শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ পূর্বাহ্ন

সংবাদ শিরোনাম :
শুভেচ্ছা বিনিময়েও ‘নিরপেক্ষ সরকার’

শুভেচ্ছা বিনিময়েও ‘নিরপেক্ষ সরকার’

স্বদেশ ডেস্ক:

করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসায় এবার ঈদে এলাকায় ছুটছে মানুষ। নিজ নিজ এলাকায় যাচ্ছেন বিএনপি নেতারাও। তারা বলেন, তারা দুই উদ্দেশ্য নিয়ে এবার ঈদে এলাকায় যাচ্ছেন। এক হচ্ছে, আত্মীয়স্বজন ও এলাকাবাসীর সঙ্গে ঈদ উদযাপন করা। দুই. বিএনপির চলমান নিরপেক্ষ সরকার আন্দোলনের পক্ষে জনমত গঠন করা। এ জন্য ঈদের পরদিন নানা ধরনের কর্মসূচিও রেখেছেন তারা। ঢাকায় থাকা নেতারাও নিরপেক্ষ সরকার ইস্যুতে জাতীয় ঐক্য গঠন করতে অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের বাসায় ঈদ উপলক্ষে মিলিত হবেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় আমাদের সময়কে বলেন, আমাদের দলের সিদ্ধান্ত আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে না। তাই এই মুহূর্তে আমাদের ধ্যানজ্ঞান সব কিছুই নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা। এ জন্য প্রয়োজন রাজপথে

দুর্বার আন্দোলন। এ লক্ষ্যে আমাদের প্রস্তুতি চলছে। ঈদে যেহেতু নেতাকর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় যাচ্ছেন, সেখানে তারা নিরপেক্ষ সরকারের পক্ষে জনমত গড়তে কাজ করবেন।

গত মার্চ মাসে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান একটি ফর্মুলা তুলে ধরেন। তা হচ্ছে- নির্বাচনের আগে নিরপেক্ষ সরকার এবং নির্বাচনের পরে জাতীয় সরকার। চলতি রমজান মাসজুড়ে বিভিন্ন ইফতার অনুষ্ঠানপূর্ব সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভাসহ অন্যান্য কর্মসূচিতেও এ ফর্মুলাকে সমর্থন করে বক্তব্য দেন নেতাকর্মীরা।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিরাজগঞ্জ-৫ আসন থেকে বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করা আমিরুল ইসলাম খান আলীম আমাদের সময়কে বলেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নতুন ফর্মুলা ও নিরপেক্ষ সরকার আন্দোলনের পক্ষে এবার ঈদে জনমত গঠনে বেশি সময় ব্যয় হবে। ঈদপরবর্তী নেতাকর্মীদের মিলনমেলাসহ নানা কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। আন্দোলনের পক্ষে কীভাবে জনমত গড়া যায়- তা নিয়ে কাজ করা হবে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি নিপুণ রায় চৌধুরী আমাদের সময়কে বলেন, এখন আমরা নির্বাচন নয়, আন্দোলন নিয়ে ভাবছি। দেশের মানুষ যদি ভোট দিতে না পারে সেই নির্বাচনে গিয়ে আওয়ামী লীগকে বৈধতা দেওয়ার তো কোনো মানে নেই। আমাদের নেতা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমাদের যে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, সেই অনুযায়ী নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ করা, আন্দোলনের পক্ষে সাধারণ মানুষকে সম্পৃক্ত করাসহ নানা কর্মসূচি আমরা গ্রহণ করেছি।

বিএনপি নেতারা জানান, নিজ নিজ এলাকার নেতাকর্মীদের পাশাপাশি তারা বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। দিচ্ছেন ঈদ উপহার। গরিব ও অসহায় মানুষের মাঝে জাকাতের কাপড়, টাকাসহ ঈদসামগ্রী দিচ্ছেন। কেউ কেউ প্রতিনিধিদের মাধ্যমে তা এলাকায় পাঠিয়ে দিয়েছেন। বিভিন্ন এলাকায় চোখে পড়ছে ঈদের শুভেচ্ছা সংবলিত পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গুলশানের ভাড়া বাসা ফিরোজায় রয়েছেন। সেখানে বোন সেলিমা ইসলাম ও ভাই শামীম এস্কান্দারসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্যদের নিয়েই ঈদ উদযাপন করবেন তিনি। ঈদের দিন বিএনপির সিনিয়র নেতারা তার সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে। সম্প্রতি নিজ এলাকায় ঘুরে এসেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি ঢাকায় ঈদ করবেন। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান নরসিংদী ও আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামে নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন। ঢাকায় ঈদ করবেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকার, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।

দলের ভাইস চেয়ারম্যানদের মধ্যে মো. শাহজাহান, আবদুল আউয়াল মিন্টু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ অনেকে ঢাকায় আছেন। ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু নোয়াখালীতে ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বরিশালের নিজ এলাকায় ঈদ করবেন।

অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অধিকাংশ নেতাই ঢাকায় ঈদ করছেন। গণফোরামের ড. কামাল হোসেন, বিকল্পধারার একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, জেএসডির আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, এলডিপির সভাপতি অলি আহমেদ ও মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, এলডিপির আরেক অংশের সভাপতি আব্দুল করিম আব্বাসী ও মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম ঢাকায় ঈদ উদযাপন করবেন। অবশ্য তাদের কেউ কেউ ঢাকায় ঈদের নামাজ আদায় করেই নির্বাচনী এলাকায় যাবেন বলে জানিয়েছেন।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877