স্বদেশ ডেস্ক:
বেশ কিছু দিন ধরে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র দ্বন্দ্বের মাত্রা অনেকটাই বেড়ে গেছে। সম্প্রতি পারস্য উপসাগরে হরমুজ় প্রণালীর কাছে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ইরান মার্কিন ড্রোন নামানোয় উত্তেজনা আরো বেড়েছে। ইরানের তেল সরবরাহে নিষেধ চাপিয়ে সে দেশের সরকারকে কোণঠাসা করতে চেয়েছে ওয়াশিংটন। সেই সূত্রে ভারতের সক্রিয় ভূমিকায় খুশি আমেরিকা। হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘ভারতের মতো দারুণ বন্ধুর সহযোগিতা পেয়ে আমেরিকা অত্যন্ত সন্তুষ্ট।’’ ভারত সম্প্রতি ইরান থেকে তেল আমদানি লক্ষ্যণীয় হারে কমিয়ে দিয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জ়রিফের ওপরেও নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা। এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পরই হোয়াইট হাউসের অফিসার বলেছেন, ‘‘আমরা ভারতের মতো অসাধারণ বন্ধুর সহযোগিতা পেয়ে সন্তুষ্ট। চীনের মতো দেশও বুঝেছে, ব্যবসার জন্য সঙ্গী হিসেবে ইরানের তুলনায় আমেরিকাই ভালো।’’
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভারতে যে হারে জ্বালানির চাহিদা বাড়ছে, তাতে ইরান থেকে ব্যাপক হারে তেল আমদানি কমিয়ে (প্রায় শূন্যের কাছাকাছি) দেয়া কিছুটা ব্যতিক্রমী পদক্ষেপ। শুধুমাত্র আমেরিকার সঙ্গে সহযোগিতা বাড়ানোর জন্যই ভারত এই পথে হাঁটছে। ইরানের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও ভারত এই পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
একটি সূত্রে দাবি, জুলাই মাসে ইরানের তেল রফতানি দিনপ্রতি এক লক্ষ ব্যারেলে এসে ঠেকেছে। এর আগে ইরানের তেল রফতানির রেকর্ড সব চেয়ে কম হয়েও দিনপ্রতি ছিল, ৭ লক্ষ ৮১ হাজার ব্যারেল। ট্রাম্প প্রশাসনের চাপানো নিষেধাজ্ঞার জেরেই এমনটা ঘটছে বলে দাবি ওই সূত্রে। হোয়াইট হাউসের ওই অফিসার জানিয়েছেন, ভারতের জ্বালানির চাহিদার কথা আমরা জানি। তার পরও তারা সহযোগিতার যে পদক্ষেপ দেখিয়েছে, তার প্রশংসা করে যেতেই হবে। অন্যতম জ্বালানি উৎপাদক দেশ হিসেবে আমরাও বিশ্ববাজারে সাহায্য করব, যাতে ভারত শক্তি ক্ষেত্রে অসুবিধায় না পড়ে।
হোয়াইট হাউসের আর এক অফিসারের বক্তব্য, বিশ্ব জুড়ে আমেরিকার যারা বন্ধু-দেশ ও ব্যবসায়িক সঙ্গী, তারা যাতে ইরানের উপরে চাপানো নিষেধ লঙ্ঘন না করে, সে বিষয়টির উপরে নজর দেয়া হচ্ছে। নিষেধ না মানলে তার ফল কী হবে, তা-ও বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে। আর এই সব পদক্ষেপের ইতিবাচক ফল মিলছে বলে দাবি ওই অফিসারের।