স্বদেশ ডেস্ক: গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে গোসল করতে গিয়ে পদ্মায় ডুবে নিখোঁজ হওয়া নব দম্পতি স্ত্রীর লাশ পাওয়া গেছে। নিখোঁজ হওয়ার ৯ দিন পর স্ত্রী আঞ্জুমের লাশ পাওয়া গেলেও স্বামী ইমনের লাশ এখনো পাওয়া যায়নি।
তবে আঞ্জুমের লাশ পাওয়ায় ইমনের স্বজনরা তার লাশও পাওয়ার আশায় নদীর তীরে তাকিয়ে আছেন। গত ২১ জুলাই দুপুর ২ টার দিকে পদ্মা নদীতে গোসল করতে নেমে তীব্র স্রোতের টানে স্বামী-স্ত্রী নিঁখোঁজ হন। দৌলতদিয়া ৩নং ফেরিঘাট এলাকার আবু সাইদের মেয়ে আঞ্জুমের চাচাত বোনের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। সেই অনুষ্ঠানে অংশ নিতেই ইমন ও আঞ্জুম দৌলতদিয়ায় আসে। তারা বিয়ের অনুষ্ঠানে এসে ১০/১২ জন মিলে পদ্মা নদীতে গোসল করতে যান। এসময় একটি ফেরি তাদের পাশদিয়ে চলে গেলে ঢেউয়ের সৃষ্টি হয়। ওই ঢেউয়ের টানে আঞ্জুম কিছুটা নদীর ভেতরে চলে যায়। এসময় আঞ্জুমকে নদীর তীব্র স্রোতে ভেসে যেতে দেখে তাকে উদ্ধার করতে ইমন এগিয়ে যায়। এরপর তারা দুজনই মুহুর্তের মধ্যে নদীর তীব্র স্রোত ও প্রচন্ড ঘুর্ণীপাকে পড়ে তলিয়ে যায়। এরপর থেকেই তারা নিখোঁজ ছিলেন।
সোমবার দুপুরের পর দৌলতদিয়া ৬নং ফেরি ঘাটে পল্টুনের নীচে আঞ্জুমের লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দিলে তারা এসে লাশটি উদ্ধার করে।
স্বজনরা জানায়, মাত্র অল্প কিছুদিন আগে ইমন (২২) ও আঞ্জুম (১৮) একে অপরকে ভালোবেসে বিয়ে করে। নিখোঁজ হওয়ার তিনদিন আগে আঞ্জুমের চাচাত বোনের বিয়ের অনুষ্ঠানে তারা আসে। আঞ্জুম রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইজারা পাড়া গ্রামের আজিম শেখের মেয়ে ও ইমন মাদারীপুর জেলার কালকিনি উপজেলার তৌফিকচর গ্রামের মোশাররফ হোসেনের ছেলে। তারা ঢাকায় একই এলাকায় বসবাস করত।
দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম মন্ডল জানান, আমার ইউনিয়নের বাসিন্দা আবু সাইদের মেয়ের বিয়ের দাওয়াত খেতে এসে তার ভাতিজি ও তার স্বামী। এরপর তারা নদীতে গোসল করতে নেমে নিখোঁজ হয়। ৯ দিন পর সাইদের ভাতিজির লাশ আজ ভাসতে দেখে লোকজন আমাকে খবর দেয়।
আঞ্জুমের চাচা আবু সাইদ বলেন, আমার ভাতিজি আঞ্জুম ও তার স্বামী ইমন নিখোঁজ হওয়ার ৯দিন পর ভতিজির লাশ পাওয়া গেলেও তার স্বামীর লাশ এখনো পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে গোয়ালন্দ উপজেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাষ্টার আব্দুর রহমান বলেন, ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ দম্পতির উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিস, নৌপুলিশ, ডবুরী ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় তৎপরতা চালানো অব্যাহত ছিল। নদীর তীব্র স্রোতে সন্ধান কাজ কিছুটা ব্যাহত হলেও আমরা নদীর ভাটিতে ফরিদপুর ও মানিকগঞ্জ জেলায় তল্লাশি চালিয়েও তাদের কোন সন্ধান মেলেনি। অবশেষে আঞ্জুমের লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা খবর দিলে আমরা তার লাশ উদ্ধার করি। তবে তার স্বামীর লাশের সন্ধান হয়ত এভাবে মিলবে।