স্বদেশ ডেস্ক:
বিক্রি হওয়া একটি বড় বঁটি ও দুটি চাপাতিকে ভালোভাবে পেপারে মুড়ছেন এক কামার। কিন্তু তাতেও সন্তুষ্ট নন ক্রেতা। পরে ব্যাগ কিনে তার মধ্যে ভরলেন সেগুলো। তবে ক্রেতার অসন্তুষ্টি কামারের সঙ্গে নয়, বরং এ ধরনের ধারালো অস্ত্র বহনের সময় ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনির ভয় করছেন তিনি। গতকাল কারওয়ানবাজারের কামারপল্লীতে গিয়ে দেখা যায় এ দৃশ্য। ছেলেধরা গুজবের পর থেকেই বিক্রি কমে গেছে বলে জানান কামাররা। অথচ দুয়ারেই কোরবানির ঈদ।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, পশু জবাইয়ের বড় ছুরির দাম ১ হাজার ২০০ থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। ছোট ছুরি ২৫০ থেকে ৫৫০ টাকা। দেশি চাপাতি বিক্রি হয় কেজি হিসেবে, প্রতিকেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা। আর বিদেশি চাপাতির দাম পড়বে ৭০০ থেকে ২ হাজার টাকা কেজি। বঁটি প্রতিটির দাম পড়বে ৩০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। ছোট চাইনিজ কুড়াল পাওয়া যাবে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকায়।
ধানম-ি থেকে ছুরি কিনতে আসা আসলাম হোসেন আমাদের সময়কে বলেন, ‘গতবারের চেয়ে দাম কিছুটা বেশি। কিন্তু এগুলো এখন দৃশ্যমান হিসেবে বহন করা অনেকটা ঝামেলার। গণপিটুনির রোষানলেও পড়তে পারি। তাই ভালো করে পেঁচিয়ে আলাদা ব্যাগে করে নিয়ে যাওয়ার চিন্তা করছি।’
দাম বাড়ার বিষয়ে কামাররা জানান, গত বছরের তুলনায় লোহার দাম বেড়েছে। ১ হাজার ২০০ টাকা কেজির কয়লা বর্তমানে বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার টাকায়। কারিগরের ৬০০ টাকার মজুরিও বেড়ে হয়েছে ৮০০ থেকে হাজার টাকা। এসব কারণেই দা-বঁটির দাম বেড়েছে। তবে দামের চেয়ে বহনের নিরাপত্তাই বেশি প্রাধান্য পাচ্ছে বলে জানান কারওয়ানবাজারের কামার মো. বিল্লাল হোসেন। আমাদের সময়কে তিনি বলেন, ‘ছেলেধরা গুজব ছাড়ানোর পরই এ ধরনের সরঞ্জাম কেনা কমে গেছে। অন্যান্য সময় কোরবানির দুই সপ্তাহ আগে থেকে অর্ডার আসত। এখন অর্ডার তো দূরের কথা, সাধারণভাবেই বিক্রি হচ্ছে না।’
কামার বেলাল বলেন, ‘যে কয়জন ক্রেতা দা-বঁটি ও ছুরি কিনছেন, তারা ভালোভাবে কাগজে মুড়িয়ে আলাদা ব্যাগে করে নিয়ে যাচ্ছেন, যাতে বাইরে থেকে এর আদল না বোঝা যায়।’