রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২১ পূর্বাহ্ন

চোখের জন্য তৈলাক্ত মাছের উপকারিতা

চোখের জন্য তৈলাক্ত মাছের উপকারিতা

স্বদেশ ডেস্ক:

মাছ হলো মানবদেহের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি খাবার। শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় হয় ফ্যাটি অ্যাসিডের। আর এর অন্যতম উৎস হলো তৈলাক্ত মাছ। সপ্তাহে অন্তত দুবার এ ধরনের মাছ খেলে তা ডায়াবেটিসে দৃষ্টিহীনতার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে। তবে ফ্যাটি অ্যাসিডের জন্য প্রতিদিন যে মাছই খেতে হবে, বিষয়টা এমন নয়।

যে কারণে খেতে হবে তৈলাক্ত মাছ : গবেষকরা বলছেন, প্রতিসপ্তাহে অন্তত দুবার সব মানুষের তৈলাক্ত মাছ খাওয়া উচিত। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীর। মধ্যবয়সে চোখের জটিলতার ঝুঁকি অনেকাংশে কমাতে সহায়তা করে এ মাছ। গবেষকদের মতে, টাইপ-২ ডায়াবেটিস অসংখ্য মানুষের জন্য বাড়তি ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে দৃষ্টিশক্তি-বিধ্বংসী চোখের রোগ। অনেক ডায়াবেটিস রোগীই ডায়াবেটিস রেটিনোপ্যাথি রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। এ রোগে বিশ্বের অসংখ্য ডায়াবেটিস রোগী অন্ধ হয়ে যান। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগীর বয়স যতই বাড়তে থাকে, ততই এ রোগের ঝুঁকি বাড়তে থাকে।

মাছের তেলের উপকারিতা : চোখের রেটিনার জন্য প্রয়োজন হয় লং-চেইন ওমেগা-থ্রি পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড। এ চাহিদা পূরণ করতেই প্রয়োজন মাছের তেলের মতো খাবারগুলোর। তবে শুধু মাছের তেলেই নয়, এ ফ্যাটি অ্যাসিড পাওয়া যায় আরও কিছু খাবারেও। এসবের মধ্যে রয়েছে এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল ও বিভিন্ন ধরনের বাদাম। এ বিষয়টি নিয়ে গবেষকরা ২ হাজার ৬১১ জন অংশগ্রহণকারীর ওপর অনুসন্ধান চালান। তারা দৈনিক ওমেগা-থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড প্রয়োজনীয় মাত্রায় দৈনিক গ্রহণ করতে থাকেন। এরপর তাদের বয়স, ছেলেমেয়ে, লাইফস্টাইল ও নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত বিষয়ের মাপকাঠিতে পর্যবেক্ষণ করা হয়। দেখা যায়, টাইপ-২ ডায়াবেটিস রোগীরা প্রতিদিন ৫০০ মিলিগ্রাম বা তার বেশি ওমেগা-থ্রি পলিস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড গ্রহণ করেন, তাদের চোখের বিশেষ সমস্যাটি ৪৮ শতাংশ কম হয়।

এ ছাড়া শরীরের নানা অঙ্গের জন্যও বেশ উপকারী মাছের তেল। যেমন- মস্তিষ্কের উন্নতিতে বিশেষ করে বৃদ্ধি ও বিকাশের জন্য আমিষের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে মাছের তেল।

হৃদরোগের সুস্থতায় নিয়মিত তেলযুক্ত মাছ খেলে হৃদরোগের আশঙ্কা এক-তৃতীয়াংশ কমে আসে। ক্যানসার রোধে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহজনিত রোগ, যেমন- বাত, আর্থ্রাইটিস রোগের ক্ষেত্রে এটি সাহায্য করে, ত্বক ভালো রাখে।

পেশি ও হাড় গঠনেও মাছের তেলের রয়েছে অনন্য ভূমিকা। বিপাক ক্রিয়া, দাঁত, পেশি ও হাড় গঠনে ভূমিকা রাখে মাছের তেল। ছোট কাঁটাযুক্ত মাছ ক্যালসিয়ামের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস। তাই ছোট মাছের গুণাগুণের শেষ নেই।

চোখের যে কোনো সমস্যা দেখা দিলেই শুরু থেকে নিকটস্থ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। তাতে রোগ নিয়ন্ত্রণে কিংবা সহজে নিরাময় করা সম্ভব হবে।

লেখক : চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন

সাবেক বিভাগীয় প্রধান, চক্ষুরোগ বিভাগ, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877