চলছেন, তা ভুল। বহুবার তিনি নিজেকে সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং প্রত্যেকবারই সেই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করেছেন।’
এর আগে গত বছর ফেব্রুয়ারিতে আবদুল্লাহকে ক্ষমতাচ্যুত করতে জর্ডানের সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগসাজশ করে অভ্যুত্থান ঘটানোর পরিকল্পনা করেছিলেন হামজা। সে অভ্যুত্থান ব্যর্থ হলে ‘ষড়যন্ত্রে’ যুক্ত থাকার অভিযোগে দুই জন সরকারি কর্মকর্তাকে গত বছর গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের প্রত্যেককে ১৫ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সাজাপ্রাপ্ত দুই সরকারি কর্মকর্তা হলেন জর্ডানের রাজকীয় আদালতের সাবেক প্রধান বিচারপতি বাসেম আওয়াদুল্লাহ ও সৌদি আরবে জর্ডানের সাবেক রাষ্ট্রদূত শরিফ হাসান বিন জাইদ। রাজকীয় আদালতে বিচার চলাকালে দুজনই তাদের অপরাধ স্বীকার করেছেন। সেই থেকে দুজনই বর্তমানে কারাগারে আছেন।
তবে রাজপুত্র হামজাকে অভ্যুত্থানচেষ্টার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করা হয়নি। এতদিন তার প্রতি বড় ধরনের শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থাও নেওয়া হয়নি।
তবে গত মাসে জর্ডানের রাজকীয় আদালত একটি বিবৃতি দেন। সেই বিবৃতিতে বলা হয়, রাজপুত্র হামজা তার সৎভাই বাদশাহকে ক্ষমতাচ্যুত করতে অভ্যুত্থানের পরিকল্পনার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।
তখন সে বিবৃতির প্রতিবাদ করেছিলেন হামজা। তিনি তখন বলেছিলেন তিনি প্রয়োজনে ‘প্রিন্স’ পদবি ছেড়ে দিতে প্রস্তুত আছেন।