স্বদেশ ডেস্ক:
ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে এসে মুদ্রার উল্টা পিঠ দেখলো বাংলাদেশ। মাউন্ট ম্যাঙ্গানুই টেস্টে একক আধিপত্য দেখানো টাইগাররা এই টেস্টে এসে অসহায়ত্ব বরণ করেছে। প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডের গড়া ৫২১ রানের বিপরীতে ১২৬ রানে গুটিয়ে যায় মুমিনুল হকরা। ফলোঅনে পড়ে দ্বিতীয় ইনিংসে লিটন দাসের সেঞ্চুরিতে লড়াই করলেও তাতে ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে পারেনি তারা। ১১৭ রান ও ইনিংস ব্যবধানে জয় তুলে সিরিজ সমতায় ফিরলো কিউইরা।
আজ মঙ্গলবার সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের তৃতীয় দিনে দ্বিতীয় ইনিংসের ব্যাট করে বাংলাদেশ। প্রায় তিন সেশন মিলিয়ে ৭৯ ওভার তিন বলে ব্যাট করে বাংলাদেশ। লিটনের সেঞ্চুরি মাখা ইনিংসে ২৭৮ রানে ইনিংস গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের।
ক্রাইস্টচার্চের সকালের রোদের আলোয় বাংলাদেশের শুরুটা ভালোই হয়েছিল। রান না আসলেও উইকেটে টিকে থাকার লড়াই করেছিলেন দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও নাঈম শেখ। এক ঘন্টার মতো ব্যাট করে সাদমান ফিরলে ভাঙে ২৭ রানের ওপেনিং জুটি। কাইল জেমিসনের বলে কট বিহাইন্ডের শিকার হন তিনি।
একপাশে বেশ আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কিউই পেসারদের মোকাবেলা করেন নাঈম। অন্য পাশে ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট করেন নতুন ব্যাটার নাজমুল হোসেন শান্ত। তাদের ৪৪ রানের জুটি ভাঙেন নেইল ওয়াগনার। ৩৬ বলে ২৯ রান করে বোল্টের ক্যাচ হয়ে ফেরেন শান্ত।
অধিনায়ক মুমিনুল হকের সঙ্গেও বেশ খানিকটা সময় ক্রিজে ছিলেন এই টেস্টে অভিষিক্ত নাঈম। বাইরের বলগুলো দেখেবুঝে ছেড়ে দিলেও ভুল করে বসেন তিনি। আর তাতেই সাউদির শিকার হন এই ব্যাটার। দলীয় ১০৫ রানের মাথায় ২৪ রান করে ফেরেন নাঈম।
আশা জাগানো ব্যাট করেছিলেন অধিনায়ক মুমিনুল। তার ব্যাটে বড় সংগ্রহের দিকে চেয়েছিল বাংলাদেশ। ৩৭ রান করে হতাশ করলেন তিনিও। ওয়াগনারের দ্বিতীয় শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। ক্রিজে এসে মাত্র ২ রান তুলেই বিদায় নেন ইয়াসির আলী।
পাঁচ উইকেট হারানোর পর বাংলাদেশকে আশার আলো দেখায় লিটন দাস ও নুরুল হাসান সোহানের জুটি। বাউন্ডারি কিংবা দেখেবুঝে ছেড়ে দেওয়া, সব মিলিয়ে দারুণ ব্যাট করে যাচ্ছিলো তারা। ইনিংস হার এড়ানোর স্বপ্নও উঁকি দিচ্ছিলো টাইগার ভক্তদের মাঝে। কিন্তু ১০১ রানের বিশাল এই জুটি ভেঙে কিউইদের ব্রেক থ্রু এনে দেন ড্যারি মিচেল। ৫৪ বলে ৩৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন সোহান।
সপ্তম উইকেটের জুটিতে লিটনকে সঙ্গ দিতে পারেননি মিরাজ। দলীয় ২৪৪ রানের মাথায় জেমিসনের শিকার হন তিনি। মাত্র তিন রানে ফেরেন এই ব্যাটার। তাতেই ইনিংস হারের শঙ্কা আরও ভারী হয়ে উঠছে। যদিও এক প্রান্ত আগলে রেখে রান তোলায় লড়াইকে এগিয়ে নেন লিটন। ওয়ানডে মেজাজে ব্যাট করে সেঞ্চুরিও তুলে নেন তিনি। ১০৬ বলে ১৪ বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় সেঞ্চুরি করেন তিনি। পরে ১১৪ বলে ১০২ রান করে জেমিসনের লেগ বিফোরে ফেরেন তিনি।
শেষের দিকে দাঁড়াতে পারেনি কেউই। কিউই পেসারদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পন করে বাংলাদেশের ব্যাটাররা। প্রথম ইনিংস থেকে ১১৭ রান দূরে থাকতেই গুটিয়ে যায় টাইগাররা। দুই ইনিংস মিলিয়েও নিউজিল্যান্ডের এক ইনিংসের সমান রান করতে পারেনি বাংলাদেশ।