স্বদেশ ডেস্ক:
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাচন অফিসার আব্দুল হান্নান এবং একজন মেম্বার প্রার্থী অডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সেখানে ওই প্রার্থীকে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে জিতিয়ে দেয়ার কন্ট্রাক করেছেন তিনি। সেজন্য যুক্তিও দেখিয়েছেন নানা ধরনের।
আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে এই লেন-দেন হয়েছে তাদের মধ্যে। এই বিষয়ে ভাইরাল অডিওটি এই সংবাদদাতার হস্তগত হয়েছে।
ফাঁস হওয়া অডিও সম্পর্কে রফিকুল ইসলাম নামের ওই মেম্বার প্রার্থী নয়া দিগন্তকে জানিয়েছেন, তিনি দুই দফায় সাড়ে চার লাখ টাকা ইতোমধ্যেই দিয়েছেন ওই নির্বাচন কর্মকর্তাকে। আর সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কর্মকর্তা বলেছেন, সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে একটি পক্ষ তার বিরুদ্ধে এসব অডিও বানিয়েছে। এ ব্যাপারে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। এ নির্বাচনে বালারহাট ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বার রফিকুল ইসলামকে জিতিয়ে দেয়ার জন্য ফোনে কন্টাক করছেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আবদুল হান্নান।
অডিওতে কথোপকথনে জানা যায়, আবদুল হান্নান ওই ইউপি মেম্বারকে বোঝাচ্ছেন, যেহেতু নির্বাচন করতে গেলে প্রতিদিনই ১০ হাজার করে টাকা ব্যয় হবে তাতে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা খরচ হবে। তাতে নির্বাচিত হওয়ার কোনো গ্যারান্টিও নেই, তাই সেটি না করে, তার সাথে পাঁচ লাখ টাকার চুক্তি করলে তিনি যেভাবেই হোক জিতিয়ে দিবেন। এক্ষেত্রে তিনি গ্যারান্টি হিসেবে জেতাতে না পারলে টাকা ফেরত দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ওই প্রার্থীকে।
অডিওতে আরো রয়েছে, আব্দুল হান্নান বলছেন প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার প্রশাসনের সহযোগিতায় তিনি তাকে জিতিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দেন। পাশাপাশি প্রার্থী এক শ’ ব্যালট পেপার দাবি করলেও সেটিও দেয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন তিনি।
এ ব্যাপারে বুধবার রাতে বালারহাট ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ফুটবল মার্কার মেম্বার পদপ্রার্থী রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, দুই দফায় ওই নির্বাচন কর্মকর্তাকে তিনি সাড়ে চার লাখ টাকা জেতার জন্য চুক্তি অনুযায়ী দিয়েছেন।
এদিকে পুরো অডিও ফাঁসের বিষয়টি অস্বীকার করে নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেছেন, একটি পক্ষ মিথ্যা ভিত্তিহীনভাবে তার বিরুদ্ধে এসব অডিও তৈরি করে ছড়িয়ে দিয়েছে। তিনি ওই রফিকুল ইসলামের কাছ থেকে কোনো টাকা গ্রহণ করেননি। রফিকুলকে প্রধান আসামি করে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান।
এ বিষয়ে জানতে মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা-তুজ-জোহরার সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিক বার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
নির্বাচন বিশ্লেষকেরা বলছেন, ব্যক্তিগতভাবে কোনো কর্মকর্তার দ্বারা পুরো নির্বাচনের ওপর যেন প্রভাব না পড়ে সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া দরকার।