স্বদেশ ডেস্ক: ফেনীর আলোচিত মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় আজ মঙ্গলবার ২৪ তম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে আজ আটজন ডাক্তারের সাক্ষ্য দেওয়ার দিন ধার্য করা হয়েছে।
তারা হচ্ছে- ময়নাতদন্ত রিপোর্ট প্রস্তুতকারী ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ, ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. প্রদীপ বিশ্বাস, ঢাকা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. জান্নাতুল ফেরদৌস।
ঘটনার দিন নুসরাতকে সাময়িক চিকিৎসা প্রদানকারী ফেনী জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আবু তাহের, সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আরমান বিন আব্দুল্লাহ।
এ ছাড়া নুসরাতের মৃত্যুকালীন জবানবন্দি গ্রহণকারী সাক্ষী ঢামেকের সহকারী রেজিস্টার ডা. মোহাম্মদ ওবায়দুল ইসলাম, ঢামেকের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. এ কে এম মনিরুজ্জামান, ঢামেকের বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারী বিভাগের সিনিয়র স্টার্ফ নাস অর্চনা পাল। সাক্ষীরা শুরুতে আদালতে তাদের সাক্ষ্য উপস্থাপন করবেন; এর পর আসামি পক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করবেন।
এ মামলার ৯২ জন সাক্ষীর মধ্যে এর আগে ৬১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। গত ২৭ জুন থেকে এ মামলার সাক্ষ্য কার্যক্রম শুরু হয়। শুরুর পর থেকে প্রতি কর্মদিবসে আদালত তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করছেন।
এর আগে গত ২৭ জুন মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী নুসরাতের বড় ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। পরে রাফির বান্ধবী নিশাত সুলতানা ও সহপাঠি নাসরিন সুলতানা, মাদ্রাসার পিয়ন নুরুল আমিন, নৈশ প্রহরী মো. মোস্তফা, কেরোসিন বিক্রেতা লোকমান হোসেন লিটন, বোরকা দোকানদার জসিম উদ্দিন, দোকানের কর্মচারী হেলাল উদ্দিন ফরহাদ, নুসরাতের ছোট ভাই রাশেদুল হাসান রায়হান, জহিরুল ইসলাম, হল পরিদর্শক বেলায়েত হোসেন, নুসরাতের মা শিরিন আখতার, শিক্ষক আবুল খায়ের, মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটি সাবেক সদস্য শেখ আবদুল হালিম মামুন, সোনাগাজী মাদ্রাসার দপ্তরী মো. ইউসুফ, সোনাগাজী মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. হোসাইন, সোনাগাজী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. ইয়াছিন, অ্যাম্বুলেন্স চালক নুরুল করিম, সোনাগাজী ফাজিল মাদ্রাসার পরীক্ষার কেন্দ্র সচিব মাওলানা নুরুল আফসার ফারুকী, সোনাগাজী মাদ্রাসার ছাত্রী তানজিনা বেগম সাথী, মাদ্রাসা ছাত্রী বিবি জাহেদা বেগম তামান্না, মাদ্রাসার বাংলা বিভাগের প্রভাষক খুজিস্তা খানম, আয়া বেবী রাণী দাস, সহপাঠী আকলিমা আক্তার, কায়সার মাহমুদ, মাদ্রাসার ছাত্রী ফাহমিদা আক্তার হামদুনা, নাসরিন সুলতানা, হল পরিদর্শক কবির আহম্মদ, তাহমিনা আক্তার, বিবি হাজেরা, আবু বকর সিদ্দিক, স্থানীয় বাসিন্দা মো. আকবর হোসেন, ফজলুল করিম, রাবেয়া আক্তার, মোয়াজ্জেম হোসেন, জাফর ইকবাল, প্রফেসর মুহাম্মদ মহিউদ্দিন চৌধুরী, হাফেজ মোবারক হোসেন, মো. ইব্রাহীম, রেজা মো.এনামুল হক, মো. নুর উদ্দিন, আকরাম হোসেন, এমদাদ হোসেন পিংকেল, মো. শাহজাহান, মো. আবুল কাশেম ও মো.সেলিনুর রেজা, জেল সুপার রফিকুল কাদের, ডেপুটি জেলার মনির হোসেন, কারারক্ষী মো. শাহনেওয়াজ, মো. রিপন ও ছবি রঞ্জন ত্রিপুরা এবং মোশারেফ হোসেন, মো. গোলাম মাওলা, নুসরাতের বাবা একেএম মুসা, চাচাতো ভাই মুহাম্মদ আলী ও মামা সৈয়দ সেলিমের সাক্ষ্য গ্রহণ ও জেরা শেষ হয়।
চলতি বছরের ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসার আলিম পরীক্ষার্থী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন নিপীড়নের দায়ে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গত ৬ এপ্রিল ওই মাদ্রাসা কেন্দ্রের সাইক্লোন শেল্টারের ছাদে নিয়ে অধ্যক্ষের সহযোগীরা নুসরাতের শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। টানা পাঁচদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ১০ এপ্রিল মারা যান নুসরাত জাহান রাফি।