স্বদেশ ডেস্ক:
টানা আটদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে মারা গেছেন যৌতুকের জন্য স্বামীর দেওয়া আগুনে দগ্ধ সেই গৃহবধূ সাদিয়া আক্তার। আজ শনিবার ভোর সাড়ে ৪টার সময় ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। তিনি দেবিদ্বার উপজেলার পদ্মকোট গ্রামের মো. ফরিদুল আলম অপুল সরকারের মেয়ে।
সাদিয়ার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তার চাচা মো. আলমগীর হোসেন আলম। শনিবার সকাল ৯টায় ঢাকার শাহবাগ থানা থেকে তিনি জানান, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করতে বলেছেন এজন্য থানায় এসেছি। লাশ পোস্টমর্টেম করার যাবতীয় প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এবার সাদিয়ার লাশ দেবিদ্বারে নিয়ে যাব।
জানা গেছে, গত ২৩ এপ্রিল শনিবার যৌতুকের টাকার জন্য গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন তার স্বামী আসাদ সরকার। আগুন দেওয়ার পর প্রতিবেশীদের জানানো হয় গ্যাসের চুলা থেকে আগুনে দগ্ধ হয়েছে সাদিয়া। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
চিকিৎসাধীন অবস্থায় ‘গ্যাসের চুলা থেকে আগুনে দগ্ধ হয়েছে’- এ কথা শুনলে একটি ভিডিও বার্তায় সাদিয়া জানায়, যৌতুকের টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তার স্বামী আসাদ গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। টাকা না দিলে তাকে আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলবে বলে কয়েকবার হুমকি দিয়েছে। বিয়ের পর তার পরিবারসহ সে আমাকে বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিতে চাপ দিতো, বেকার বাবার কাছে টাকা চাইতে পারব না বললে আমার ওপর নির্যাতন চালাতো।
সাদিয়ার এমন একটি ভিডিওবার্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে চারদিকে তোলপাড় শুরু হয়। পরে দেবিদ্বার থানা পুলিশ স্বামী আসাদকে আটক করে।
আসাদ দেবিদ্বার উপজেলার গুনাইঘর গ্রামের নুরু সরকারের ছেলে। তিনি সাদিয়াকে নিয়ে পৌর এলাকার বানিয়াপাড়ায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। সাদিয়া ওই ভাড়া বাসায় অগ্নিদগ্ধ হয়।
হাসপাতাল থেকে সাদিয়ার ছোট বোন নাদিয়া আক্তার জানায়, পোস্টমর্টেম শেষে লাশ বাড়িতে নিয়ে যাব। আমরা আসাদের ফাঁসি চাই।
এ ব্যাপারে দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আরিফুর রহমান জানান, সাদিয়া হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার ঘটনায় তার স্বামীকে ইতোমধ্যে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। শিগগিরই থানায় দায়ের করা মামলাটি হত্যা মামলায় রুপান্তর করার প্রক্রিয়া শুরু হবে।