স্বদেশ ডেস্ক:
অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ক্যাসিনোকাণ্ডে গ্রেপ্তার হওয়া যুবলীগের নামধারী নেতা গোলাম কিবরিয়া ওরফে জি কে শামীমের মা আয়েশা আক্তারের জামিনের আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ আদেশ দেন।
এদিনই আয়েশা আক্তার আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। তার পক্ষে জামিন শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান। দুদকের পক্ষে মোশাররফ হোসেন কাজল জামিনের বিরোধীতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে গত ১৬ নভেম্বর একই আদালত জিকে শামীম এবং তার মা আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে দুদকের দেওয়া চার্জশিট আমলে গ্রহণ করেন এবং পলাতক থাকায় আয়েশা আক্তারের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
প্রায় ৩শ’ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ থাকার অভিযোগে আসামিদের বিরুদ্ধে গত বছর চার্জশিট দাখিল করে দুদক। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক উপ-পরিচালক মো. সালাউদ্দিন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন জিকে বিল্ডার্সের কর্ণধার কথিত যুবলীগ নেতা গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম। এরপর তার বাসা ও অফিসে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ, অবৈধ অস্ত্র এবং মাদক উদ্ধার করে র্যাব। এসব ঘটনায় মামলার পাশাপাশি হরিণের চামড়া পাওয়ায় বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের মামলায় জি কে শামীমকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়ে জেলে পাঠান র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।
একই বছর ২১ অক্টোবর দুদক উপ-পরিচালক সালাউদ্দিন বাদী হয়ে ২৯৭ কোটি ৮ লাখ ৯৯ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেন। ১ বছরেরও বেশি সময় ধরে তদন্ত শেষে দুদক ২৯৭ কোটি ৩৯ লাখ ৯৯ হাজার কোটি টাকার সম্পদ থাকার তথ্য পায়।
চার্জশিটে বলা হয়, দুদক কর্মকর্তারা জানতে পেরেছেন আসামি শামীম ২০১৮-১৯ করবর্ষ পর্যন্ত ৫০ কোটি টাকার স্থাবর সম্পদের মালিক হয়েছেন। এর মধ্যে আয়কর নথিতে ৪০ কোটি ২১লাখ ৪০ হাজার ৭৪৪ টাকার তথ্য উল্লেখ করলেও মোট টাকার বৈধ উৎসের খোঁজ পায়নি দুদক।
এ ছাড়া জি কে শামীমের বাসা থেকে পাওয়া নগদ ১ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ও ৭ লাখ ৪৭ হাজার টাকার বিদেশি মুদ্রারও বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি। তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, আসামি শামীম ও তার মা আয়েশা আক্তারের নামে ১৬৫ কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকার এফডিআর, মায়ের নামে আরও ৪৩ কোটি ৫৭ লাখ ৪০ হাজার টাকার ব্যবসার অংশীদারিত্বের বৈধ কোনো উৎস খুঁজে পায়নি দুদক।
এ ছাড়া জিকেবি অ্যান্ড কোম্পানির শেয়ার, গাড়ি ও এফডিআর বাবদ ৩৬ কোটি ৩৫ লাখ ১৮ হাজার ৭১৯ টাকার অস্থাবর সম্পদের বৈধ উৎসও পাওয়া যায়নি।