স্বদেশ ডেস্ক:
গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানা এলাকা থেকে অভিনব কায়দায় মাদক পরিবহনকালে মাদক চোরকারবারী চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র্যাব)। এ সময় বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ও অন্যান্য মাদক দ্রব্যও উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার-বিন-কাশেম এসব কথা জানিয়েছেন।
তিনি জানান, গতকাল রাতে র্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানা এলাকায় কতিপয় মাদক ব্যবসায়ী ঢাকার দিকে আসছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে আভিযানিক দলটি বাসন থানার ওয়্যারলেস গেইট টু বিআরটিসি ডিপো রোডস্থ টিএন্ডটি অফিসের দক্ষিণ পাশে অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানকালে চারজন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন, মো. ফারুক হোসেন (৩৭), মো. শফিকুল ইসলাম ওরফে রমজান (২৯), আক্তারা বেগম (২৮) ও গৌতম চন্দ্র শীল (৩২)।
তিনি আরও জানান, এ সময় আসামিদের কাছ থেকে ৭ হাজার ৫৮৫ পিস ইয়াবা, ২১ ক্যান বিয়ার, ২৩ বোতল ফেনসিডিল, ৯টি মোবাইল ফোন, একটি মোটরসাইকেল ও এক লাখ ৬০ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, তারা একটি সংঘবদ্ধ মাদক চোরাচালানকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা কক্সবাজার জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা টেকনাফ দিয়ে মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে চোরাচালানের মাধ্যমে ইয়াবার চালান বিমান, ট্রেন অথবা সড়ক পথে রাজধানী ঢাকাসহ আশপাশে এলাকায় নিয়ে আসে।
জিজ্ঞাসাবাদের তথ্যের ভিত্তিতে ইয়াবা পাচারের অভিনব কৌশল সম্পর্কে র্যাব জানায়, তারা ইয়াবা ট্যাবলেটের চালান পেটের ভেতরে করে টেকনাফ থেকে ঢাকায় নিয়ে আসত। তারা তাদের এই অভিনব পন্থার প্রাথমিক পর্যায়ে ইয়াবা ট্যাবলেটের চালানটি ৫০ পিস করে কনডমের ভিতরে রাখে। এরপর কসটেপ পেচিয়ে তা খেয়ে ফেলে। যাতে ইয়াবা ট্যাবলেটগুলো নষ্ট না হয়। পরবর্তীতে ইয়াবা ট্যাবলেটের চালানটি ঢাকায় নিয়ে আসার পর বেশি করে পানি অথবা অন্য খাবার খেলে পেটে চাপ পরে এবং খালি জায়গায় তা বের করে। তখন ইয়াবার চালানটি পলিথিনের জিপারে করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় হস্তান্তর করতেন তারা।
গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, সে বিগত প্রায় ১০ বছর যাবত গার্মেন্টেসে চাকুরি করত। বর্তমানে সে এলাকায় ইটের ব্যবসা করে। ইটের ব্যবসায় লাভবান না হওয়ায় স্বল্পসময়ে অধিক লাভবানের আসায় সে মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। গ্রেপ্তার অপর আসামি গৌতম তার ইয়াবা ট্যাবলেট ব্যবসার কাজে সহযোগিতা করে।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামি শফিকুল’কে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে র্যাব জানায়, সে একজন গার্মেন্টস ব্যবসায়ী। ফারুক গাজীপুরের দুলালের মাধ্যমে মাদকদ্রব্য ইয়াবা ট্যাবলেটের ব্যবসা করে আসছে। এছাড়াও গ্রেপ্তার আক্তারা ও গৌতম তাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করে বলে জানিয়েছেন তিনি।