রবিবার, ০৫ মে ২০২৪, ০৩:৩৬ অপরাহ্ন

পরকিয়ার জেরে স্ত্রী হত্যা, স্বামীর ফাঁসি

পরকিয়ার জেরে স্ত্রী হত্যা, স্বামীর ফাঁসি

স্বদেশ ডেস্ক: সাতক্ষীরায় পরকিয়ার জের ধরে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্বামী বিজন মন্ডলের মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সাতক্ষীরার জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান সোমবার বিকালে এক জনাকীর্ণ আদালতে এ আদেশ দেন। এ সময় আসামি বিজন মন্ডল কাঠগোড়ায় উপস্থিত ছিলেন।

ফাঁসির দন্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামি বিজন মন্ডল (৪৭) সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের মনোহর মন্ডলের ছেলে।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার ফকরাবাদ গ্রামের অনিল কৃষ্ণ মন্ডলের মেয়ে কঙ্কাবতী মন্ডলের (৪০) সাথে একই উপজেলার গোয়ালডাঙ্গা গ্রামের মনোহর মন্ডলের ছেলে বিজন মন্ডলের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক বছর পর বিজন তার প্রতিবেশী দীপক মন্ডলের স্ত্রী সন্ধ্যা রানী মন্ডলের সাথে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। এর প্রতিবাদ করায় স্ত্রী কঙ্কাবতীর সঙ্গে স্বামী বিজনের প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকতো। এরই জের ধরে ২০১৭ সালের ১০ জুন রাত ১১টার দিকে বিজন তার স্ত্রী কঙ্কাবতীর মুখমন্ডল ও নাকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এতে জ্ঞান হারিয়ে যায় কঙ্কাবতীর। এসময় বিজন তার স্ত্রীর গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। এরপর কঙ্কাবতীর লাশ বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে বাথরুমের সামনে একটি আম গাছে ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার দেয় স্বামী বিজন ও তার পরিবারের সদস্যরা। লোকমুখে খবর পেয়ে পরদিন ১১ জুন সকালে বিজনের বাড়িতে গিয়ে কঙ্কাবতীর রক্তাক্ত লাশ দেখতে পায় তার বাবা অনিল কৃষ্ণ মন্ডল ও তার স্বজনরা। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে গ্রামবাসীর সামনে বিজন তার স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় তাকে আটক করে পুলিশে দেয়া হয়।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা অনিল কৃষ্ণ মন্ডল বাদি হয়ে ১১ জুন রাতে জামাতা বিজন কুমার মন্ডলসহ অজ্ঞাতনামা তিন জনের বিরুদ্ধে আশাশুনি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরদিন ১২ জুন বিজন সাতক্ষীরার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ জাহিদ হোসেনের কাছে পরকীয়া প্রেমে বাধা দেয়ার কারণে স্ত্রীকে নির্যাতন চালিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
দীর্ঘ তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা আশাশুনি থানার উপপরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক ২০১৭ সালের ১১ সেপ্টেম্বর এজাহার নামীয় আসামি বিজন কুমার মন্ডলের নামে আদালতে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

মামলাটি বিচারের জন্য উক্ত আদালতে প্রেরিত হলে বিচারক সাতক্ষীরা জেলা ও দায়রা জজ শেখ মফিজুর রহমান নয়জন সাক্ষীর জবানবন্দি ও প্রয়োজনীয় নথি পর্যালোচনা শেষে আসামি বিজন মন্ডলের বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে দোষী স্যাব্যন্ত করে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদ্বন্ড কার্যকর করার আদেশ দেন।

আসামি পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাড. মিজানুর রহমান পিণ্টু ও অ্যাড. আসাদুজ্জামান। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন জজ কোর্টের পিপি অ্যাড. তপন কুমার দাস।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877